1. kazi.rana10@gmail.com : Sohel Rana : Sohel Rana
  2. jmitsolution24@gmail.com : support :
শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৪:০২ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
মুকসুদপুরে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করাকে কেন্দ্র করে দুগ্রুপের সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ৫ নগরকান্দায় সাংবাদিকদের সাথে নবাগত ওসির মতবিনিময় স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা খুন” গোপালগঞ্জে শেখ সেলিম-কানতারা খানসহ ১১৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা সালথায় কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে পেঁয়াজ বীজ ও সার বিতরণ সালথা উপজেলা পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক বাবু অনন্ত বিশ্বাস ফরিদপুরে কোটি টাকা নিয়ে লাপাত্তা ব্যাংকের এজেন্ট মালিক ফরিদপুরে তরুণীকে উত্ত্যক্ত, প্রতিবাদ করায় দুই যুবককে গুলি ফরিদপুরে বাসের হেলপার সাদ্দামকে হত্যার দায়ে পাঁচজনের যাবজ্জীবন বিগত তিন জাতীয় নির্বাচনের সিইসিদের বিরুদ্ধে মামলা আওয়ামী লীগের মতো করলে একই দশা আমাদেরও হবে: মির্জা ফখরুল

সালথায় জেলেদের জন্য বরাদ্দের অধিকাংশ টাকা ভাগাভাগি

স্টাফ রিপোর্টার 
  • Update Time : রবিবার, ১ অক্টোবর, ২০২৩
  • ৬৬৭ Time View
সালথায় জেলেদের মাঝে বিতরণকৃত ছাগল ও ঘর। - বাঙ্গালী খবর

