২০১৫ সালে নির্বাচনী প্রচারণার সময় বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার গাড়িবহরে হামলার অভিযোগে চিত্রনায়ক ও আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক উপ-কমিটির নেতা জায়েদ খান, অভিনেতা শাহরিয়ার নাজিম জয়সহ ৫০ জনের নামে মামলা করা হয়েছে। গত রোববার ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জাকী আল ফারাবীর আদালতে মো. শাহরিয়ার ইমাম আসিপ বাদী হয়ে এ মামলাটির আবেদন করেন। তিনি ব্যান্ড সংগীত শিল্পী বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে অভিযোগটি মতিঝিল থানা পুলিশকে এজাহার হিসেবে গ্রহণ করার নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলায় উল্লেখযোগ্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন- আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য, সাবেক মন্ত্রী ও গোপালগঞ্জ-১ ও গোপালগঞ্জ-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মুহাম্মাদ ফারুক খান, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ সেলিম, যুবলীগ নেতা মজিবুর রহমান নিক্সন চৌধুরী, সাবেক সংসদ সদস্য শেখ হেলাল, সাবেক সংসদ সদস্য ও মন্ত্রী মায়া চৌধুরী, সাবেক সংসদ সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরী, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ফজলে নূর তাপস, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাসদ নেতা হাসানুল হক ইনু, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সাঈদ খোকন, বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন, সাংবাদিক শাবান মাহমুদ, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ নেতা আবু আহম্মেদ মন্নাফী, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহে আলম মুরাদ, অভিনেতা সাজু খাদেম।
আসামিদের মধ্যে আরও আছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৯নং ওয়ার্ডের সাবেক কমিশনার একেএম মমিনুল হক সাঈদ, জাসদ নেতা আতিকুর রহমান সবুজ, আওয়ামী লীগ নেতা এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম, মতিঝিল থানা জাসদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমান মুন্না, ঢাকা দক্ষিণ আওয়ামী লীগের ১০নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা নওশের আলী, আওয়ামী লীগ নেতা কামাল আহম্মেদ, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১৩নং ওয়ার্ডের সাবেক কমিশনার মোস্তফা জামান পপি, মতিঝিল ৯নং ওয়ার্ড যুবলীগের সহ-সভাপতি নুর হোসেন নুরু, মতিঝিল থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি আব্দুল মান্নান, মতিঝিল থানা ছাত্রলীগ সভাপতি খায়রুল, মতিঝিল ৯নং ওয়ার্ড যুবলীগের সহ-সভাপতি সাহেব আলী, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১০নং ওয়ার্ডের সাবেক কমিশনার মারুফ আহম্মেদ মনছুর, একই ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগ নেতা ফারুক আহম্মেদ (কানা ফারুক), মতিঝিল থানার জাসদ নেতা ইকবাল হোসেন।
আরো আছেন মতিঝিল থানা সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মাওলা রিপন, শাহবাগের যুবলীগ নেতা সাইফুল ইসলাম আক্তার, মতিঝিল এলাকার স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আমির হোসেন আমির, জামাল দেওয়ান, একই এলাকার জাসদ নেতা আব্দুল্লাহ আল মামুন, যুবলীগ নেতা হাসান উদ্দিন জামাল, ছাত্রলীগ নেতা আকাশ, আওয়ামী লীগের নাসির উদ্দিন মল্লিক পিন্টু, মহানগর হকার্স সমিতির সভাপতি মান্নান, যুবলীগ পল্টন থানার মো. বিটু, জাসদ ছাত্রলীগের মাহিন, যুবলীগ নেতা মোশারফ হোসেন, মো. সাব্বির খান, মো. মিলন মোল্লা, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের জাসদ নেত্রী ডালিয়া রহমান, সাম্যবাদী দল সবুজবাগ থানার সভাপতি আসাদ জামান, জাসদ নেতা হেলাল হিমেল ফরাজী, পল্টনের আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল্লাহ।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, ২০১৫ সালের ২০ এপ্রিল নির্বাচনি প্রচারণার সময় বিএনপি কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত পথসভায় বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে হত্যার উদ্দেশ্যে আসামিরা অস্ত্রসহ তার গাড়িবহরে হামলা চালান। এসময় তারা খালেদা জিয়ার গাড়িবহরের ১২ থেকে ১৪টি গাড়ি ভাঙচুর করে, ৪টি মোটরসাইকেলে আগুন দেয় এবং নেতাকর্মীদের মারধর করেন। হামলায় খালেদা জিয়ার নিরাপত্তারক্ষীরা আহত হন।
অভিযোগে আরও বলা হয়, খালেদা জিয়াকে লক্ষ্য করে আসামিরা ইট-পাথর নিক্ষেপ করলে সাধারণ পথচারীরা আহত হয়। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট এবং এর অঙ্গ সংগঠনগুলোর ২০০ থেকে ৩০০ নেতাকর্মী দেশি অস্ত্র হাতে নিয়ে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। হামলার সময় আসামিরা মূল্যবান জিনিস ছিনিয়ে নেয় ও জোরপূর্বক আটকে রেখে মুক্তিপণ দাবি করে।
মামলার এজাহারে আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদনও করা হয়।