1. kazi.rana10@gmail.com : Sohel Rana : Sohel Rana
  2. jmitsolution24@gmail.com : support :
বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:৩২ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
মুকসুদপুরে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করাকে কেন্দ্র করে দুগ্রুপের সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ৫ নগরকান্দায় সাংবাদিকদের সাথে নবাগত ওসির মতবিনিময় স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা খুন” গোপালগঞ্জে শেখ সেলিম-কানতারা খানসহ ১১৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা সালথায় কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে পেঁয়াজ বীজ ও সার বিতরণ সালথা উপজেলা পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক বাবু অনন্ত বিশ্বাস ফরিদপুরে কোটি টাকা নিয়ে লাপাত্তা ব্যাংকের এজেন্ট মালিক ফরিদপুরে তরুণীকে উত্ত্যক্ত, প্রতিবাদ করায় দুই যুবককে গুলি ফরিদপুরে বাসের হেলপার সাদ্দামকে হত্যার দায়ে পাঁচজনের যাবজ্জীবন বিগত তিন জাতীয় নির্বাচনের সিইসিদের বিরুদ্ধে মামলা আওয়ামী লীগের মতো করলে একই দশা আমাদেরও হবে: মির্জা ফখরুল

মুকসুদপুরে পাটের চেয়ে পাটকাঠির কদরই বেশি

সোহেল রানা
  • Update Time : রবিবার, ২০ আগস্ট, ২০২৩
  • ৪৮৬ Time View
উপজেলার সর্বত্রই নদ-নদী আর খাল-বিলের পাড়ে সুন্দর করে আঁটি বেঁধে সাজিয়ে সাজিয়ে পাটকাঠি শুকানোর দৃশ্য চোখে পড়ে। প্রাকৃতিক দুর্যোগে চলতি মৌসুমে পাটের যে ক্ষতি হয়েছে তা পাটকাঠি দিয়ে পোষাতে মরিয়া হয়ে উঠেছে এখানকার কৃষকরা

 

