1. kazi.rana10@gmail.com : Sohel Rana : Sohel Rana
  2. jmitsolution24@gmail.com : support :
মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০১:০৬ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
ফরিদপুরে প্রতিমা ভাঙচুরের অভিযোগে আটক ১ সদরপুরে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী ও জাকের পার্টির প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপিত ‘পদ্মা সেতুতে নিয়ে টুস করে ফেলে দেওয়ার’ বক্তব্যে শেখ হাসিনার নামে মামলা মুকসুদপুরে দিনভর ঝিরিঝিরি বৃষ্টিতে জনজীবন বিপর্যস্ত দুই দিন ধরে বিদ্যুৎহীন মুকসুদপুর, দুর্ভোগে জনজীবন গোপালগঞ্জে হামলায় স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় নেতা নিহত, আহত ৫০ বিশ্ব শিক্ষক দিবস উপলক্ষে প্রস্তুতিমূলক সভা জনগণের সেবা দেয়ার জন্যই সরকার আমাকে পাঠিয়েছে : জেলা প্রশাসক ফরিদপুর ফরিদপুরে সাড়ে তিন বছর পর হত্যা মামলা দায়ের, চেয়ারম্যানকে আসামী করার প্রতিবাদ রাজবাড়ীর নবনিযুক্ত ডিসি মনোয়ারা বেগমের নিয়োগ বাতিল

আলফাডাঙ্গায় পাউবোর জায়গা নিজের জমি দাবি করে দোতলা বিল্ডিং নির্মাণ

বাঙ্গালী খবর ডেস্ক 
  • Update Time : সোমবার, ১৭ জুলাই, ২০২৩
  • ২৫৫ Time View
পাউবির সংরক্ষিত জায়গায় দোতলা ভবন নির্মাণ ও প্রতিবেশীর লীজকৃত জমিতে জোড়পূর্বকভাবে টিনের ঘর তুলেছে জাকির হোসেন শেখ।

ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (বাপাউবো) এর অধিগ্রহণকৃত জায়গা লিজ নিয়ে প্রভাব খাটিয়ে চারতলা ফাউন্ডেশন করে নির্মাণ করা হয়েছে দোতলা বাড়ি। বর্তমানে ঐ জায়গার লিজ নবায়ন না হওয়ায় অবৈধভাবে দখলে রয়েছে প্রভাবশালী এক ব্যক্তি। এছাড়া পাশের আরেকটি পুকুর ভরাট করছেন। তিনি কাউকে তোয়াক্কা না করে নিজের ইচ্ছেমতো অপর একজন নিরীহ ব্যক্তির লীজকৃত জমি দখলে নিয়ে উচ্ছেদের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানা যায়।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়- উপজেলার গোপালপুর বাজারস্থ বেড়িবাঁধ সংলগ্ন জায়গা লিজ নিয়ে নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করেই চারতলা ভবনের শেড নির্মাণ করেছেন ঐ এলাকার প্রভাবশালী মোঃ জাকির হোসেন শেখ। ইতোমধ্যে দোতলা ভবন তুলেছেন। এরমধ্যে দোতলা রাস্তা সংলগ্ন হওয়ায় ৫/৬টি দোকান ঘর নির্মাণ করে ভাড়া দিয়েছেন এবং নিচতলায় পরিবার নিয়ে বসবাস করছেন। সামনের অংশে সড়কের পাশে সেমিপাকা টিনের বড় বড় চারপাঁচটি দোকান ঘর বানিয়ে ভাড়া দেয়া হয়েছে। দেখলে মনে হবে সেগুলো অস্থায়ী কোন স্থাপনা। তবে পাশের সড়কের ঢাল দিয়ে বাঁ দিকে তাকালে চোখ ছানাবড়া হয়ে যায়। প্রায় ২০ মিটার লম্বা কংক্রিটের তৈরি ছাদের নিচে রীতিমতো একটি বাড়ি তৈরি করে ফেলা হয়েছে পাউবোর অগোচরেই। একটু একটু করে দখল নিতে নিতে পাউবোর ওই বেড়ীবাঁধের জমির মালিকানাই এখন দাবি করে বসেছেন সৌদি আরব ফেরত প্রবাসী মো. জাকির হোসেন (৬২) নামে এই ব্যক্তি। সেই সূত্রে তৈরি করেছেন এই ভবন।
সাংবাদিকদের কাছে পাউবোর বেড়ীবাঁধের উপরে তৈরি বিল্ডিং তার নয় বলে প্রথমে এড়িয়ে গেলেও পরে তিনি বলেন, পাউবোর ওই সংরক্ষিত জমি মালিকানা সূত্রে তার ক্রয় করা সম্পত্তি।

