সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের প্রবাসীদের জন্য বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতায় কারিগরি শিক্ষা চালুর আহব্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী। তিনি গত ৪ আগস্ট বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজিত ‘বঙ্গবন্ধুর শিক্ষা ভাবনা ও পাঠ সূচনা অনুষ্ঠানে’ এ আহব্বান জানান।
রাষ্ট্রদূত বলেন, প্রবাসীদের জন্য বিভিন্ন বিষয়ে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সসহ অন্যান্য কারিগরি শিক্ষা চালু করার প্রস্তাব করছি। কারিগরী শিক্ষা গ্রহণ করলে প্রবাসে ভালো বেতনের চাকরি পাওয়া যায় এবং দেশে রেমিট্যান্স প্রেরণ ও বৃদ্ধি পাবে। তিনি সৌদি আরবের ভিশন-২০৩০ বাস্তবায়নে দক্ষ অভিবাসী শ্রমিকের চাহিদা পূরণে এখন থেকেই প্রস্তুতি নেয়ার কথা বলেন। এছাড়া বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরব আসার আগে সৌদি প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান তাকামল থেকে দক্ষতা যাচাই এবং প্রশিক্ষণ নিয়ে আসলে সহজেই চাকরি পাওয়া সম্ভব হবে বলে উল্লেখ করেন।
সন্ধ্যায় অনলাইনে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন কাতার, কুয়েত ও সৌদি আরবের শিক্ষার্থীরা, বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা ও অধ্যাপক, কাতারে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. নজরুল ইসলাম ও কুয়েতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল মো. আশিকুজ্জামান ও সভাপতি হিসেবে বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সৈয়দ হুমায়ূন আখতার।
রাষ্ট্রদূত অনুষ্ঠানের শুরুতে গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও ১৫ আগস্ট কালরাতে নিহত বঙ্গমাতা ফজিলাতুন নেছা মুজিব, মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন শেখ কামাল, শেখ জামাল ও শেখ রাসেলসহ জাতির পিতার পরিবারের শহীদ সব সদস্যদের।
রাষ্ট্রদূত বলেন, জাতির পিতা তাঁর জীবন উৎসর্গ করেছিলেন আমাদের একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশ প্রদানের জন্য। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর জাতির পিতা মাত্র সাড়ে তিন বছর দেশ পরিচালনার সুযোগ পেয়েছিলেন। এ স্বল্প সময়ে তিনি একটি যুদ্ধবিদ্ধস্ত দেশের পুনর্গঠনসহ সকল বিষয়ে উন্নয়নের সূচনা করেছিলেন। স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের উপযোগী সমাজগঠনমূলক একটি সার্বিক শিক্ষাব্যবস্থার রুপরেখা প্রণয়নের উদ্দেশ্যে ১৯৭২ সালে ডক্টর কুদরত-ই-খুদা শিক্ষা কমিশন গঠন করেছিলেন। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭৩ সালে বঙ্গবন্ধু ৩৭ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয়কে জাতীয়করণ, ১১ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন, ৪৪ হাজার শিক্ষক নিয়োগ ও চাকরি সরকারিকরণ, ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে বই এবং গরিব ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের পোষাক প্রদানের ব্যবস্থা করেছিলেন। জাতির পিতা একটি সোনার বাংলা গঠনে সুদূরপ্রসারী শিক্ষা ভাবনা করেছিলেন। দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে সময়োপযোগী করে গড়ে তুলেছিলেন।
তাঁরই ধারাবাহিকতায় জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উচ্চ আয়ের আধুনিক বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে কাজ করে চলেছেন। প্রধানমন্ত্রীর ভিশন বাস্তবায়নে স্মার্ট নাগরিক গড়ে তোলার লক্ষ্যে শিক্ষার কোন বিকল্প নেই।
বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় স্মার্ট নাগরিক গড়ে তোলার লক্ষ্যে প্রবাসীদের জন্য আধুনিক কারিগরী শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করার ওপর জোর দেন রাষ্ট্রদূত।
রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতায় সৌদি আরবে বর্তমানে এসএসসি, এইচএসসি ও ডিগ্রি কোর্সে দুই শতাধিক শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছেন। তিনি আশা প্রকাশ করেন সৌদি আরবের সব শিক্ষার্থী বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতায় তাঁদের পড়াশোনা কার্যক্রম ভালোভাবে সম্পন্ন করবেন ও সেই সাথে ব্যক্তিগত উন্নতির পাশাপাশি পরিবার ও সমাজের উন্নতির জন্য ও ভূমিকা রাখবেন।