1. kazi.rana10@gmail.com : Sohel Rana : Sohel Rana
  2. jmitsolution24@gmail.com : support :
শনিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:৪৬ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
গওহরডাঙ্গা মাদরাসার মাহফিল নিয়ে ভারতীয় মিডিয়ার প্রোপাগান্ডা গাজী লিকুর ক্ষমতার অপব্যবহার করে, ১১ হাজার বেতনের কর্মকর্তা গড়েছে সম্পদের পাহাড় মাদক সেবনের সময় ২০ বহিরাগতকে কান ধরে উঠবস কাশিয়ানীর পরাণপুর পশুরহাটের খাজনার টাকা হরিলুট ছাত্রদলের উদ্যোগে ফরিদপুরে অতিথি পাখির নিরাপদ আশ্রয়ে গাছে গাছে মাটির হাঁড়ি বাবার সব সম্পত্তি লিখে নিতে ছোট ভাই-বোনদের নির্যাতন, মামলা করেও মিলছে না মুক্তি ভারতের দালালরা হুশিয়ার সাবধান শ্লোগানে উত্তাল মুকসুদপুর ফরিদপুরে ৩৩ তম আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবস ও ২৬ তম জাতীয় প্রতিবন্ধী দিবস পালিত জাতীয় ঐক্য নিয়ে সংলাপের ডাক প্রধান উপদেষ্টার মুকসুদপুরে প্রতিদিন শতাধিক ভিক্ষুকের দেখা

হাজার বিঘা জমি, তিন দেশে বাড়ি নিক্সন চৌধুরীর

ডেস্ক রিপোর্ট
  • Update Time : রবিবার, ১৭ নভেম্বর, ২০২৪
  • ১০৮ Time View

ফরিদপুরের একসময়ের প্রভাবশালী সংসদ সদস্য মজিবুর রহমান চৌধুরী ওরফে নিক্সন চৌধুরী। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আত্মীয়তার সুযোগ নিয়ে এলাকায় ত্রাসের রাজনীতি কায়েম করেন তিনি। বিভিন্ন সময় বিতর্কিত বক্তব্য দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচিতও ছিলেন। পদ্মা সেতু দুর্নীতির অভিযোগ সামনে এলে তার নাম সবচেয়ে বেশি শোনা যায়। ৫ আগস্ট আওয়ামী সরকারের পতনের পর থেকে পালিয়ে আছেন তিনি।

এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের পাশাপাশি নামে-বেনামে বিপুল সম্পদ অর্জন করেছেন সাবেক এমপি নিক্সন চৌধুরী। তার নিজের ও পরিবারের নামে হাজার বিঘার বেশি ভূমির মালিকানা রয়েছে। রয়েছে ঢাকার পূর্বাচল, আদাবর, গুলশান ও বনানীতে প্লট ও ফ্ল্যাট। সিঙ্গাপুর, অস্ট্রেলিয়া, কানাডায় রয়েছে বাড়ি। ফরিদপুরে নিজের বাড়িতে বানিয়েছেন আস্ত একটা চিড়িয়াখানাও।

নিক্সন চৌধুরীর বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগ অনুসন্ধানে এরই মধ্যে মাঠে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সংস্থাটির উপপরিচালক মো. সালাহউদ্দীনের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি টিম অভিযোগ অনুসন্ধানে বাংলাদেশ ব্যাংক, দেশের ৯১টি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান, ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর সিটি কর্পোরেশন, ঢাকা ও ফরিদপুরের ভূমি অফিস, রাজউক, সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডসহ শতাধিক প্রতিষ্ঠানের নথিপত্র তলব করেছে। ইতোমধ্যে বেশকিছু নথিপত্র দুদকের প্রধান কার্যালয়ে এসেছে বলে জানা গেছে।এ বিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে দুদকের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, আলোচিত নিক্সন চৌধুরীর স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের খোঁজে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে দুদক চিঠি দিয়েছে। ইতোমধ্যে স্ত্রীসহ তার বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। যদিও বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে তিনি ইতোমধ্যে দেশ ত্যাগ করেছেন। আমাদের অনুসন্ধান থেমে নেই। দুদকের দালিলিক প্রমাণ সংগ্রহ ও যাচাই-বাছাইয়ের কাজ চলমান রয়েছে।
তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত রাজধানীতে বাড়ি ও ফ্ল্যাট থাকার সত্যতা পাওয়া গেছে। তার নিজ এলাকায় বালুর ব্যবসা ও অঢেল স্থাবর সম্পদের বিষয়ে প্রাথমিক সত্যতা মিলেছে। অভিযোগ যাচাই-বাছাইয়ের কাজ চলমান রয়েছে, অনুসন্ধান শেষে প্রকৃত সত্য উদঘাটিত হবে।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ফরিদপুর-৪ আসনের তিন বারের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য মজিবুর রহমান নিক্সন চৌধুরী প্রথমে ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা উপজেলার আজিমনগর ইউনিয়নে ব্রাক্ষণপাড়া মৌজার চর অঞ্চলে ৩৮ শতাংশ জমি ক্রয় করে বাড়ি করেন। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আত্মীয়তার সুবাদে তিনি নিজ এলাকায় বাড়তি সুবিধা নিয়ে ফরিদপুর-৪ আসনে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেন।

