শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার মোল্যারহাট। বাজারটি শুকনো মরিচের হাট হিসেবে পরিচিত। প্রতি শনি ও মঙ্গলবার এখানে হাট বসে। হাটবার সকালে থেকে কাঁচিকাটা, বালারহাট, চাদঁপুর, সখিপুর, চেয়ারম্যান বাজার, ইব্রাহীম, ডামুড্যা, নড়িয়া, ভেদরগঞ্জসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে শুকনো মরিচ নিয়ে আসেন কৃষকরা। বিকেল পর্যন্ত চলে মরিচ বেচাকেনা। প্রতি হাটবারে ৪-৫ কোটি টাকার মরিচ বিক্রি হয়।
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার চরকুমারিয়ায় হাটটির অবস্থান। শত শত কৃষক শুকনো মরিচ নিয়ে আসছেন। সকাল থেকে ব্যস্ত সময় পার করছেন আড়তদার ও তাদের কর্মচারীরা। এ হাটে ছোট-বড় ৩৫-৪০টি শুকনা মরিচের আড়ৎ রয়েছে। সেখানে ২০০-৩০০ শ্রমিক কাজ করে। একটি আড়তে গড়ে ১০-১৫ লাখ টাকা বেচাকেনা হয়।
বাজারে একাধিক ক্রেতা জানান, আগে প্রতিকেজি শুকনা মরিচ বিক্রি হতো ১৬০ টাকা। সেটি এখন ৩০০-৩৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পিছিয়ে নেই ‘ফটকা’ মরিচের দামও। প্রতি কেজি ‘ফটকা’ মরিচ বিক্রি হচ্ছে ২৫০-২৬০ টাকা কেজি দরে।
জেলা কৃষি বিভাগ সূত্র জানায়, এ বছর জেলায় মরিচ চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ছয় হাজার ৫৮০ হেক্টর। কিন্তু আবাদ হয়েছে ছয় হাজার ৪৭৪ হেক্টর জমিতে। এবার পাঁচ হাজার ৬৭০ মেট্রিকটন মরিচ ফলন হতে পারে। ভেদরগঞ্জ উপজেলায় মরিচ চাষে লক্ষ্যমাত্রা দুই হাজার ১৬৫ হেক্টর। এখানে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে আবাদ হয়েছে দুই হাজার ৫০৩ হেক্টর। গোসাইর হাটে লক্ষ্যমাত্রা ছিল এক হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে কিন্তু আবাদ হয়েছে এক হাজার ৩৪৫ হেক্টর জমিতে।
বাজারে খোকন নামের এক শ্রমিক জানান, প্রতিবছর এখানে মরিচ, কালোজিরা, দনিয়ার আড়তে কাজ করি। প্রতিদিন ৭০০-৮০০ টাকা মজুরি পাই। সেটি দিয়ে পরিবার নিয়ে ভালো আছি।
বাজারে মরিচ বিক্রি করতে আসা কৃষক মফিজল সরদার বলেন, ফলন ভালো হওয়ায় ৩০০ থেকে ৩২০ টাকায় মরিচ বিক্রি করছি। বাজারে অনেক ভালো দাম পেয়ে আমরা খুশি।
রাকিব হোসেন নামের আরেক কৃষক জানান, বাজারে মরিচের দাম ভাল হওয়ায় আমরা খুশি। পরিবার নিয়ে ভালো আছি। গত বছর ছিল ১৬০ টাকা কেজি এবার সেটি ৩০০-৩২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
মেসার্স জাকির অ্যান্ড ব্রাদার্সের মালিক জাকির হোসেন বলেন, এ হাটে ৩০-৪০ টি আড়ৎ রয়েছে। আমরা প্রতিদিন ১০-১৫ লাখ টাকার মরিচ বেচাকেনা করি। ঢাকা, চট্টগ্রাম, কুমিল্লাসহ বিভিন্ন জেলার পাইকার এখানে মরিচ কিনতে আসেন।
ঢাকার শ্যামবাজার থেকে মরিচ কিনতে আসা পাইকার আবুল হেসেন বলেন, হাটে মরিচ কিনতে এসেছি। আমরা অনেক জায়গা থেকে মরিচ কিনি। তবে এখানকার মরিচ বড় ও ভালো মানের। দাম ভালো তাই এখানে মরিচ কিনতে এসেছি।