প্রেমে ঠেকাইতে পারে না সাগর মহাসাগর, শুধু থাকতে হবে প্রেম ভালোবাসা। সেই প্রেমের টানে ঘর বাঁধতে মালয়েশিয়ান তরুণী সাগর মহাসাগর পাড়ি দিয়ে এখন নববধূ হয়ে এলো ভাঙ্গায়। এমন ঘটনাটি ঘটলো ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার ঘারুয়া ইউনিয়নের শরীফাবাদ খারদিয়া গ্রামের প্রবাসী শামীম হোসেনের ঘরে। শামীম হোসেন (৩৫) ওই গ্রামের মহিউদ্দিন শেখের ছেলে। আর এই নববধূ মালোশিয়ার কামপুনজুম্বাল আপ্পানবাহাও শ্রাম্বান শহরের মৃত্যু আব্দুর রহমানের কনিষ্ঠ কন্যা সুয়াইলা বিনতে আব্দুর রহমান(৩৭)। নববধূ নিজ দেশের একটি রেস্টুরেন্টে চাকুরি করেন । এটি তার দ্বিতীয় বিয়ে বলে জানা গেছে। চার বছর আগেই প্রথম স্বামীকে ডিভোর্স দেন। নব-দম্পতি সূত্রে জানা যায়, শামীম হোসেন পাঁচ বছর ধরে মালয়েশিয়া যান। তার ভিসা ছিল কনস্ট্রাকশনের। তিন বছর পূর্বে সুয়াইলা অনলাইনে ফুলের ব্যবসা করত, সেই থেকে তার সঙ্গে পরিচয়। পরিচয় থেকে প্রেম এরপর ঘর বাঁধার স্বপ্ন।
সেই স্বপ্ন পূরণের জন্য মালয়েশিয়া থেকে সুয়াইলা পরিবারের সবাইকে ম্যানেজ করে বাংলাদেশ বিমানে গতকাল রবিবার(২৪ মার্চ) সন্ধ্যায় ঢাকা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন। রাতেই ঢাকায় একটি হোটেলে ২ লক্ষ টাকা দেনমোহরে শরীয়ত মোতাবেক বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। নববধু সেজে শশুর বাড়িতে রবিবার রাত সাড়ে ১১টায় আসেন। শ্বশুরবাড়ির লোকজন এই নববধূকে বরণ করে নেন। নববধূকে এক নজর দেখতে শত শত গ্রামবাসী ভিড় জমান শামীমের বাড়িতে। এতে নববধূ সুয়াইলা শ্বশুরবাড়ির রীতিনীতি ও আন্তরিক ভালবাসা পেয়ে সে ভীষণ খুশি। বর শামীম হোসেন তার দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পূরণে তিনিও ভীষণ খুশি। এ বিষয়ে শামীম হোসেন জানান, আমি কনস্ট্রাকশনের ভিসায় যাই, ওই দেশের আইনে মালয়েশিয়ার নাগরিককে বিবাহ করা নিষিদ্ধ থাকায় বিবাহ করতে পারি নাই। শুধু অপেক্ষার প্রহর গুনছি। তিন বছর ধরে ওর সঙ্গে আমার সম্পর্ক। আমার ভিসার মেয়াদ শেষ হলে গত ডিসেম্বরে আমি দেশে চলে আসি।
ওর সঙ্গে আমার প্রতিনিয়ত কথা হতো। সুয়াইলা অবশেষে বাংলাদেশ এসে ঘর বাঁধতে রাজি হয়। তার পরিবারের সঙ্গে অনেক সংগ্রামের মাধ্যমে সবাইকে রাজি করে বাংলাদেশের চলে আসে সুয়াইলা। রাতেই তার সঙ্গে আমার বিবাহ হয়। হয়তো এখন ধুমধাম করেই বাকি কাজটুকু সারা হবে। মাত্র রাতে আসলো দেখি কবে করি। কিছুদিন পরে হয়তো আমাকে তার স্বামী হিসেবে মালয়েশিয়ার ভিসা দিয়ে নতুন করে নিয়ে যাবেন। তবে আমরা বার্ধক্য সময়ে আমার দেশেই ফিরে আসবো এই কথাও হয়েছে। সুয়াইলারা তিন ভাই ও তিন বোন, সে সবার ছোট। এদিকে, নববধূ সুয়াইলা তার ভাষায় জানান, আমি বাংলাদেশের তথা শ্বশুরবাড়ির মানুষের ভালোবাসায় আমি মুগ্ধ। আমি আপাতত ঘর বাঁধতে এক মাসের ছুটি নিয়ে শামীমের নিকট ছুটে আসি। আমার শামীমের সঙ্গে বিবাহ হয়ে গেল এতে আমি খুব খুশি। এ ঘটনায় প্রতিবেশী এক রাজনীতিবিদ ফিরোজুর রহমান নিরু খলিফা জানান, আমরা গ্রামবাসী শামীমের দম্পতির জন্য দোয়া করি তারা যেন সুখী হয়। গ্রামের মানুষ আমরা সবাই খুশি। এদিকে ঘারুয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মনসুর আহমেদ মুন্সী বলেন, শুনেছি মালয়েশিয়ান একটি মেয়ে আমার ইউনিয়নের ছেলেকে বিবাহ করতে চলে এসেছে আমি ওদের বিষয়ে কোন সহযোগিতা লাগলে অবশ্যই করবো এবং আমরা ইউনিয়ন বাসী খুশী।