 

তবে পাউবো সূত্র জানিয়েছে, জাকির হোসেন কৃষিকাজের জন্য পাউবো থেকে ১১ শতাংশ জমি লীজ নেন কয়েকবছর আগে। তবে লীজের শর্ত লঙ্ঘন করায় তার লীজ নবায়ন করা হয়নি। তিনি নতুন করে আরো জমি লীজ নেয়ার আবেদন করেছেন।

জানা যায়, জাকির হোসেন কৃষিকাজ করতেন। ২১ বছর আগে সৌদি আরব যান। এখন ফিরে এসে দোতলা বিল্ডিংয়ের পাশে রাস্তার ওপারে বেড়ীবাঁধের আরো জমি তিনি দখল নিতে শুরু করেছেন। মাটি ফেলে জলাশয় ভরাট করে লম্বালম্বি টিনের ছাপড়া বানিয়ে দোকান তুলেছেন এরইমধ্যে। তিনি উচ্চ মহলের নাম ব্যবহার করে প্রভাব খাটিয়ে তার জমি সংলগ্ন প্রতিবেশী কাজী মঈনুল আলমের লিজকৃত সম্পত্তি দখলে নিয়েছেন এবং পুরো জমি লিজ নেয়ার জন্য বিভিন্নভাবে তদবির শুরু করেছেন। বিষয়টি নিয়ে শালিস-মিমাংসা এবং পানি উন্নয়ন বোর্ড বরাবর আবেদন করেও কোনো সুরাহা পাচ্ছেন না কাজী মঈনুল আলম।

কাজী মঈনুল আলম বলেন, ‘আমি ২০০৫ সালে ওয়াবদা থেকে ১৬.০৫ শতাংশ জমি লীজ নিয়ে বসবাস করে আসছি। গত তিন বছর যাবৎ আমার জায়গা নিয়ে ঝামেলা শুরু করেছে জাকির হোসেন গং। কদিন আগে এক ভোরবেলা জাকির হোসেন সেখানে ঘর তুলেছেন। অভিযোগ পেয়ে অবদার লোকেরা এসেছিলেন সরেজমিনে দেখতে। তার ছেলে জসিমউদ্দিন জিকো এমন একটা হট্টগোল বাঁধাল, তা দেখে তারা চলে গেছে। তারপর আমি অনেককে জানিয়েছি, কেউ কোনো পদক্ষেপ নেয় না। যে শুনে তার ভাই সচিবলায়ে এসআই হিসেবে নিযুক্ত রয়েছে, সে আর আমার বিষয়টি নিয়ে কথা বলে না।’