অভিযোগ রয়েছে, আড়িয়াল খাঁ নদ ও পদ্মা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু তুলে বিক্রি করে হাজার হাজার কোটি টাকার বাণিজ্য করেছেন নিক্সন চৌধুরী। আশপাশের জমির মালিকদের ডেকে বাড়িতে এনে জোর করে ভাঙ্গার সদরপুর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে পাঠিয়ে জমি রেজিস্ট্রি করে নিয়েছেন। এভাবে প্রায় ১১শ বিঘা জমি নিজের স্ত্রী ও সন্তান এবং ভাইয়ের নামে দলিল করে নিয়েছেন তিনি।

নিক্সন চৌধুরী সিঙ্গাপুর, অস্ট্রেলিয়া, কানাডায় একাধিক বাড়ি ও ফ্ল্যাট ক্রয় করেছেন বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। নিজ বাড়িতে কয়েক একর জায়গার ওপর চিড়িয়াখানা ও বাগান বাড়ি করেছেন। এ ছাড়া ফরিদপুরের ভাঙ্গা ও ঢাকায় একাধিক বাড়ি ও ফ্ল্যাট ক্রয় করেছেন। কিছু নিজের নামে আর কিছু স্ত্রী, সন্তান ও ভাইয়ের নামে গড়েছেন। আয়কর ফাইল অনুসারে নিক্সন চৌধুরীর নামে ১২-১৪ কোটি টাকা এবং স্ত্রী তারিন হোসেনের নামে ১৭-১৮ কোটি টাকার সম্পদের তথ্য রয়েছে বলে জানা গেছে।

দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৩ অক্টোবর নিক্সন চৌধুরী ও তার স্ত্রী তারিন হোসেনের বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা দেন আদালত।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, নিক্সন চৌধুরীর অন্যতম সহযোগী ও ফরিদপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহাদাৎ হোসেন বিপুল পরিমাণ স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের মালিক হয়েছেন। যার সঙ্গে নিক্সন চৌধুরীর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সম্পর্ক রয়েছে। ইতোমধ্যে শাহাদাৎ হোসেন ও তার স্ত্রীর নামে ৩ কোটি টাকার সম্পদের প্রমাণ পাওয়া গেছে দুদকের অনুসন্ধানে। যে কারণে ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে মো. শাহাদাৎ হোসেন ও তার স্ত্রী তানিয়া আক্তার রুমার সম্পদের হিসাব চায় দুদক।

অনুসন্ধানে তাদের রাজধানীর মিরপুরের পল্লবীতে এক হাজার ৩০০ বর্গফুটের ফ্ল্যাট, ঢাকার পল্লবীতে ১৩ কাঠার জমিসহ প্রায় তিন কোটি টাকার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের প্রমাণ মিলেছে।
হলফনামায় যত সম্পদ

২০২৪ সালের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে দাখিল করা হলফনামা অনুযায়ী ফরিদপুর-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সনের নামে ২ হাজার ৪২ শতাংশ কৃষিজমির মালিকানা রয়েছে। যেখানে ১০ বছর আগে অর্থাৎ ২০১৪ সালের হলফনামায় তার মালিকানাধীন কৃষিজমির পরিমাণ ছিল মাত্র ৩৮ শতাংশ।

ফরিদপুরের ভাঙ্গার আজিমনগর ইউনিয়নের ব্রাহ্মণপাড়ার বিভিন্ন এলাকায় ৯৭৫ দশমিক ২৮ শতাংশ, ৫১০ শতাংশ, ৩০ শতাংশ, ২৩৪ শতাংশ, ২৯০ শতাংশের প্লট আছে। হলফনামায় দেখানো হয়েছে ঢাকার সাভারে ৩ দশমিক ২৮ শতাংশ জমির মালিক তিনি। এছাড়া অকৃষি জমির মধ্যে মাদারীপুরের শিবচর হাউজিংয়ে ৫ কাঠার প্লট, দত্তপাড়ায় ০.৩৮ একর, ঢাকার পূর্বাচল রাজউকের ৭.৫ কাঠা এবং আদাবরে ০.০১২১৫ একর জমির উল্লেখ আছে।

ঢাকার বনানীতে ৩৭১৬.১১ বর্গফুটের ফ্ল্যাট, ফরিদপুরের ভাঙ্গায় দোতলা দালান, একতলা অফিস, বনানীতে ঢাকা প্রোপার্টি ডেভেলপমেন্ট লিমিটেডের ফ্ল্যাট, গুলশানে ৪ হাজার ৮৯১ বর্গফুট ও গুলশানের ৭৯ রোডের ১৬নং হাউজে আরও একটি ফ্ল্যাট আছে নিক্সন চৌধুরীর। তার ঢাকা মেট্রো ঘ-২১-২৬০০ জিপ গাড়ির দাম দেখিয়েছেন ৯১ লাখ ১৫ হাজার টাকা।

পেশার বিবরণীতে বলা হয়েছে, স্বাধীন বাংলা সার্ভিসিং অ্যান্ড ফিলিং স্টেশনের অংশীদার, নীপা পরিবহনের পরিচালক, রীতা কনস্ট্রাকশন লিমিটেডের পরিচালক এবং এন ডেইরি ফার্মের মালিকানা রয়েছে তার। হলফনামায় বলা হয়েছে তার নগদ আছে ৩৮ লাখ ৩০ হাজার ৬০০ টাকা, ব্যাংকে জমা আছে ৭ লাখ ৪৫ হাজার ২৫৯ টাকা। স্বর্ণালংকার রয়েছে নিজ ও স্ত্রীসহ নির্ভরশীলদের নামে ৮৫ তোলা।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2023
Developed By : JM IT SOLUTION