ফরিদপুরের নগরকান্দায় ঈদুল ফিতর উপলক্ষে দুঃস্থ্যদের মাঝে ভিজিএফের চাল বিতরণে চুরির অভিযোগ উঠেছে এক ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। খবর পেয়ে স্থানীয় সাংবাদিকরা ইউনিয়ন পরিষদে গেলে তাদের বাঁধা দেন ও অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন ওই চেয়ারম্যান। গতকাল বুধবার দুপুরে উপজেলার কোদালিয়া-শহিদনগর ইউনিয়ন পরিষদে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় সাংবাদিকবৃন্দ।
জানা যায়, সকাল থেকেই ট্যাগ অফিসারের অনুপস্থিতে অনিয়মের মাধ্যমে ভিজিএফের চাল বিতরণ চলছিল। এমন খবরে মাই টিভির স্থানীয় প্রতিনিধি শফিকুল ইসলাম জনি, যুগান্তরের নগরকান্দা প্রতিনিধি মিজান বাবু ও সময়ের আলোর নগরকান্দা প্রতিনিধি মিজানুর রহমান ওই ইউনিয়ন পরিষদে সংবাদ সংগ্রহ করতে যান। এ সময় সংবাদ সংগ্রহের কাজে বাঁধা দিয়ে পরিষদ থেকে তাদেরকে বেরিয়ে যেতে বলেন ওই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান খন্দকার জাকির হোসেন নিলু। অনিয়মের বিষয় তথ্য জানতে চাইলে খারাপ আচরণও করেন তিনি।
সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম জনি বলেন, প্রত্যেক উপকারভোগীকে ১০ কেজি করে ভিজিএফের চাল বিতরণের কথা থাকলে ওই ইউনিয়ন পরিষদে ৮ কেজি করে চাল বিতরণ করা হচ্ছিল। বিষয়টি স্থানীয়রা আমাদের জানালে আমরা ওই ইউনিয়ন পরিষদে যাই। কিন্তু সেখানে যাওয়ার পর ইউপি চেয়ারম্যান আমাদের দেখেই উত্তেজিত হয়ে ওঠেন। আমাদের নিয়ে অশালীন মন্তব্য করেন। ভিডিও ধারনে বাধা দিয়ে পরিষদ থেকে আমাদের বের করে দেন। তিনি আরও বলেন, চাল বিতরণের সময় ট্যাগ অফিসার উপস্থিত ছিলেন না। এমন কি চাল মাপার কোনো মেশিনও আমরা দেখিনি।
সাংবাদিকে সঙ্গে খারাপ আচরণের ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে নগরকান্দা প্রেসক্লাবের সভাপতি মো. মাহবুব আহাদ বলেন, ইউপি চেয়ারম্যান খন্দকার জাকির হোসেন নিলু সাংবাদিক বিদ্বেষী লোক। তিনি কখনো সাংবাদিকদের দেখতে পারেন না, সব সময় খারাপ আচরণ করার চেষ্টা করেন। আমি আজকের এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
এ বিষয় কোদালিয়া-শহীদনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান খন্দকার জাকির হোসেন নিলু বলেন, একজন সাংবাদিক পরিচয় না দিয়ে ভিডিও করতে করতে পরিষদের গোডাউনে ঢুকতে গিয়েছিল। পরে আমি তাকে বাধা দিয়ে পরিষদ থেকে বের করে দিয়েছি। আমি যদি জানতাম সে সাংবাদিক, তাহলে তাকে বাধা দিতাম না, বরং চাল পরিমাপ করে দেখিয়ে দিতাম। চাল বিতরণে অনিয়ম প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ট্যাগ অফিসারের প্রতিনিধি ও ইউপি সদস্যদের উপস্থিতে চাল বিতরণ করা হয়েছে। এখানে একছটাক চালও কম দেওয়া হয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে নগরকান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাফি বিন কবির বলেন, সাংবাদিকদের সঙ্গে এক ইউপি চেয়ারম্যানের খারাপ আচরণের একটি ভিডিও আমি দেখেছি। এটা কোনোভাবেই কাম্য নয়। যা খুবই দুঃখজনক। আমি চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলেছি, তিনি দুঃখ প্রকাশ করেছেন। চাল বিতরণে অনিয়ম প্রসঙ্গ তিনি বলেন, চাল যদি কম বিতরণ করে থাকে, সেটা আমরা তদন্ত করে দেখছি। যদি অনিয়মের প্রমাণ পাওয়া যায়, তাহলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।