উপজেলার মুকসুদপুর পৌরসভার ৭ নং ওয়ার্ডে কমলাপুর গ্রামের সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারের জসিমউদ্দিন মিয়া, নজিরন নেছা, সন্তান আতিকুর রহমান মিয়া ১৯৪৯ সালের ১ জানুয়ারি জš§ গ্রহণ করেন।
ছাত্রাবাস্থায় বঙ্গবন্ধুর আদর্শের ছাত্রলীগ, যুবলীগ, পরবর্তীতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এর মুকসুদপুর উপজেলা রাজনীতির সাথে সরাসরি জড়িত।
মুকসুদপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে বিগত ২০বছর যাবৎ একটানা দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়া তিনি মুকসুদপুর এসজে হাই স্কুলের সভাপতি, মুকসুদপুর কামিল মাদ্রসার গর্ভনিং বডির সভাপতি ও মুকসুদপুর কলেজ এর প্রতিষ্ঠাতা সদস্য এবং কয়েক বারের গর্ভনিং বডির সদস্যর দায়িত্ব পালন করেছেন।
মুকসুদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। নবদিগন্ত ক্লাবের প্রধান উপদেষ্টা, উপজেলা কমিউিনিটি পুলিশিং এর সভাপতি, অফিসার্স ক্লাবের সদস্য, গোপালগঞ্জ ক্লাবের সদস্য, জাতীয় ফুটবল টিমের সদস্য, ইউসিসি’একাধিকবার নির্বাচিত সভাপতি, জেলা ইউসিসি’ ফেডারেশনের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
এছাড়া ১৯৭২ সাল থেকে ইউনিয়ন পরিষদের মনোনীত চেয়ারম্যান এবং পরবর্তীতে মুকসুদপুর সদর (টেংরাখোলা) ইউনিয়নের ৪ বারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। মুকসুদপুর পৌরসভার নির্বাচিত মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
এছাড়া উপজেলা, জেলার বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের উপদেষ্টা এবং পৃষ্টপোষাকতা করেছেন। সরকারি-বেরকারিভাবে এলাকার উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ এবং হাতে কলমে প্রশিক্ষণের জন্য ১৩ টি দেশে মুকসুদপুর পৌরসভার মেয়র হিসেবে ভ্রমণ করেছেন।
২০১৭ সালে মে মাসে মুকসুদপুর পৌরসভা মেয়রের দায়িত্ব গ্রহণের পরে ৩য় শ্রেনির পৌরসভা থেকে ২য় শ্রেণী এবং সর্বশেষ প্রথম শ্রেণির পৌরসভায় উন্নীত করেন। এবং সরকারি, বেসরকারি এবং বেশকিছু আন্তর্জাতিক তহবিলের মাধ্যেমে পৌরসভার যুগান্তিকারী উন্নয়ন করেছেন ।
মহান মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা: ১৯৭১ সালের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানে ডাকে সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন। ওই সময় পাকবাহিনীর হাতে গ্রেফতার হয়ে ২ মাসের বেশী পাকি নিয়ন্ত্রিত ক্যান্টমেন্টে আটক থেকে অবর্ণনীয় নির্যাতন ভোগ করেছেন। ১৯৭১ সালে ১৩ এপ্রিল পাক – রাজাকার সিম্মিলিত ভাবে আক্রমণ চালিয়ে তার বাড়ীঘর সম্পুর্ণ ভাবে লুটপাটসহ আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয়।
