বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মামুনুল হক বলেছেন, ইস্কনকে আদালত নিষিদ্ধ করতে ব্যর্থ হলে আলেম সমাজই প্রতিরোধ গড়ে তুলবে।
‘একজন আইনজীবীকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে ও জবাই করে হত্যা করেছে ইস্কন।
এছাড়া তারা সাম্প্রদায়িক উস্কানি সৃষ্টি করে অরাজকতা সৃষ্টির লক্ষ্যে কাজ করছে। তাই এ রকম সাম্প্রদায়িক উস্কানিতে পা না দিয়ে দেশবাসীকে সজাগ থাকার অনুরোধ করছি।’
বুধবার (২৭ নভেম্বর) বিকেলে ফরিদপুরের রাজেন্দ্র কলেজের শহর ক্যাম্পাস মাঠে খেলাফত মজলিসের গণ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মামুনুল হক আ’লীগ সরকারের সমালোচনা করে বলেন, ‘আ’লীগ সরকার এদেশের ইসলামি তাওহীদী জনতার উপর স্টিম রোলার চাপিয়ে নিষ্পেষিত করেছিল। ইসলামি জনতা ও আলেম সমাজ সবচেয়ে বেশি নির্যাতনের শিকার হয়েছিল। ২০১৩ সালে মতিঝিলের শাপলা চত্ত্বরে হেফাজত ইসলামের নেতাকর্মীর উপর লক্ষ লক্ষ গুলি বর্ষণ করা হয়েছিল। রাতের আঁধারে নির্যাতন করা হয়েছিল। তবে আলেম সমাজ ক্ষমতায় গেলে শেখ হাসিনার মতো দানব সরকার হবেনা।’
মামুনুল হক বলেন, ‘বিগত এপ্রিল মাসে ফরিদপুরের মধুখালীতে দুই ভাইকে হিন্দু অধ্যুষিত এলাকায় পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছিল। সেই হত্যার সঠিক বিচার হলে গত মঙ্গলবার চট্টগ্রামের আদালত চত্বরে আইনজীবী হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটতো না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা ইস্কনের বিরুদ্ধে বারবার কথা বলেছি, সতর্ক করেছি। তবুও সরকার সজাগ হয়নি। তাইতো এবার সর্বোচ্চ আদালতের দিকে তাকিয়ে আছি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী ইস্কনকে নিষিদ্ধ করার। যদি ইস্কনকে আদালত নিষিদ্ধ করতে ব্যর্থ হয় তাহলে আলেম সমাজই ইস্কনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলবে।’
খেলাফত মজলিসের এ মহাসচিব শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘শেখ হাসিনা জনগণের ভোটাধিকার হরণ করেছিল। প্রশাসনকে দলীয়করণ করেছিল। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দলীয়করণ করে পেটুয়া বাহিনীতে রূপান্তরিত করেছিল। শেখ হাসিনা রাজনীতি শুরু করেছিল দেশকে শেষ করে দেওয়ার জন্য।’
তিনি বলেন, ‘ত্রিশ হাজার কোটি টাকার পদ্মা সেতুর কাজ দেখিয়ে বিশ হাজার কোটি টাকা পাচার করেছে আ’লীগ। এরকম বড় বড় মেগা প্রকল্প থেকে দুই-তিনগুণ টাকা বিদেশে পাচার করেছে। এখন ইস্কনকে লেলিয়ে দিয়ে দেশে দাঙ্গা সৃষ্টি করে স্বার্থ হাসিল করতে চাচ্ছে তারা।’
মামুনুল হক অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘দেশে লেবেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করে অতি দ্রুত নির্বাচন দিন। জনগণ নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে আছেন।’
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের ফরিদপুর জেলা শাখার সভাপতি মাওলানা আমজাদ হোসাইনের সভাপতিত্বে এসময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস ফরিদপুর জেলা শাখার প্রধান উপদেষ্টা শাইখুল হাদীস আল্লামা শাহ্ আকরাম আলী, অপর উপদেষ্টা শাইখুল হাদীস আল্লামা হেলালুদ্দীন সাহেব, উপদেষ্টা শাইখুল হাদীস আল্লামা আবুল হুসাইন।
এছাড়া এসময় উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমাদ, মুফতী শারাফত হোসাইন, মাওলানা আতাউল্লাহ আমীন, সিনিয়র সহ-সভাপতি মাওলানা সুবহান মাহমুদ, সহ-সভাপতি মুফতী মাহমুদ হাসান ফায়েক, মাওলানা মিজানুর রহমান মোল্লা, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আবুল হাসানাত জালালী, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের ফরিদপুর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মুফতী আবু নাসির, বাংলাদেশ খেলাফত যুব মজলিসের সভাপতি মাওলানা মিজানুর রহমানসহ বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের সকল অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মী।