ফরিদপুরে স্কুলছাত্র সাব্বির বিশ্বাসকে (১৪) হত্যার ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত করে দুইজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আজ বুধবার (২৯ মে) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ওই হত্যা মামলার রায় দেন ফরিদপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক শিহাবুল ইসলাম। যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রাপ্তরা হলেন— ফরিদপুর সদরের লোকমান খার ডাঙ্গী এলাকার বাসিন্দা মো. আছমত শেখ (১৯) ও মো. সাগর মোল্লাকে (২২)। তাদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।
আদালত পেনাল কোডের ৩৯৪ ধারায় দস্যুতা করে অটোরিকশা ছিনিয়ে নেয়ার দায়ে ওই দুই আসামিকে পাঁচ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড ও নগদ পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করেন। জরিমানা অনাদায়ে তাদের আরও তিন মাস করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে। তবে আসামিদের দুটি সাজা একসঙ্গে ভোগ করতে হবে। রায় প্রদানের সময় ওই দুই আসামি আদালতে হাজির ছিলেন। রায়ের পর পুলিশ প্রহরায় তাদের জেলা কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। আদালত সূত্রে জানা যায়, নিহত সাব্বির বিশ্বাস ফরিদপুর সদরের চর মাধবদিয়া ইউনিয়নের আছরউদ্দিন মুন্সিডাঙ্গী গ্রামের আলমগীর বিশ্বাসের ছেলে।
আলমগীর বিশ্বাস ঘোড়ার গাড়ি ও অটোরিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। তার চার ছেলের মধ্যে মেঝ ছেলে সাব্বির এলাকার পদ্মারপাড় উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র ছিল। পড়াশোনার পাশাপাশি সে বাবার অটোরিকশা চালিয়ে পড়াশোনাসহ নিজের হাত খরচ চালাত। গত ২০২২ সালের ১ এপ্রিল সকাল ১০টার দিকে সাব্বির অটোরিকশা নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হয়। পরদিন ২ এপ্রিল সকাল ৮টার দিকে ফরিদপুর সদরের অম্বিকাপুর ইউনিয়নে রদয়ারামপুর এলাকায় আমজাদ হোসেনের বাড়ির কাছে একটি নেপিয়ারের ঘাসক্ষেত থেকে দুই হাতা ও দুই পা বাধা এবং গলায় কালো রঙের কাপড় দিয়ে ফাঁস দেয়া অবস্থায় তার মরদেহটি উদ্ধার করে ফরিদপুর কোতোয়ালী থানার পুলিশ। এ ঘটনায় ওই বছর ৪ এপ্রিল সাব্বিরের বাবা আলমগীর বিশ্বাস বাদী হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে ফরিদপুর কোতোয়ালী থানায় হত্যাসহ অটোরিকশা ছিনতাইয়ের অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করেন। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ফরিদপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের ভারপ্রাপ্ত পিপি মো. ছানোয়ার হোসেন বলেন, দেশে চালককে হত্যা করে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ছিনতাইয়ের ঘটনা দিনে দিনে বেড়ে যাচ্ছে। এ রায় সেক্ষেত্রে একটি দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।