নিজস্ব প্রতিনিধি ঃ মানবতার ফেরিওয়ালা হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছেন মুকসুদপুরের মাহাবুব বাবু নামের এক উচ্চ শিক্ষিত যুবক। তিনি মুকসুদপুরের সন্তান বিভিন্ন অঞ্চলের অসহায়, হতদরিদ্র আর রক্ত গ্রহীতাদের নিকট রক্ত প্রাপ্তির তিনি যেন এক নির্ভরযোগ্য আশ্রয়স্থল। মজার ব্যাপার হলো চাকরির জন্য তিনি কোথাও কোন আবেদন কিংবা চেষ্টা করেননি। মানবতার ফেরিওয়ালা খ্যাত মাহাবুব বাবু নিজ উপজেলা মুকসুদপুর এবং পার্শ্ববর্তী এলাকার অসহায়, দরিদ্রদের জন্য মানবতার হাত প্রসারিত করেন। রোগীদের জন্য রক্তের ব্যবস্থা করা, দুস্থ রোগীদের ঔষধপত্রসহ চিকিৎসার ব্যবস্থা করা, এমনকি নগদ অর্থসাহায্য পর্যন্ত করে থাকেন তিনি। দীর্ঘ দিন ধরে রোগীদের জন্য ৫ হাজার ব্যাগ রক্তের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন বলে তিনি জানান। এ যাবত তিনি বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সরকারি খাসজমি এবং রাস্তার দুপাশে প্রায় ১৫-২০ হাজার ফলদ ও বনজ বৃক্ষের চারা রোপণ করেছেন। মানবতার সেবায় নিয়োজিত দীর্ঘ এ সময়ে তিনি প্রতিবন্ধীদের হুইল চেয়ার, দরিদ্র শিক্ষার্থীদের অর্থ সাহায্য, অসহায় অবহেলিত জনগোষ্ঠীর মৌলিক চাহিদার ব্যবস্থা, পাখিদের নীড়ের ব্যবস্থা, অসুস্থ গোড়ার সেবা দিয়ে সুস্থ করে তুলেছেন, শীতবস্ত্র বিতরণ, মানসিক প্রতিবন্ধীদের চিকিৎসা সেবার ব্যবস্থা করা ও খোঁজখবর নেয়ার ক্ষেত্রে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিয়েছেন মাহাবুব বাবু। মাদক, সন্ত্রাস, জঙ্গীবাদ, নারী নির্যাতন বন্ধে করণীয় সম্পর্কে সভা সেমিনারেরও আয়োজন করেন।
অসহায় মানুষের পাশে যে কোন বিপদ আপদে মানুষের সেবা দিয়ে যাচ্ছে মাহাবুব বাবু । করোনা কালিন থেকে শুরু করে বিনামূল্যে অক্সিজেন সেবা মাস্ক বিতরণ করে যাচ্ছে, এ বছরে প্রায় বিশ হাজার বিনামূল্যে বৃক্ষ রোপণ করেছে এই মানবেতার ফেরিওয়লা । দিয়েছে অসহায় মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের পৌঁছে দিয়েছে বই । দিয়ে যাচ্ছে বিনামূল্যে স্কুল,কলেজ,প্রাথমিক বিদ্যালয়ে রক্তের গ্রæফ নির্ণয় করে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত।
বিশেষ করে করোনার সময় বিনামূল্যে অসহায় মানুষের জন্য পুরো রমজান মাস জুুড়ে ফ্রী বাজারের দোকান ব্যবস্তা করেছে, ও রমজান মাসে ইফতার বিতরন করা ঈদে অসহায় পরিবারের বাড়ি বাড়ি মাংস, চাল, তেল,দুধ,সেমাই পৌঁছে দিয়েছে, ও হিন্দুদের বড় পুঁজায় কাপড় বিতরন করাসহ বিভিন্ন জায়গায় অসুস্থ হয়ে পরে থাকা প্রাণী গুলোও কে সুস্থ করে বাচিয়ে তুলেছেন, রাস্তায় পড়ে থাকা অসুস্থ মানুষের খোজ পেলে চিকিৎসা দিয়ে বৃদ্ধশ্রমে রাখার সাহায্য করছে এতিমখানা মাদ্রাসায় মাঝে মাঝে একবেলা ভালো খাবারের ব্যবস্থা করা, বিশেষ দিন যেমন ১৫ আগস্ট শোক দিবস ও ২১ শে ফেব্রæয়ারী ভাষা দিবসে ছোট সোনামণিদের নিয়ে আলোচনা সভা, কবিতা আবৃতি ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা বৃক্ষ রোপণ, খেলাধুলা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেছে এই যুবক। মানুষ মানুষের জন্য এ কথা মাথায় রেখে মানবতার সেবায় এগিয়ে এসেছে তিনি।
রক্ত দেওয়া শরীরের জন্য কোন ক্ষতিকর দিক নয় রক্তদান করার সঙ্গে সঙ্গে শরীরের মধ্যে অবস্থিত ব্রোন ম্যারো প্রতিদিন ২০০ বিলিয়ন নতুন রক্ত কোষ তৈরি করে। এছাড়া আজকে অন্যের বিপদে রক্তদান করতে এগিয়ে আসলে কালকে নিজের বিপদেও রক্ত পাওয়া যাবে। এ বিষয়গুলো জনগণের মধ্যে প্রচার করে সবাইকে রক্তদানে উৎসাহিত করা এবং সংগ্রহে সহযোগিতা করে হাজারো মুমূর্ষু রোগীর প্রাণ বাঁচানো এবং সুবিধা বঞ্চিত মানুষের পাশে দাঁড়ানো অন্যতম কাজ। মাহাবুব বাবুর অক্লান্ত পরিশ্রমে দিনদিন ব্যাপক সাড়া ফেলেছে এবং সুনাম অর্জন করেছে।
বৃহস্পতিবার রাতে স্থানীয় দৈনিক বাঙ্গালী খবরের কার্যালয়ে মাহাবুব বাবু বলেন, এ যাবত আমি ত্রিশ হাজারেরও অধিক লোককে অর্থ সাহায্য করেছি। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ইসলামিক আদর্শ, মানবতার প্রতি দায়বদ্ধতা আর ভালো কাজের প্রতি অনুপ্রাণিত হয়ে এ সেবামূলক কার্যক্রমে নিজেকে নিয়োজিত রেখেছি। এ প্রসঙ্গে স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মী রাসেল কাজী বলেন, মানবিক কাজের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকে মাহাবুব বাবু এ সমাজসেবামূলক কাজ নি:সন্দেহে প্রশংসার দাবিদার। তার এ কাজ অনুপ্রেরণা জোগাবে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে।
এ বিষয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চাইলে, মাহাবুব বাবু বলেন, মুমূর্ষু রোগীদের রক্তের প্রয়োজনে রক্ত সংগ্রহ ছাড়াও বৈশ্বিক যে দুর্যোগগুলো হয় এদেশে সেখানেও ক্ষতিগ্রস্ত, অসহায়, নিম্নবিত্ত মানুষদের পাশে আমি দাড়াই। তাছাড়া আমার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে বলতে গেলে দলমত নির্বিশেষে আগামীদিনে এই উপজেলারসহ প্রতিটি মহামারি থেকে শুরু করে দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতিতে মানুষের পাশে থাকা আপাতত আমার লক্ষ আর মানুষ যেনো কোন চাওয়া থেকে আমার কাছে থেকে বঞ্চিত না হয় সেটাই আমাদের প্রত্যাশা।