বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি মানব পাচার—প্রবণ ১০টি জেলার মধ্যে ফরিদপুরের অবস্থান চতুর্থ। অন্য জেলাগুলো হলো— ঢাকা, মানিকগঞ্জ, নরসিংদী, শরিয়তপুর, যশোর, খুলনা, সাতক্ষীরা, কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম। সুইজারল্যান্ড ভিত্তিক দাতব্য সংস্থা উইনরকের সহায়তায় ৭টি সহযোগী সংগঠনের মাধ্যমে গৃহিত ‘আশ্বাস—মানব পাচার থেকে উদ্ধার প্রাপ্ত নারী—পুরুষদের জন্য’ শীর্ষক প্রকল্পে মানবপাচারের শিকার হয়ে জীবিত অবস্থায় ফিরে আসা ৬ হাজার মানুষকে সামাজিক ও অর্থনৈতিক পরিষেবা দেয়া হবে। যাদের ৬৫ ভাগই নারী। আর ঝুঁকিপূর্ণ সম্প্রদায়ের ২ লাখ পুরুষ ও নারী মানবপাচার এবং সংশ্লিষ্ট কারণ সম্পর্কে সচেতন করা হবে।
বুধবার (২০ মার্চ) দুপুরে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে বেসরকারি সংস্থা শরিয়তপুর ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন এসডিএসের উদ্যোগে আয়োজিত এক অবহিতকরণ সভায় এ তথ্য জানানো হয়। এসডিএসের নির্বাহী পরিচালক রাবেয়া বেগমের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো: ইয়াছীন কবির। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকী ও জেলা লিগ্যাল এইড অফিসার কাঞ্চন কুমার কুন্ডু। আশ্বাস প্রকল্পের সিনিয়র ম্যানেজার নাজমূল হকের সঞ্চালনায় সভায় শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন আশ্বাস প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক দিপ্তা রক্ষিত। অন্যান্যদের মধ্যে ফরিদপুর কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের অধ্যক্ষ আক্তারুজ্জামান, এসডিএস পরিচালক বিএম কামরুল হাসান বাদল, প্রকল্প ব্যবস্থাপক এস.এম. জাকিরসহ প্রকল্পের সাইকোসোশাল কাউন্সিলর, বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধি ও সাংবাদিকেরা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক বলেন, বিশ্বের ২০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশে মানব পাচারের অবস্থা ভয়াবহ। অনেকেই বুঝতে চান না যে তারা মানব পাচারের শিকার। আবার অনেকে জেনে—বুঝেও এপথে পা বাড়ান। সভাপতির বক্তব্যে এসডিএসের নির্বাহী পরিচালক রাবেয়া বেগম বলেন, ফরিদপুর জেলা নদীবেষ্টিত চরাঞ্চল এবং উপযুক্ত কর্মসংস্থান না থাকায় এ অঞ্চলের বেশিরভাগ মানুষ বিদেশমুখী। তারা যেন কোনো ধরনের প্রতারণা বা পাচারের শিকার না হন এবং এদেশে মর্যাদার সাথে বসবাস করতে পারেন সেই লক্ষ্যেই এ প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়। সভায় জানানো হয়, মানবপাচারের নেপথ্য দারিদ্র্য, বেকারত্ব, অভিবাসন, শিক্ষায় সীমিত অ্যাক্সেস, জলবায়ু পরিবর্তন এবং রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার মতো কারণগুলো জড়িত। ২০২৩ সালের জুনে এসডিএস এর মাধ্যমে ফরিদপুর জেলায় ৫০০ জন সারভাইভার নিয়ে এই প্রকল্পের যাত্রা শুরু হয়। যাদের ৬৫ ভাগই নারী।