রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার হাবাসপুর খেয়াঘাটের অদূরে পদ্মা নদী থেকে চলছে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের মহোৎসব। এতে ভাঙনের হুমকির মুখে পড়েছে নদী তীরবর্তী বাড়িঘর ও কৃষিজমিসহ বিভিন্ন স্থাপনা।
অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা। সরেজমিন দেখা যায়, উপজেলার হাবাসপুর চরপাড়া বেড়িবাঁধের পাশে সাতটি স্থানে বালুর স্তূপ করা হচ্ছে। প্রতিনিয়ত পদ্মার মাঝ থেকে ড্রেজার দিয়ে বালু কেটে বাল্কহেডের মাধ্যমে নদীর তীর আনা হচ্ছে। এতে হুমকির মুখে পড়েছে নদী তীরবর্তী বাড়িঘর ও ফসলি জমি।
জানা যায়, হাবাসপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও বিএনপির প্রভাবশালী নেতা লতিফ খাঁর নেতৃত্বে চলেছে এই বালু উত্তোলন। আর এই অবৈধ কাজের দেখভাল করেন স্থানীয় জিয়া মণ্ডল, লেবু খাঁ ও মজনুসহ ২০-৩০ জন।
জিয়া, লেবু ও মজনু নদীর ভেতর নৌকা নিয়ে পাহারা দেয়। বাকিরা বেড়িবাঁধের পাশে বালু চাতালের পাশে থাকে নিরাপত্তায়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় একাধিক ব্যক্তির দাবি, আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকে বিএনপির লোকজন এই বালু উত্তোলন করছে। তাদের এই বালুর স্তূপের জন্য আমাদের বাড়ি, ফসলি জমির ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। তাদের কেউ কিছু বলে সাহস পাচ্ছে না। সবাই অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী।
প্রায় সবার নামেই একাধিক হত্যা, চাঁদাবাজি মামলা রয়েছে। শুধু বালু উত্তোলনই নয়, তারা এখন বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করছে।
বিএনপি নেতা ও হাবাসপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান লতিফ খাঁর সঙ্গে কথা হলে তিনি দাবি করেন, তারা বৈধভাবেই বালু কাটছেন। গত ৫ আগস্টের পরে তার এক আত্নীয় মন্ত্রণালয় থেকে বালু উত্তোলনের পাস এনে দিয়েছেন বলে জানান তিনি। সাংবাদিকরা সেখানে গেলে ছবি তুললে ক্যামেরা কেড়ে নেওয়া ও হুমকি দেওয়া হচ্ছে কেনো? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘আপনারা ওখানে কেনো যাবেন? আমরা দীর্ঘ ১৬ বছর কিছু করতে পারিনি। এ বিষয়ে পাংশা অস্থায়ী ক্যাম্পের সেনা কর্মকর্তা নুরুজ্জামানের সঙ্গে ফোনে কথা হলে তিনি বলেন, ‘আমরা লতিফ খাঁকে ক্যাম্পে ডেকে এনে বালু উত্তোলন বন্ধ করতে বলেছি। তিনি আমাদের কাছে স্বীকার করেছেন আর বালু উত্তোলন করবেন না।
বালু উত্তোলন করলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। পাংশা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাফর সাদিক চৌধুরী বলেন, ‘পাংশা উপজেলার মধ্যে কোনও বালুমহাল নেই। হাবাসপুর পদ্মা নদী থেকে যারা বালু উত্তোলন করছে তারা তা অবৈধভাবে করছে। আমি সেনাবাহিনীকে অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে ব্যবস্থা নিতে বলেছি।’