রাজিবের সাথে পরকীয়া প্রেম ও বিয়ের জন্য চাপ দেয়ায় চাঁদপুরে নিয়ে হত্যা করা হয় গোপালগঞ্জের গৃহবধূ শীলা খানম (২৮) কে। শনিবার ৯ সেপ্টেম্বর সকালে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান, পিবিআই এর চাঁদপুর অঞ্চলের পুলিশ সুপার মো. মোস্তফা কামাল রাশেদ।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) চাঁদপুর সদর উপজেলার মৈশাদী ইউনিয়নের একটি বাগান থেকে শীলা খানমের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
এ ঘটনার ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে হত্যার সাথে জড়িত প্রধান আসামিসহ তিন জন কে গ্রেফতার করে চাঁদপুর পিবিআই।
আটককৃতরা হলো, চাঁদপুর সদর উপজেলার মৈশাদী ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড উত্তর মৈশাদী গ্রামের মজুমদার বাড়ির আজিজ মজুমদারের ছেলে রাজিব মজুমদার (২১) ও আশিকাটি ইউনিয়নের হাপানিয়া গ্রামের মৃত স্বপন খানের ছেলে কামরুল হাসান হৃদয় (২২) ও একই ইউনিয়নের হাপানিয়া গ্রামের রফিক গাজী।
পিবিআই পুলিশ সুপার মো. মোস্তফা কামাল রাশেদ জানান, আসামী রাজিব মজুমদার গোপালগঞ্জের একটি কসমেটিকস দোকানে চাকরি করতেন। একই মার্কেটে আরেকটি কসমেটিকস দোকানে শীলা খানমও চাকরি করতেন। সেই সুবাদে তাদের মধ্যে পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। আট মাস সম্পর্কের মাঝে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্কও হয়েছে। তাদের প্রেমের সম্পর্কের বিষয়টি মার্কেটের সকলের মাঝে জানাজানি হলে একপর্যায়ে তাদেরকে বের করে দেয়া হয়।
পরে শীলা খানম রাজিবকে বিয়ের জন্য চাপ প্রয়োগ করলে তারা দুজনে গোপালগঞ্জ পুলিশ লাইন্সের সামনে থেকে গাড়িতে করে ঢাকায় এসে চাঁদপুরগামী ময়ুর লঞ্চযোগে রাত ১টায় চাঁদপুর এসে পৌঁছায়। এর মধ্যে লঞ্চের কেবিনে তাদের মাঝে দৈহিক সম্পর্ক হয়।
পরে সিএনজি নিয়ে রাজিবের গ্রামের বাড়ি মৈশাদী নিজ বাড়িতে জায়গা না পেয়ে তার বন্ধু রফিককে ফোন করে এনে পুরো ঘটনাটি খুলে বলে শীলা খানমকে হত্যা করার বিষয়টি জানালে রফিক তাদের আরেক বন্ধু হৃদয়কে আনতে বলে। পরে হৃদয় এলে তারা তিনজনে মিলে আদুর খান স্কুলের পাশে একটি জঙ্গলে শীলা খানমকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে পলাশ পাটওয়ারীর বাগানের ঝোঁপেড় মধ্যে ফেলে রেখে চলে যায় যে যার বাড়িতে।
পরদিন সকালে হত্যাকারীরা তিনজন একত্রিত হয়ে রাজিব ও হৃদয় সারাদিন বাবুরহাট এলাকায় ঘুরাঘুরি করে রাতে হৃদয়ের নানার বাড়ি আশিকাটি ইউনিয়নের দাসদী পাঠান বাড়ি থেকে রাত সাড়ে ১১টায় আটক করা হয়।
সুপার মো. মোস্তফা কামাল রাশেদ আরো জানান,এ হত্যাকা-ের ৩৬ ঘন্টার মধ্যে আমরা প্রধান আসামি রাজিব মজুমদার ও তার সহযোগী বন্ধু মো. কামরুল হাসান হৃদয়কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হই। এসময় শীলা বেগম ও আসামীর মোবাইল ফোন জব্দ করেছি। প্রধান আসামি রাজিব মজুমদার ৫টি ফেসবুক আইডির মাধ্যমে বিভিন্ন নারীর সাথে পরকীয়া প্রেম করে আসছিলো।
গৃহবধূ শীলা খানম হত্যাকন্ডে তার স্বামী বাদী হয়ে চাঁদপুর সদর মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। শীলা খানমের দাম্পত্য জীবনে একটি ৪ বছর বয়সী কন্যা সন্তান রয়েছে। এবং রাজিব মজুমদারও বিবাহিত ছিলেন। উল্লেখ্য. গত ৮ সেপ্টেম্বর সকালে উত্তর মৈশাদীর পলাশ পাটওয়ারীর বাগানে স্থানীয় এক ব্যাক্তি দূর থেকে শীলা খানমের ব্যাগ দেখতে পেয়ে কাছে গিয়ে তার লাশ দেখতে পান এবং আশপাশের মানুষদের বিষয়টি জানালে চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশ ও পিবিআই পুলিশ ঘটনাস্থলে আসেন। শীলা খানম (২৮) গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার করপাড়া ইউনিয়নের করপাড়া গ্রামের মুনসুর খানের মেয়ে।