পাটকাঠিতে কৃষকের বাড়তি আয়। মুকসুদপুর উপজেলাজুড়ে প্রচুর পাটকাঠি বা পাটখড়ি উৎপাদন হলেও আকাশছোঁয়া মূল্যে তা বিক্রি হচ্ছে। তাই মুকসুদপুর উপজেলায় পাটের চেয়ে বর্তমান পাটকাঠির কদরই বেড়েছে বেশি। বাণিজ্যিকভাবে পাটকাঠির ব্যবহার বাড়ায় আর দাম ভালো হওয়ায় পাটের পাশাপাশি পাটকাঠির যতœও নিচ্ছেন কৃষকরা।
এক সময় পাটকাঠি ফেলে দেয়া হতো। কখনো রান্নার জ্বালানি, ঘরের বেড়া তৈরিতে ব্যবহার করা হতো। কিন্তু বর্তমানে বিশ্ববাজারে পাটকাঠির চাহিদা বেড়েছে। তাই এ অঞ্চলের কৃষকরা সোনালি আঁশের রুপালি কাঠিতে আশার আলো দেখছেন।
উপজেলার চরাঞ্চল ও নদী তীরবর্তী এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, সারি-সারি করে পাটকাঠির আঁটি রোদে শুকাতে দিয়েছেন কৃষকরা। ভালোমতো শুকিয়ে গেলে কৃষকদের বাড়ি থেকেই কিনে নিয়ে যাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। তারা পাটকাঠি কৃষকদের কাছ থেকে মোটামুটি দামে কিনে ভ্যানে করে বিভিন্ন স্থানে নিয়ে গিয়ে তা বেশি দামে বিক্রি করছেন।
এতে করে বাড়তি আয় করছেন অনেকেই। বাড়িঘরে, সবজি ক্ষেতের বেড়া, মাচা, পান বরজ, বিভিন্ন হস্তশিল্প পণ্য তৈরির কাজে পাটকাঠির আলাদা ব্যবহার লক্ষ করা যায় আগে থেকেই। কিন্তু বর্তমানে ব্যাপকহারে পার্টিকেল বোর্ড তৈরিতে ব্যবহার হচ্ছে এই পাটকাঠি এবং চারকলগুলোতে ব্যাপকহারে ব্যবহার হচ্ছে, ফলে আরেক ধাপ পাটকাঠির কদর বা মূল্য বেড়ে গেছে।
এক সময় জ্বালানির বিকল্প হিসেবে পাটকাঠি (পাটখড়ি) ব্যবহার হতো গ্রামাঞ্চলে। এখন বহুমুখী ব্যবহারে পাটকাঠি বা পাটখড়ির চাহিদা তিন গুণ বেড়েছে। বর্তমানে এক বিঘা জমিতে যে দামে পাট বিক্রি হয় তার দ্বিগুণ দামে পাটখড়ি বিক্রি হচ্ছে মুকসুদপুরে।
কৃষকরা জানিয়েছেন, বৃষ্টি আর বর্ষার পানির অভাবে এবার পাট জাগ দিতে হিমশিম খায় চাষিরা। পাটের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এমনকি পানির অভাবে অনেক স্থানে ক্ষেতেই পাট শুকিয়ে মরে যায়। এমন পরিস্থিতে কৃষকরা মাটি খুঁড়ে পাট জাগ দিতে বাধ্য হয়। এতে নষ্ট হয় পাটের কালার।
ফলে পাটের দামও তুলনামূলক এই অঞ্চলে কম বলে জানিয়েছেন কৃষকরা। তবে পাটের পাশাপাশি পাটকাঠির কালার কিছুটা নষ্ট হলেও দামে এর তেমন কোনো প্রভাব পড়েনি। বিভিন্ন এলাকায় দেখা গেছে, বেশির ভাগ কাঁচা রাস্তাগুলো দখল করে পাটখড়ি শুকানো হচ্ছে।
বাণিজ্যিকভাবে পাটকাঠির ব্যবহার বাড়ায় আর দাম ভালো হওয়ায় পাটের পাশাপাশি পাটকাঠির যতœও নিচ্ছেন কৃষকরা। উপজেলার সর্বত্রই নদ-নদী আর খাল-বিলের পাড়ে সুন্দর করে আঁটি বেঁধে সাজিয়ে সাজিয়ে পাটকাঠি শুকানোর দৃশ্য চোখে পড়ে। প্রাকৃতিক দুর্যোগে চলতি মৌসুমে পাটের যে ক্ষতি হয়েছে তা পাটকাঠি দিয়ে পোষাতে মরিয়া হয়ে উঠেছে এখানকার কৃষকরা। দিন-রাত পাটকাঠির ওপর শ্রম দিচ্ছেন তারা।
পাটচাষি আবদুল করিম জানান, পাটকাঠি শুকানো হয় রোদে। এতকাল এ কাঠি ব্যবহার হতো কুড়েঘরের বেড়া দিতে। গ্রামীণ জীবনে আঙিনায় স্থাপিত মাটির চুলায় রান্নায় জ্বালানি খড়ির সঙ্গে এ কাঠিও থাকত। পাটকাঠি পুড়ে ছাই হওয়ার পর তা থালাবাসন মাজা, কখনো দাঁতের মাজনেও ব্যবহার হতো। পাটকাঠির এ ছাই এখন বহু মূল্যবান।
উপজেলার
গোবিন্দপুর ইউনিয়নের আদমপুর গ্রামের পাটচাষি বলেন, এবার পাটের যে দাম আমরা পাচ্ছি তাতে পাট আবাদ করে আমাদের লোকসান গুনতে হচ্ছে। যে কারণে পাটের লোকসান কিছুটা পুষিয়ে নিতে বেশি বেশি করে পাটকাঠির যতœ নিচ্ছি।
গোপালপুর গ্রামের কৃষক মুক্তার হোসেন বলেন, এলাকার একটি পুকুরে পাট জাগ দিয়েছিলাম। অল্প পানিতে জাগ দেয়ায় পাটের রং ভালো হয়নি। তাই পাটের দাম কম পেরেছি। এখন পাটকাঠি শুকানোর কাজ করছি। কিছু পাটকাঠি নিজের প্রয়োজনের জন্য বাড়িতে স্তূপ করে রেখেছি। বাকিগুলো বিক্রি করেছি ২০০ আঁটি পাটকাঠি ১ হাজার ৬০০ টাকায়।
উপজেলার বহুগ্রাম এলাকার অষিত ও উজানির আরো কয়েকজন চাষিরা জানান, শুধু পাট বিক্রি করেই নয় এবার পাটের কাঠিও আমাদের আশা জাগিয়েছে। এখন পাটকাঠি বিক্রি করে ভালো দাম পাচ্ছি। পাটকাঠি হলো কৃষকদের জন্য বাড়তি লাভ। ১০০ আঁটি পাটকাঠি ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি করতে পারছি।
মুকসুদপুরের কৃষি কর্মকর্তা বলেন, মুকসুদপুরে বেশি পাট চাষ হওয়ায় উপজেলাজুড়ে পাটের পাশাপাশি বেড়েছে পাটকাঠিও। পাট ও পাটকাঠির ভালো দাম পাওয়ায় প্রতি বছরই মুকসুদপুরে পাটের আবাদ বাড়ছে। এ বছর এ ফসলের বাম্পার ফলন পেয়েছে কৃষকরা। বৃষ্টি না থাকায় পানির অভাবে পাট জাগ দেয়া নিয়ে তাদের কিছুটা ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। পাটের কালার এ বছর তেমন ভালো না হওয়ায় দাম কম পাচ্ছে কৃষকরা। পাটকাঠি বেশি দামে বিক্রি করতে পেরে কৃষকরা বড় ধরনের ক্ষতি পুষিয়ে নিচ্ছে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2023
Developed By : JM IT SOLUTION