তীব্র গরমে পুড়ছে সারাদেশ। ফরিদপুরে প্রতিনিয়তই তাপমাত্রা বাড়ছে। ৪০ ডিগ্রী ছুঁই ছুঁই তাপমাত্রায় পুড়ছে মানুষ, সবুজ প্রকৃতি, ফসল, আলু, আম—লিচুসহ শাকসবজির ক্ষেত। রুক্ষ আবহাওয়ায় গাছের পাতাও যেন নড়ছে না। সকালের সূর্য উদয় হচ্ছে আগুনের হলকা নিয়ে। দশটার মধ্যেই উত্তপ্ত হচ্ছে আবহাওয়া। সময় যত গড়াই তাপদাহ ততই বাড়তে থাকে। এর সাথে মরা পদ্মা ও কুমার নদের বিশাল বালিচর হচ্ছে তপ্ত কড়াই। সেখান থেকে ভেসে আসছে তপ্ত বালি। যা চোখে মুখে জ্বালা ধরাচ্ছে। সবচেয়ে বেকায়দায় পড়েছে টিনের চালার ঘরের বসবাসকারী মানুষ। তাপ যেন টিনের চুইয়ে নীচে নামছে। ফলে ঘরে থাকাও দায় হয়ে পড়েছে। বড় বড় দালাকোঠা ছাদের উপরের পানির ট্যাঙ্কিও ফুটন্ত পানির আধারে পরিণত হচ্ছে। প্রচন্ড গরমে হাঁসফাঁস করছে মানুষ, পশু পাখি।
একটু স্বস্তি মিলছে না কোথাও। সবাই চেয়ে আছে আল্লাহর রহমতের বৃষ্টির দিকে। ফরিদপুর আবহাওয়া অফিস বলছে, ফরিদপুরে গত পাঁচ বছরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড করা হয়েছে। ফরিদপুর জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪০ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা গত পাঁচ বছরের জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড বলে জানিয়েছেন ফরিদপুর আবহাওয়া অফিস। এখন তীব্র তাপপ্রবাহ বইছে এ অঞ্চলের উপর। ফলে বৃষ্টির জন্য হাহাকার পড়ে গেছে এ এলাকায়। কয়েক দিনের টানা দাবদাহে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। এদিকে প্রকৃতিও যেন নিরব হয়ে গেছে।
দিনের বেলায় দূরে থাক রাতেও গাছের পাতাও নড়ছেনা। বাতাসের আদ্রতা বেশি থাকায় মাথার ওপরে ফ্যানটাও দিচ্ছে গরম বাতাস। কয়েকদিন ধরেই ফরিদপুরের আবহাওয়ার আর তেমন কোনো হেরফের হচ্ছে না। এদিকে তীব্র দাবদাহের কারণে ফরিদপুরের বিভিন্ন হাসাপাতালে বেড়েছে ডায়রিয়াসহ নানা রোগ—বালাইয়ে আক্রান্ত রোগীদের সংখ্যা। বেডে ফ্লোরে সবখানেই গরমজনিত কারণে রোগী আর রোগী। একদিকে গরমজনিত রোগীর চিকিৎসা দিতেও হিমশিম খেতে হচ্ছে চিকিৎসকদের। এতে ঘরে ঘরে আবার ডায়রিয়া, হিটস্ট্রোক, হিস্টিরিয়া, জ্বর, সর্দি—কাশিসহ বিভিন্ন উপসর্গে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে।
এসব রোগে বৃদ্ধ—বৃদ্ধা ও শিশুরাই বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। পাশাপাশি উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্তদের দূর্ভোগ বেড়েছে এ তীব্র গরমে। তাই এ সময় বয়োবৃদ্ধ ও শিশুদের রোদে না বের হয়ে ঠাণ্ডা পরিবেশের মধ্যে থাকার জন্য বলছেন চিকিৎসকেরা। এছাড়া বিশুদ্ধ পানি,খাবার স্যালাইন, ডাব ও দেশি ফলমূল, শাকসবজি বেশি খাওয়ার পরামর্শ দেন। এদিকে, ফরিদপুর আবহাওয়া কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম বাঙ্গালী খবরকে বলেন, এমন তীব্র তাপপ্রবাহ আরও কয়েকদিন থাকতে পারে। তবে, বৃষ্টি নামলে তাপমাত্রা কমে আসতে পারে। এছাড়া বর্তমানে রাতে তাপমাত্রা তুলনামূলক কমছে না। ফলে রাতেও অত্যধিক গরম অনুভূত হচ্ছে।