আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপের যাচাই-বাছাইতে ফরিদপুরে তিনটি উপজেলায় তিনজন চেয়ারম্যান প্রার্থীর মনোনয়ন পত্র বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে। তাদের মধ্যে দুইজনের নামে বাংলাদেশ ব্যাংকের সিআরবি রিপোর্ট অনুযায়ী ঋণখেলাপী ও একজনের স্ত্রীর নামে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান রয়েছে।
গতকাল বুধবার বিকালে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা নির্বাচন অফিসার তারেক আহমেদ। এর আগে সকাল সাড়ে ১০টায় তিনটি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থীদের যাচাই-বাছাই করা হয়। যাচাই-বাছাই শেষে তিন প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল করা হয়।
জেলা নির্বাচন অফিস সুত্রে জানা যায়, ফরিদপুর সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন দাখিল করেছিলেন মনিরুল হাসান মিঠু। বাংলাদেশ ব্যাংকের সিআরবি রিপোর্টে তার নামে ঋণখেলাপী রয়েছে। তিনি ন্যাশনাল ব্যাংকের ফরিদপুর শাখায় ঋণগ্রস্ত রয়েছেন। এছাড়া ঋণখেলাপীর দায়ে চরভদ্রাসন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী মোঃ ফয়সাল হাসানের মনোনয়ন পত্র বাতিল হয়েছে। সে এক্সিম ব্যাংক লিমিটেড ও রুপালী ব্যাংক লিমিটেডের ফরিদপুর শাখায় ঋণগ্রস্থ রয়েছে। এসব কারনে এ দুজনের মনোনয়ন পত্র অবৈধ ঘোষণা করা হয়।
অপরদিকে মধুখালী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী ও বর্তমান পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ শহিদুল ইসলামের মনোনয়ন পত্র বাতিল হয়েছে। তার পরিবারের সদস্যের নামে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান থাকায় মনোনয়ন পত্র অবৈধ ঘোষণা করা হয়।
জানা যায়, তার স্ত্রীর ‘শহিদুল কনস্ট্রাকশন’ নামে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান রয়েছে। যার নিয়ন্ত্রণ করেন শহিদুল ইসলাম নিজেই। উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হওয়ায় ক্ষমতার অপব্যবহার করেও ঠিকাদারী কাজ নিয়ে থাকেন। উপজেলা পরিষদ আইন, ১৯৯৮ ( ১৯৯৮ সনের ২৪ নং আইন ) এর ৮(ঝ)দফাতে উল্লেখ করা আছে, তাহার (প্রার্থীর) পরিবারের কোন সদস্য সংশ্লিষ্ট উপজেলার কার্য সম্পাদনে বা মালামাল সরবরাহের জন্য ঠিকাদার নিযুক্ত হন বা ইহার জন্য নিযুক্ত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের অংশীদার হন বা উপজেলার কোন বিষয়ে তাঁহার কোন প্রকার আর্থিক স্বার্থ থাকে; তাহলে তার প্রার্থীতা অযোগ্য বলে বিবেচিত হবে।
ব্যাখ্যায় উল্লেখ করা আছে, দফা (ঝ) এর উদ্দেশ্য সাধনকল্পে ‘‘পরিবার’’ অর্থে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির উপর নির্ভরশীল তাহার পিতা, মাতা, ভাই, বোন, স্ত্রী, পুত্র ও কন্যাকে বুঝাইবে। জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা নির্বাচন অফিসার তারেক আহমেদ বলেন, ঋণখেলাপী থাকায় দুইজন এবং ঠিকদার প্রতিষ্ঠান থাকায় অপর একজনের মনোনয়ন পত্র অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। উপজেলা পরিষদ নির্বাচন আইন অনুযায়ী, মধুখালীর মোঃ শহিদুল ইসলামের স্ত্রীর নামে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান থাকায় প্রার্থীতা বাতিল করা হয়েছে।
তাদের নির্বাচন কমিশনে আপিল করার সুযোগ আছে। প্রসঙ্গত, আগামী ৯ই মে ফরিদপুর সদর, চরভদ্রাসন ও মধুখালী উপজেলা পরিষদ নির্বাচন উপলক্ষে গত ১৫ই এপ্রিল মনোনয়ন পত্র দাখিলের শেষ দিন পর্যন্ত চেয়ারম্যান পদে ১৯ জন মনোনয়ন পত্র দাখিল করেন। এছাড়া ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১৬ জন এবং সংরক্ষিত মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৮ জন মনোনয়ন পত্র দাখিল করেন।