ফরিদপুর সদরে ৬ বছর বয়সী এক শিশুকে ধর্ষণ চেষ্টার ঘটনায় মূল অভিযুক্ত দাদাকে গ্রেপ্তার করেছে কোতয়ালী থানা পুলিশ। ঘটনাটির ৮ দিন পর শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) রাতে কোতয়ালী থানায় শিশুটির মা বাদী হয়ে তাকে একমাত্র আসামি করে মামলা দায়ের করেন। মামলা হওয়ার পরেই রাতেই তাকে আটক করা হয় বলে কোতয়ালী ওসি এম.এ. জলিল জানিয়েছেন।
গত শুক্রবার (১ সেপ্টেম্বর) সদর উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের কৃষ্ণনগর গ্রামের বাসিন্দা বাবলু গাইনের (৫০) বিরুদ্ধে ঐ শিশুকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ উঠে। বাবলু গাইন সম্পর্কে শিশুটির দাদা হয়। ঘটনাটির পর গ্রাম্য মোড়লদের চাপে থানায় অভিযোগ দিতে পারেনি বলে শিশুটির পরিবার জানিয়েছেন।
শিশুটির পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘ দিন প্রবাসে থাকা বাবলু গাইন, দেশে ফিরে বাড়ির সামনেই একটি মুদি দোকান দিয়েছে। গত শুক্রবার জুম্মার নামাজের আগে শিশুটি বাবলু গাইনের বাড়ীর সামনে যায়, বাড়ীর অন্যান্য সদস্যরা বাড়ীতে না থাকার সুযোগে, পেয়ারা দেবার কথা বলে শিশুটিকে ঘরে নিয়ে যায় বাবলু গাইন। এক পর্যায়ে শিশুটির গোপনাঙ্গে হাত দেয় বাবলু গাইন, ব্যথায় এবং ভয়ে চিৎকার দিলে শিশুটিকে ছেড়ে দেয় সে। শিশুটি দৌড়ে ঘর থেকে বের হয়ে বাড়িতে গিয়ে তার দাদীকে ঘটনা বলে।
শিশুটির মা জানান, আমার মেয়ের উপর অত্যাচার করছে, মাইরেওতো ফেলাইতে পারতো। আমি এর বিচার চাই, এলাকার মুরব্বীরা আছে তাদেরকে জানাইছি দেখা যাক তারা কি করে।
এক প্রতিবেশী জানান, ৬ বছরের বাচ্চাতো আর মিথ্যা কথা বলবে না, বাচ্চা যা বলছে শুনছি, সেই কথা মুখ দিয়ে বলার মতো মুখতো আর আমাদের নাই। অপরদিকে বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার জন্য এলাকার একটি পক্ষ উঠে পরে লেগেছিলো বলে স্থানীয়রা জানায়। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, তারা শিশুটির পরিবারকে ভয়ভীতি দেখিয়ে থানা পুলিশ করতে দেয়নি বরং স্থানীয় ভাবে একটি ঘরোয়া শালিশ বসিয়ে বাবলু গাইনকে ২০ বার কান ধরিয়ে উঠবস করিয়েছে এবং সমাজ থেকে এক ঘরে করে রেখেছে বলে যানা যায়।
কৃষ্ণনগর ইউপি চেয়ারম্যান জানান, ঘটনার সম্পর্কে আমার জানা নেই, তবে ধর্ষণ মার্ডারের মতো বিষয় শালিশ করার মতো ক্ষমতা সাধারন জনগন বা মেম্বার চেয়ারম্যানদের নাই। বিষটি আমি দেখবো ।
এ বিষয়ে রবিবার (১০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এ জলিল বলেন, এটা খুব স্পর্শকাতর একটি বিষয়। এ বিষয়ে গতকাল রাতে অভিযোগ পেয়েছি এবং মামলা রুজু হয়েছে। অভিযোগ পাওয়ার পরেই মূল অভিযুক্ত বাবুল গাইনকে রাতেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার লিটন ঢালী জানান, আমি স্থানীয় জনপ্রতিনিধির মাধ্যমে খোঁজ নিয়ে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিবো। আর উপজেলা প্রশাসন এই পরিবারের পাশে আছে। তাদের যে কোন ধরনের সহযোগিতা আমরা করবো।