ফরিদপুরের সালথায় ২০২২-২৩ অর্থ বছরে নিবন্ধিত জেলেদের মাঝে দেশীয় প্রজাতির মাছ ও শামুক সংরক্ষন উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় বিনা মূল্যে ছাগল ও মাছ বিতরণে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। নাম মাত্র কম দামি অসুস্থ ছোট ছাগল ও ছাগল পালনের জন্য নিম্নমানের ঘর বিতরণ করে বরাদ্দের বেশিরভাগ অর্থ সংশ্লিষ্টরা ভাগাভাগি করে নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে চরম অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন উপকারভোগী জেলেরা।
গত বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সকালে সালথা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো: ওয়াদুদ মাতুব্বর, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আনিছুর রহমান বালী, ফরিদপুর জেলা মৎস কর্মকর্তা প্রশান্ত কুমার সরকার ও সালথা উপজেলা মৎস কর্মকর্তা মো. শাহরিয়ার জামান সাবুর উপস্থিতিতে আনুষ্ঠানিকভাবে এসব ছাগল বিতরণ করা হয়।
এদিকে গত ১৮ সেপ্টেম্বর একই প্রকল্পে ২ লক্ষ টাকা বরাদ্দে ৬ টি জলাশয়ে ৬৬৭ কেজি মাছের পোনা অবমুক্ত করেন সালথা উপজেলা মৎস্য অফিস। যে পোনা মাছ অবমুক্ত করা হয়েছে তার প্রতি কেজি মাছের দাম ধরা হয়েছে প্রায় ৩০০ টাকা। অথচ বাজারে সেই মাছ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৫০ টাকা দরে।
অভিযোগ রয়েছে, যে ছয়টি স্পটে মাছ দেওয়ার কথা থাকলেও সালথা উপজেলা মৎস্য অফিসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সাথে ব্যক্তিগত সম্পর্ক থাকায় যাচাই-বাছাইকৃত মাছের স্পট ছাড়াও মাছ বিতরণ করেছেন। এতে জেলেদের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
এছাড়া মাছ ও ছাগল ক্রয়ের জন্য কোন প্রকার প্রচার-প্রচরণা না করে গোপনে খাতা কাগজে টেন্ডার আহব্বান করে উপজেলার এক প্রভাবশালী নেতার ছত্র-ছায়ায় থাকা ব্যক্তিদের দিয়ে এসকল কম দামি মাছ ও অসুস্থ ছাগল ক্রয় করে বরাদ্দের বেশিরভাগ অর্থ সংশ্লিষ্টরা ভাগাভাগি করে নিয়েছেন।
উপজেলা মৎস অধিদপ্তর সুত্র জানা গেছে, চলতি অর্থ বছরে নিবন্ধিত জেলেদের পুনর্বাসন প্রকল্পে বিকল্প কর্মসুচির আওতায় জন্য ৪ লাখ ৪ হাজার ৯০০ টাকা বরাদ্দ আসে। নিয়মানুযায়ী বরাদ্দের এই টাকা দিয়ে ২০ জন নিবন্ধিত জেলেকে ২টি করে ছাগল ও ছাগল পালনের একটি ঘর দেওয়া কথা। তাতে প্রত্যেক জেলের জন্য ২০ হাজার টাকার বেশি বরাদ্দ ধরা হয়েছে।
গত বুধবার ছাগল বিতরণকালে দেখা যায়, প্রত্যেক জেলেকে অসুস্থ্য কম বয়সী ২টি করে ছাগলের বাচ্চা ও ছাগল পালনের জন্য ছোট একটি করে ঘর দেওয়া হচ্ছে। সেই সাথে ১০ কেজি করে ছাগলের খাবারও দেওয়া হচ্ছে।
এ সময় উপকাভোগীরা অভিযোগ করে বলেন, ঘরগুলো দেখতে হাঁস-মুরগির আবাসনের জন্য তৈরি ঘরের মতো। ছাগলগুলোও কম দামি। সব মিলিয়ে প্রত্যেক জেলেকে ৭ থেকে ৮ হাজার টাকার মধ্যে ছাগল, ঘর ও খাবার দেওয়া হয়েছে। তাহলে বরাদ্দে বাকি টাকা কোথায় গেল সেই প্রশ্নও করেন তারা।
উপজেলার ভাওয়াল গ্রামের জেলে উপকারভোগী সুজন মালো বলেন, আমাকে যেই ২টি ছাগল দেওয়া হয়েছে তার দাম সবোর্চ্চ ৫ হাজার টাকা হবে। আবার ছাগল পালনের জন্য যে ঘরটি পেয়েছি তা তৈরি করতে সবোর্চ্চ খরচ হতে পারে ১৫০০ টাকা। সাথে দিয়েছিল ছাগলের খাবার ১০ কেজি গমের ভূষি। যার দাম ৫০০ টাকা । সব মিলিয়ে ৭ হাজার টাকা মূল্যের জিনিস দিয়েছে।
পলাশ মালো বলেন, প্রত্যেক জেলের জন্য কত টাকা বরাদ্দ তা আমাদের জানানো হয়নি। ছাগলসহ হয়তো ৬ থেকে ৭ হাজার টাকার মূল্যের জিনিস পেয়েছি।
তিনি আরও বলেন, আমাদের ভাওয়াল জেলে পল্লীতে ৫ জন জেলেকে ছাগল দেওয়া হয়েছে। সব কয়টি ছাগলই অসুস্থ্য হয়ে পড়েছে। কয়টা বাঁচে কয়টা মরে বলা যায় না। ছাগলগুলো আরো বড় দিলে ভাল হতো।
সুরেশ মালো নামে আরেক জেলে বলেন, গত বছর আমাদের জেলে পল্লীতে যেসব ছাগল দেওয়া হয়েছিল তার বেশিরভাগ ছাগলই মারা গেয়েছিল। এবার সেই একই ধরণের অসুস্থ্য ছাগলদেওয়া হয়েছে। এতে আমাদের কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ পূরণ হওয়া তো দূরের কথা আরও বাড়তি ঝামেলা পোহাতে হবে। কখন ছাগলগুরো মরে যাবে সেই চিন্তায় আছি।
জানা যায়, বরাদ্দে ৪ লাখ ৪৯০০ টাকা মধ্যে সর্বোচ্চ ১ লাখ ৬০ হাজার টাকার ছাগল, ঘর ও খাবার বিতরণ করা হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে বাকি ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা উপজেলা মৎস কর্মকর্তা, ছাগল ও ঘর সরবরাহকারী ও একজন প্রভাবশালী নেতা সিন্ডিকেট করে ভাগাভাগি করে নিয়েছেন।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে সালথা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. শাহরিয়ার জামান সাবু বলেন, কাজ করতে গেলে শতভাগ কাজ করা যায় না, কম বেশি একটু এদিক সেদিক করা লাগে। তবে প্রতিটি ছাগল ৭ কেজি ওজনের উপরে কেনার কথা। আমরা দরপত্র আহ্বান করে ঠিকাদারের মাধ্যমে ৭ থেকে ৯ কেজি ওজনের প্রতিটি ছাগল ক্রয় করেছি। যার প্রতিটি ছাগলের মূল্য সর্বনিম্ন ৫ হাজার টাকা। ঘরও নিয়মানুযায়ী দেওয়া হয়েছে। ছাগলের খাবার দেওয়ার কথা না থাকলেও আমরা ১০ কেজি করে খাবার দিয়েছি।
অসুস্থ্য ছাগল বিতরণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, গত বছর বেশ কিছু ছাগল মারা গিয়েছিল। তাই এবার ছাগলগুলো বিতরণের আগে ভ্যাকসিন পুশ করে দিয়েছি। ওষুধও খাওয়ানো হয়েছে। তারপরেও অনেকে অনেক কথা বলছে। তবে ছাগল ও ঘর বিতরণে কোনো ধরণের অনিয়ম হয়নি।
ফরিদপুর জেলা মৎস কর্মকর্তা প্রশান্ত কুমার সরকার বলেন, আমরা মাছ দেওয়ার জন্য যে ৬ টি স্পট নির্বাচন করেছি, এর বাহিরে মাছ বিতরণ সুযোগ নেই। যদি কেউ সেটা করে থাকে, আমরা তদন্ত করে ব্যবস্থা নিব। তিনি আরো বলেন, টেন্ডারের মাধ্যমে মাছ ও ছাগল ক্রয় করা হয়েছে। তবে টেন্ডারের বিষয়টি প্রচার-প্রচারণা করেছি কিনা আমার জানা নেই, আমি জেনে আপনাকে জানাব।
সালথা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আনিছুর রহমান বালী বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। ছাগলগুলো যারা পেয়েছে, তারা যদি অভিযোগ করে তাহলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

 

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2023
Developed By : JM IT SOLUTION