মুকসুদপুর উপজেলার ১৬ ইউনিয়নের ২০২২-২৩ বছর পর্যন্ত ১৬ ইউনিয়নে প্রায় ৫০ লাখ টাকা ভূমি উন্নয়ন কর বাকী রয়েছে। ১৭ মে বুধবার সহকারি কমিশনার ভূমি অমিত কুমার সাহা এই তালিকা প্রকাশ করেন। তালিকায় দেখাযায় ১৬ ইউনিয়নের মধ্যে সর্বোচ্চ ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধ করতে ব্যর্থ খান্দারপাড়া ইউনিয়ন এবং সর্বনিম্ন কর বকেয়া রয়েছে বাটিকামারী ইউনিয়নের। এসকল ইউনিয়ন পরিষদের বার্ষিক আয় এবং ব্যয় ঠিকই আছে, ইউনিয়নের কার্যক্রমও বন্ধ নেই। উপজেলার ১৬ ইউনিয়নের চেয়ারম্যানদের নিকট তাদের পরিষদের ভূমি উন্নয়ন করের বকেয়া বিষয়ে জানতে চাইলে কেউই এর সদুত্তোর দিতে পারেনি।
সহকারি কমিশনার ভূমির কার্যালয় থেকে প্রাপ্ত নোটিশে দেখাযায়, উপজেলার ১৬ ইউনিয়নের পশারগাতী ইউনিয়নে চলতি
বছর এবং বকেয়া মিলিয়ে মোট ১ লাখ ৫৫ হাজার ৪২৩ টাকা, গোবিন্দপুর ইউনিয়নের ৪ লাখ ২৭ হাজার ৭৯৮ টাকা, খান্দারপাড়া ইউয়িনের ১২ লাখ ৭২ হাজার ৭৪৮ টাকা, বহুগ্রাম ইউনিয়নের ১ লাখ ২৭ হাজার ৪১৫ টাকা, বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের ৭৪ হাজার ৯২৫ টাকা, ভাবড়াশুর ইউনিয়নের ৬৪ হাজার ১৫ টাকা, উজানী ইউনিয়নের ১ লাখ ৯ হাজার ২৩৮ টাকা, মহারাজপুর ইউনিয়নের ৫৩ হাজার ৬৯৪ টাকা, বাটিকামারী ইউনিয়নের ৪ হাজার ৭৬ টাকা, দিগনগর ইউনিয়নের ২ লাখ ৫১ হাজার ৭৫৮ টাকা, গোহালা ইউনিয়নের ৪ লাখ ৮২ হাজার ১৮৯ টাকা, রাঘদি ইউনিয়নের ২ লাখ ৯৬ হাজার ৭৫৮ টাকা, মোচনা ইউনিয়নের ৩ লাখ ৫২ হাজার ২৮০ টাকা, কাশালিয়া ইউনিয়নের ৪ লাখ ৩০ হাজার ৭৪০ টাকা, ননীক্ষীর ইউনিয়নের ৬ লাখ ৯০ হাজার ৫১ টাকা এবং জলিরপাড় ইউনিয়নের ১ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ টাকা ভূমি উন্নয়ন কর বাকী রয়েছে।
খান্দারপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মুহাম্মদ সাব্বির খান জানান, এই বিষয়ে আমি কিছুই যানতাম না। হঠাৎ করে দেখি নোটিশ আসছে ১২ লাখ ৭২ হাজার ৭৪৮ টাকা কর বকেয়া। আমি তহশিলদারের নিকট জানতে চেয়েছি এতো টাকা বাকি কিভাবে পড়লো তিনি আমাকে জানাতে চেয়েছেন। কর পরিশোধের কথা জানতে চাইলে তিনি জানান, একটা ইউনিয়ন পরিষদের তো ট্যাক্স ছাড়া কোন আয় নেই। ট্যাক্সও মানুষ দিতে চায়না। তাহলে আমরা এতো টাকা পরিশোধ কেমনে করবো।
ননীক্ষীর ইউপি চেয়ারম্যান শেখ রনি আহম্মেদ জানান, আমি কিছুই যানতাম না। সেদিন দেখি নোটিশ এসেছে ৬ লাখ ৯০ হাজার টাকা বাকী। আমি তো অল্প কিছুদিন চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছি। আগের চেয়ারম্যান যারা ছিলেন তারা পরিশোধ করেননি। আমি কিছু কিছু করে কিস্তি আকারে পরিশোধ করবো।
উজানী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শ্যামল কান্তি বোস জানান, দশ বছরের কর বাকীর কথা তিনি আগে জানেননা এবং তাকে জানানো হয়নি। আমার ইউনিয়নে পাঁচটি মৌজা আছে যার মধ্যে সরকারি রাস্তা, জলমহাল, হালট রয়েছে, যার কর আমার পরিষদের উপর ধার্য করা হয়েছে। অথচ এই সমস্থ ভূমির আয়ের টাকার অংশ পরিষদ ভোগ করেনা। রাস্তার পাশের এলজিইডির লাগানো গাছ বিক্রি করা হলে, জল মহাল ইজারা দিলে, কোন সরকারি যায়গায় ঘর নির্মাণ হলে, এ থেকে আয়ের অর্ধেক অংশ পরিষদের পাওয়া উচিৎ। যা দিয়ে কর পরিশোধ করা যায়। করের সমস্যাগুলো সমাধন করতে হলে আমাদের আয়ের উৎসর প্রয়োজন।
এবিষয়ে সহকারি কমিশনার ভূমি অমিত কুমার সাহা জানান, উপজেলার ১৬ ইউনিয়ন পরিষদের নিকট প্রায় ৫০ লাখ টাকা ভূমি উন্নয়ন কর বাকী পড়েছে। সংশ্লিষ্ট সকল চেয়ারম্যানদের বার বার নোটিশ দেয়া হয়েছে। কিন্তু তারা নোটিশ পেয়েও কোন কর পরিশোধ করেননি। তাদের আবারও নোটিশ করা হয়েছে কর পরিশোধ না করলে সরকারি বিধি অনুযায়ী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।