মাদক নিয়ে দ্বন্ধের জেরেই ফরিদপুরে কলেজ ছাত্র আসাদুজ্জামান নূর ওরফে তুরাগকে খুন করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছেন। এমনকি খুনের পর তুরাগের ডান হাত কেটে নিয়ে তুষার নামে এক আসামী তার বোনকে উপহার দিয়েছে। তার বোনের নাম স্বপ্না। এই স্বপ্না তুরাগের কাটা হাত দেখতে চেয়েছিলো। বর্তমানে তুষার ও স্বপ্না পলাতক রয়েছে।
তুরাগ হত্যাকান্ডে জড়িত আরও তিন আসামী গ্রেপ্তার সংক্রান্ত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন পুলিশ সুপার মোঃ শাহজাহান। রোববার (১৯ নভেম্বর) দুপুর ১২ টায় জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে রয়েছে, জেলা সদরের অম্বিকাপুর গ্রামের নুরুল ইসলামের পুত্র রাজন ওরফে কালা রাজন (২৬) ও তার ছোট ভাই সাজন (২৪) এবং পশ্চিম ভাষাণচরের আব্দুুল ছালামের পুত্র জুয়েল শেখ (৩৮)।
শনিবার দিবাগত রাতে রাজবাড়ী ও গাজীপুর জেলায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে ফরিদপুর কোতয়ালী থানা পুলিশ। এ সময় হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত দুটি রামদা উদ্ধার করা হয়।
সংবাদ সম্মলনে পুলিশ সুপার বলেন, মাদক ব্যবসাকে কেন্দ্র করে আসামী কানা তুষার এবং তার সহযোগীদের সাথে তুরাগের বিরোধ ও মামলা চলে আসছিলো। গত জানুয়ারিতে কবি জসিম মেলার সময় আসামী তুষার তুরাগকে ৪১ হাজার টাকা দেয় গাঁজা কেনার জন্য কিন্তু তুরাগ টাকার কথা অস্বীকার করে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে তুষার তুরাগকে মারার হুমকি দেয়। তাতে তুরাগ ক্ষিপ্ত হয়ে তুষারকে এলোপাতারি কোপায়। ঘটনার কিছুদিন পর তুরাগকে হত্যার পরিকল্পনা করে তুষার। এর জেরে তুরাগকে নির্মমভাবে হত্যা করে তুষার ও তার সহযোগীরা।
হাত কেটে নেয়ার বিষয়ে পুলিশ সুপার বলেন, হাত কেটে নিয়েছিলো কারন, এই হাত দিয়ে তুরাগ তুষারকে মেরেছিলো। হাত-পা কেটে শুধু ক্ষ্যান্ত হয়নি, হাত কেটে সে আলীপুরে নিয়ে আসে। সেখানে এসে বিভিন্নজনকে দেখিয়েছে যে, তুরাগের হাত কোটে নিয়ে এসেছে। পাশাপাশি তদন্তে আমরা পেয়েছি, তুষার তার আরও এক সহযোগিকে হাত দেখিয়েছে। পরে তুষারের বোনের কাছে হাত পাঠায়। একারনেই যে, তুষারকে যখন তুরাগ মেরেছিলো তখন তুষারের বোন স্বপ্না বলেছিলো, আমার ভাইকে যে মেরেছে তার হাতটি আমি চাই। আমরা সেই হাতটি এখনও উদ্ধার করতে পারিনি। তাদের গ্রেপ্তার করলে হয়তো হাতটি উদ্ধার করা যাবে।
এর আগে গত ৬ নভেম্বর র্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হয় টিপু খা নামে এক আসামী। এছাড়া গেল মাসের ১৭ই অক্টোবর আক্কাস জমাদ্দার নামে অপর এক আসামীকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গত ১১ই অক্টোবর জেলা সদরের অম্বিকাপুর ইউনিয়নের ধুলদি গোবিন্দপুরের একটি মেহেগুনি বাগান থেকে তুরাগের হাত কাটা ও ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় তার পিতা বাদী হয়ে কোতয়ালী থানায় ৭ জনের নাম উল্লেখ করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।