পাশের ওয়ার্ডের মেম্বার শাহাদাত হোসেন বলেন, অনেক আগে ৬২ সালে এই জমি ব্যক্তিমালিকানায় ছিলো। পরে অবদা কিনে নিছে। এখন অবদার। তবে জাকির হোসেন কিভাবে কিনেছে তা জানেন না।
নথিপত্রে দেখা যায়, ২০০৯ ও ২০১৩ সালে দুটি দলিলে জাকির হোসেন পাঁচজন ব্যক্তির নিকট থেকে ২ একর ৫৩ শতাংশ জমির মধ্যে পৌনে ৮ শতাংশ করে জমি রেজিস্ট্রি করেন। দলিলে দাতাগণ হলফনামায় বলেন, এই সম্পত্তি সরকারি খাস/অর্পিত বা পরিত্যক্ত সম্পত্তি নয় বা অন্য কোনভাবে সরকারের উপর বর্তায় নাই। তিনি ২০১৩ সালে গোপালপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিস থেকে ৮টি দাগে ১ একর ৫ শতাংশ ও ২ এক ৯৬ শতাংশ জমি বাবদ ১৪২০ বঙ্গাব্দের ২ টাকা খাজনা পরিশোধ রসিদ সংগ্রহ করেন। ২০২২ সালে তিনি ওই মৌজার ৮৬২ ও ৮৬৩ নং দুটি দাগের ৮ শতাংশ জমি লীজের আবেদন করেন পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলীর কাছে।
পাউবোর নথিতে দেখা যায়, ২৭৮/৬১-৬২ এল.এ. কেসের মাধ্যমে ওই দুটি দাগের ৩৬ শতাংশ জমি সহ ১১ একর ১১ শতাংশ জমি অধিগ্রহণ করা হয়। বেরিবাঁধ নির্মাণের পর ওই দুটি দাগের ২২ শতাংশ জমি প্রকল্প রক্ষণাবেক্ষণের জন্য সংরক্ষণ করা হয়। ২০০৫ সালে কৃষিকাজের জন্য সাময়িক বা বাৎসরিক ভিত্তিতে লীজ দেয়ার সুপারিশের পর মঈনুল আলম পাউবোর লীজের শর্ত মেনে ঐ পুকুরে মৎস্য চাষ শুরু করেন। ওই লীজের অন্যতম শর্ত ছিল, লীজকৃত জমি শুধুমাত্র কৃষিকাজ-এ জমি ব্যবহার করতে পারবেন। কোনপ্রকার অবকাঠামো বা স্থাপনা নির্মাণ করা যাবেনা।

এব্যাপারে জাকির হোসেন বলেন, আমার মালিকের নামে রেকর্ড আছে। এসএ রেকর্ড মতে আমি কিনিছি এবং বাড়ি করে ভোগদখলে আছি। বিএস রেকর্ড হয় নাই। নকশা করে গেছে। এই জমি পাউবোর অধিগ্রহণ করা এই কিনা? জবাবে তিনি বলেন, জাকির হোসেন বলেন “আমি জানি না তবে কিছুটা তাদের আছে, সেটাও ঠিক। আমার ভাই মিনিস্টারিতে আছে। জমিটা সেই ঠিক করছে। সরকারিভাবে যেইটা করতে হয়।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে গোপালপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান খান সাইফুল ইসলাম বলেন- ‘বিষয়টি নিয়ে কয়েকবার শালিস হয়েছে, শালিসে উভয়পক্ষকে সমঝোতাও করে দিয়েছিলাম। কিছুদিন আগে পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে কর্মকর্তারা আসছিলেন। আমি তাদের লিজভুক্ত যে যতটুকু পাবে তার ততটুকু বুঝিয়ে দেয়ার জন্য বলেছি।’

এ বিষয়ে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের ফরিদপুর পওর বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী পার্থ প্রতিম সাহা বলেন- ‘গোপালপুর বাজারে আমাদের লিজকৃত জায়গায় যে অবৈধ দখলদার স্থাপনা নির্মাণ করেছেন এ বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি এবং বিষয়টি সরেজমিনে দেখার জন্য একটি দাপ্তরিক কমিটি গঠন করা হয়েছে। সরেজমিনে তদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার যদি অবৈধভাবে দখল করে থাকে তাহলে আমরা প্রশাসনের সহযোগিতায় উচ্ছেদ করার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।’

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2023
Developed By : JM IT SOLUTION