বিভিন্ন আন্দোলনের ভূমিকা: ১৯৬৪ সাল থেকে ফরিদপুর রাজেন্দ্র কলেজ ছাত্র সংসদ নির্বাচনে এজিএস পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন । তার জয়লাভ সুনিশ্চিত জেনে নির্বাচনের দিন তৎকালিন মুসলিম লীগের মন্ত্রী আবদুল্লাহ জহিরুদ্দীন লাল মিয়া নির্বাচন বন্ধ করে দেয়। ওইদিন আতিককুর রহমানসহ শতাধিক ছাত্রলীগ নেতাকর্মী গ্রেফতার হয়। তিনি কয়েকমাস কারাবরণ কনে।
১৯৬৮ সালে মাগুরা কলেজের ছাত্র থাকালীন সময়ে ওই মাগুরা নোমানি ময়দানে রাজনৈতিক মিটিংএ পুর্বপাকিস্তানের গর্ভনর মোনায়েম খান বঙ্গবন্ধু সর্ম্পকে অশ্লীল বক্তব্য রাখায় আতিকুর রহমানসহ ছাত্রলীগের কয়েক বন্ধু সমাবেশের স্টেজে ইটপাটকেল ছুড়ে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়। ওই সময় পুলিশের হাতে গ্রেফতার হলে পুলিশ তাকে নির্যাতন শেষে যশোর জেলে পাঠায়। ওই সময় যশোর জেলে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর সাথে কারাবরণ করার দুর্লভ সুযোগ পান আতিকুর রহমান মিয়া।
১৯৬৯ সালে অসহযোগ আন্দোলন চলাকালীন তখনকার মুসলিম লীগের নেতৃবৃন্দ তাদের সার্বিক আন্দোলনে বাধা দেওয়ায় সংর্ঘষ হয়। আতিকুর রহমান মিয়া আহত হয়। তারপরেও তাকে এবং তার আপন ৪ ভাইসহ ৩৯ জনকে ফৌজদারি মামলায় আসামী করা হয়। কিছুদিন কারাভোগও করেন।
১৯৮৬ সালের সাধারন নির্বাচনে বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা’র পক্ষে গোপালগঞ্জ ১ আসনের সকল প্রকার নির্বাচন পরিচালনা করেন। নির্বাচন শেষে সরকারি নিয়ন্ত্রণ কক্ষকে পাশকাটিয়ে তৎকালিন স্বৈর সরকারের স্বরাস্ট্র মন্ত্রী মেজর জেনারেল মহব্বতজান চৌধুরি মুকসুদপুর কলেজে সকল প্রিজাইডিং অফিসারদের নিয়ে ফলাফল পরিবর্তন করার চেষ্টা করেন। তখকার নির্বাহী অফিসার কেএম নুরুল হুদাকে হাতে তৈরী ফলাফল ঘোষণার জন্য চাপ সৃষ্টি করেন। আতিকুর রহমান তখন গোপালগঞ্জ গিয়ে শেখ সেলিম এমপির সাথে দেখা করে জেলা প্রশাসকের কাছে গিয়ে মুকসুদপুরের ৭ টি ভোটকেন্দ্রের ফলাফল স্থগিত করার ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। যার কারণে উপনির্বাচনে জননেত্রী শেখ হাসিনা গোপালগঞ্জ ১ আসন থেকে ১৯৮৬ সালে এমপি নির্বাচিত হন। স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে ১৯৯০-১৯৯৬ সালের গণ আন্দোলন, ২০০১ হতে ২০০৬ বিএনপি’র দু:শাসনের বিরুদ্ধে সর্বদা রাজপথে অবস্থান, সকল প্রকার লড়াই সংগ্রামে সরাসরি অংশগ্রহণ করেন। ১৯৯৬ সাল থেকে অদ্যাবধি সকল জাতীয় নির্বাচন, উপজেলা পরিষদ নির্বাচন, ইউনিয়ন এবং পৌরসভা নির্বাচনে ৩ ও ৫ নং কেন্দ্র মুকসুদপুর কলেজ নির্বাচন কেন্দ্রের আহব্বায়ক দায়িত্ব পালন করেন। সর্বপরি বর্তমান সরকারের মন্ত্রী ও গোপালগঞ্জ- ১ আসনের সংসদ সদস্য মুহাম্মদ ফারুক খানের রাজনৈতিক অভিভাবক এবং তার কয়েকটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।