মধুখালী উপজেলার বাগাট ইউনিয়নের মধুমতি নদীর গোমারা, মিটাইন গ্রামের অংশে নদীর চরে ও নদীর পাড়ে বিষাক্ত সাপের উৎপাত বেড়ে চলছে। সাপের কামড়ের আতংকে মিটাইন ও গোমারা গ্রাম সহ আরও কয়েকটি গ্রামের মানুষের ঘুম নেই। গত ১০ দিনের ব্যবধানে দুইজন মৃত্যুবরণ করছে এবং পাশের গ্রামে একজন আক্রান্ত হয়েছে।
গত পহেলা জুন হাকিম মন্ডল নিজের জমিতে ঘাস কাটার সময় বিষধর সাপে কামড় দিলে কিছুক্ষণ পরেই মারা যায়। যাহার শোক না কাটতেই মোঃ রবিউল সেখ তার জমিতে বাদাম উত্তোলন করতে গিয়ে বিষধর সাপের কামড়ে মারা যায়। এই ঘটনার পর থেকে দুই গ্রামের মানুষের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে, দুই গ্রামের মানুষ ফসলের মাঠে কাজ করা তো দূরের কথা ঘরে ঘুমাতেও আতঙ্ক বোধ করছে। ফসলের মাঠে গাছের ডালে পুরাতন ভিটায় বাড়ির আঙ্গিনায় সব জায়গাতেই সব বিষধর সাপ দেখা যাচ্ছে। বিষধর সাপের কামড়ে মৃত দুজন ব্যক্তির ভাষ্য অনুযায়ী সাপটি হালকা হলুদ সাদা ও কালো রঙের লম্বা দুই থেকে তিন ফুট এলাকাবাসীর ধারণা যেহেতু এটি চর অঞ্চল রাসেল ভাইপার সাপে কামড় দিয়েছে বলে মনে করছে।
মধুমতি নদীর চরের গোমারা মিটাইন অংশে প্রায় ১০০ একরের বেশি জমিতে পাট ক্ষেত রয়েছে, নদীর পাড়ের অংশের জমিতে মরিচ, ঘাস, অন্যান্য ফসল উৎপাদন হচ্ছে, সাপের আতঙ্কের কারনে এলাকাবাসী ফসলের পরিচর্যা করতে পারছে না যাহার কারণে এলাকাবাসী ফসল উৎপাদন করতে না পারলে অর্থনৈতিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশংকা দেখা যাচ্ছে।
জানা যায়, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স অ্যান্টিভেনম থাকার কথা কিন্তু মধুখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স অ্যান্টিভেনম নেই। দুইটা আক্রান্ত ব্যাক্তিই ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল কলেজ নেওয়ার পথেই মারা গেছে।
তারই ধারা বাহিকতায় ফসলের আবাদ ও ফসল উঠানোর কথা চিন্তা করে সাপ ধরার জন্য পাশ্ববর্তী মাগুরা জেলার মুহাম্মাদপুর উপজেলার গঙ্গারামপুর গ্রাম থেকে সাপুড়ে ফারুক হোসেন ও শিষ্য ওহাব হোসেন এসে গতকাল শনিবার সকালে ৪টি বিভিন্ন জাতের বিষধর সাপ ও একটি দাড়াস সাপ গর্ত থেকে ধরে। এই ধরা দেখে মানুষের ঢল নেমে আসে। সাপুড়ে ফারুক হোসেন বলেন, এই নদীর চরে পাট ও বাদামের ক্ষেতে অনেক জাতের বিষধর সাপ আছে যা আমার একার পক্ষে ধরা কষ্টসাধ্য। মধুখালী উপজেলার বাগাট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান খাঁন সহ উপজেলা নির্বাহী অফিসার, উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা, উপজেলা কৃষি অফিসার, বন বিভাগ ফরিদপুর, সিভিল সার্জন এবং জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপ চেয়েছে মিটাইন ও গোমারা গ্রামবাসী।