ফরিদপুরের মানুষের ভালোবাসায় সিক্ত হয়েছেন জাতীয় ফুটবল দলের গোলকিপার আনিসুর রহমান জিকো ও ফরিদপুরের কৃতি সন্তান জাতীয় দলের উদীয়মান ফুটবলার মোরসালিন শেখ। মাত্র ১৭ বছর বয়সী ফরিদপুরের কৃতি সন্তান মোরসালিন ও আনিসুর রহমান জিকোকে সংবর্ধণা অনুষ্ঠানে এসে মানুষের ভালোবাসায় মুগ্ধ হয়েছেন জনপ্রিয় ফুটবলার ব্যারিস্টার সুমন ফুটবল একাডেমীর প্রতিষ্ঠাতা এ্যাডভোকেট সায়েদুল ইসলাম সুমন।
গতকাল শনিবার বিকালে ফরিদপুর শেখ জামাল স্টেডিয়ামের লক্ষ মানুষের উপস্থিতিতে ফরিদপুর জেলা ফুটবল একাদশের সাথে ব্যারিস্টার সুমন ফুটবল একাদশের মধ্যে প্রীতি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়। সাফ টুর্নামেন্টের সেরা গোলকিপার আনিসুর রহমান জিকো ও ফুটবলার মোরসালিন শেখকে সংবর্ধণা দেয়ার লক্ষ্যে ফরিদপুর ক্রীড়া সংস্থার সহযোগিতায় এই প্রীতি ম্যাচের আয়োজন করেন ফরিদপুর জেলা প্রশাসন। খেলায় শেষ পর্যন্ত কোনো গোল না হওয়ায় ড্র হয়।
দুপুর একটা থেকে জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে দর্শক আসতে শুরু করে। বিকাল ৩টার আগেই কানায় কানায় দর্শক পূর্ণ হয়ে যায় ফরিদপুরের শেখ জামাল স্টেডিয়াম। এক পর্যায়ে বৃষ্টি হানা দেয় মাঠে। বৃষ্টিকে উপেক্ষা করেই এই দুই দলের মধ্যেকার প্রীতি ম্যাচ উপভোগ করেন দর্শকেরা। খেলা শুরুর আগে মাঠ প্রদিক্ষণ করেন ব্যারিস্টার সুমন এবং আনিসুর রহমান জিকো ও মোরসালিন শেখ। এ সময় তারা দর্শকদের উদ্দেশ্যে উড়ন্ত ভালোবাসা ছুড়ে দেন, এতে মেতে উঠে দর্শকেরা।
এরপর বেলুন ও কবুতর উড়িয়ে এই প্রীতি ম্যাচের উদ্বোধন করেন ফরিদপুর জেলা প্রশাসক মোঃ কামরুল আহসান তালুকদার পিএএ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মোঃ শাহজাহান (পিপিএম-সেবা), পৌর মেয়র অমিতাভ বোস সহ সকল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানবৃন্দ।
এরপর মাঠে গড়ায় ফুটবল। বার বার আক্রমণ ও পাল্টা আক্রমণে উত্তেজনা ছড়ায় দর্শকদের মাঝে। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে কোনো দলই গোলের মুখ দেখেনি। শেষ পর্যন্ত ড্র নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয় দুই দলকেই।
খেলা শেষে ফরিদপুরের কৃতি সন্তান মোরসালিন শেখ ও সাফ সেরা গোলকিপার আনিসুর রহমান জিকোকে সংবর্ধণা জানানো হয়। তাদের হাতে সম্মাননা ক্রেস্ট তুলে দেন অতিথিবৃন্দ।
এ সময় এ্যাডভোকের সায়েদুল ইসলাম সুমন দর্শকদের উদ্দেশ্যে বলেন- ‘ফরিদপুরের মানুষের ভালোবাসায় আমাকে জিততে দেয়নি। এই ভালোবাসাকে আমি কখনো হারাতে পারি না। আমি আজ জিততে পারতাম। কারন, আমার দল এখন পর্যন্ত ১৪০টি ম্যাচ খেলেছে কিন্তু যেখানে যে দাওয়াত দিয়ে নিয়ে ভালোবাসায় ভাসিয়ে দেন তাদের হারানো যায় না।’
তিনি আরো বলেন- ‘আমার জীবনে আমি ফুটবলারকে মাঠে নামতে দেখেছি, ব্যারিস্টারকে মাঠে নামতে দেখেছি। কিন্তু ফুটবলার ও ব্যারিস্টারকে মাঠে নামানোর জন্য কোনো ডিসিকে দেখিনি, ফরিদপুরের ডিসি ছাড়া। সারাদেশে যদি এই ধরনের ডিসি-এসপি থাকে তাহলে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলায় জননেত্রী শেখ হাসিনা যেভাবে ফুটবল দেখতে চেয়েছেন সেভাবে তিনি পাবেন।’
এর আগে পুলিশ সুপার মোঃ শাহজাহান (পিপিএম-সেবা) বলেন- ‘আমাদের মাদক থেকে দূরে থাকতে হলে খেলায় আসতে হবে। নারী নির্যাতন, বাল্য বিবাহ, জঙ্গিবাদ থেকে দূরে থাকতে হলে সকলকে খেলাধূলায় আসতে হবে। আজ শেখ জামাল স্টেডিয়াম কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে গেছে, আমরা চাই- সবাই সামাজিক অনাচার থেকে দূরে থাকুক।’
জেলা প্রশাসক মোঃ কামরুল আহসান তালুকদার পিএএ বলেন- ‘সকল অপসংস্কৃতি থেকে খেলায় আসতে হবে। মাদক ছেড়ে খেলায় আসতে হবে। আমরা বারো মাসই খেলার আয়োজন করবো। আমি, এসপি এবং জেলা আওয়ামীলীগকে নিয়ে জেলা ক্রীড়া সংস্থার সহযোগিতায় বারো মাসই খেলার আয়োজন করা হবে, উৎসবে পরিণত করা হবে।’