ফরিদপুরের দু’ভাইয়ের দুই হাজার কোটি টাকার দুর্নীতির মামলার আসামি জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সহ-সভাপতি ও সদর উপজেলা চেয়ারম্যান খন্দকার মোহতেশাম হোসেন বাবর আদালতের হাজতখানায় অসুস্থ হয়ে পড়েছে বলে জানা গেছে। এরপর তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে পুলিশ পাহাড়ায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়েছে।
অসুস্থ হওয়ার বিষয়ে মহানগর দায়রা জজ আদালতের হাজত খানার ইনচার্জ সাব-ইন্সপেক্টর সাদিকুল ইসলাম বলেন, ‘রুবেল-বরকতের অর্থপাচার মামলার শুনানির দিন আজ (গতকাল বুধবার)। এজন্য সকাল ৯টায় কেরানীগঞ্জ জেলখানা থেকে অন্য আসামিদের সঙ্গে এ মামলার আসামি বাবর আদালতে আনা হয়। এরপর তাদের আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়। এর কিছুক্ষণ পর তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে প্রথমে তাকে ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে পুলিশ পাহারায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।’
এস আই মো. সাদেকুর জানান, অসুস্থ হওয়ার পর প্রাথমিকভাবে খন্দকার মোহতেশাম হোসেন বাবরের বøাড পেশার মাপা হয়। পরে যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
অন্যদিকে এ মামলায় গত ২৫ জুন অধিকতর তদন্তে আরও ৩৬ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে দাখিলকৃত সম্পূরক চার্জশিটের বিষয়ে শুনানি হয়েছে। ঢাকার ৯ নম্বর বিশেষ জজ বিচারক শেখ হাফিজুর রহমান এ শুনানি গ্রহণ করেন। এরপর তিনি এ বিষয়ে আইনানুগ আদেশ হতে বলে জানিয়েছেন।
এ মামলায় ফরিদপুর শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক (বহিস্কৃত) মো. সাজ্জাদ হোসেন মÐল ওরফে সাজ্জাদ হোসেন বরকত ও ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি (বহিস্কৃত) ইমতিয়াজ হাসান রুবেল (৪৫) সহোদরসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে প্রথম চার্জশিট দাখিল হয়।
মামলাটির অধিকতর তদন্তে আরও ৩৬ জনকে অভিযুক্ত করে আদালকে সম্পূরক চার্জশিট দাখিল করে পুলিশ। প্রথম চার্জশিটের অপর ৮ আসামি হলেন- ফরিদপুর শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি খন্দকার নাজমুল হাসান লেভী ও শহর যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসিবুর রহমান ফারহান, এএইচ এম ফুয়াদ, ফাহাদ বিন ওয়াজেদ ফাহীন ওরফে ফাহিম, কামরুল হাসান ডেবিট, মোহাম্মাদ আলী ওরফে মিনার, তারিকুল ইসলাম নাছিম ও সাবেক মন্ত্রী খন্দকার মোশারফ হোসেনর ভাই খন্দকার মোহতেশাম হোসেন ওরফে বাবর।
সম্পূরক চার্জশিটের নতুন আসামিরা হলেন- নিশান মাহমুদ ওরফে শামীম, মো. বিল্লাল হোসেন, মো. সিদ্দিকুর রহমান ওরফে সিদ্দিক, মো. সাইফুল ইসলাম জীবন, অনিমেশ রায়, সামচুল আলম চৌধুরী, দিপক মজুমদার, শেখ মাহতাব আলী মেথু, সত্যজিত মুখার্জি, মো. সহীদুল ইসলাম ওরফে মজনু, ফকির মো. বেলায়েত হোসেন, গোলাম মো. নাসির, মো. জামাল আহমেদ ওরফে জামাল, বেলায়েত মোল্লা, মো. আফজাল হোসেন খান ওরফে শিপলু, অমিতাভ বোস, চৌধুরী মো. হাসান, মো. জাফর ইকবাল ওরফে হারুন মন্ডল, আসামি বরকতের স্ত্রী আফরোজা পারভীন, আসামি রুবেলের স্ত্রী সোহেলী ইমরোজ পুনম, সাহেব সারোয়ার, সাজ্জাদ হুসাইন বাবু, স্বপন কুমার পাল, মো. জাহিদ ব্যাপরী, খলিফা কামাল, মো. নাজিমুল হোসেন ওরফে তাপস, রিয়াজ আহমেদ শান্ত, আনোয়ার হোসেন আবু, মোহাম্মাদ মানরুজ্জামান ওরফে মনিরুজ্জামান মামুন, মাফুজুর রহমান মামুন, সুমন সাহা, মো. আব্দুল জলিল শেখ ওরফে জলিল, মো. রফিক মÐল, মো. আজমল হোসেন খান ওরফে ছোট আজম, খন্দকার শাহীন আহমেদ ওরফে পান শাহীন ও মোহাম্মাদ আরিফুর রহমান ওরফে দোলন।
আসামিদের মধ্যে রুবেল, বরকত, নিশান মাহমুদ ওরফে শামীম, মো. বিল্লাল হোসেন, মাফুজুর রহমান মামুন, সুমন সাহা, মো. আব্দুল জলিল সেখ ওরফে জলিল ও মো. রফিক মÐল গ্রেপ্তার হয়েছেন। বর্তমানে গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন আসামি সাজ্জাদ হোসেন বরকত, ইমতিয়াজ হাসান রুবেল, ফোয়াদ ও বাবর।