গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর উপজেলায় শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস–২০২৫ যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে পালিত হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে শহিদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে শ্রদ্ধা নিবেদন, আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়।
রবিবার (১৪ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় মুকসুদপুর শহিদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ আবুল হাসনাত। পরে মুকসুদপুর থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল্লাহ আল মামুনও ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। সরকারি মুকসুদপুর কলেজ এবং সরকারি সাবের মিয়া জসিমুদ্দীন উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা শহিদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি সম্মান জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন।
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে উপজেলা পরিষদ হলরুমে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন ইউএনও মোহাম্মদ আবুল হাছনাত। তিনি বলেন,
শহিদ বুদ্ধিজীবীরা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। স্বাধীনতার প্রাক্কালে তাদের হত্যা করে দেশকে মেধাশূন্য করার চেষ্টা করা হয়েছিল। নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় গড়ে তুলতে শহিদ বুদ্ধিজীবীদের আদর্শ অনুসরণ করা জরুরি। সত্য ইতিহাস জানা ও দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হওয়াই প্রকৃত শ্রদ্ধা প্রকাশ।”
মুকসুদপুর থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন,
মুক্তিযুদ্ধ ও শহিদ বুদ্ধিজীবীদের ইতিহাস জানা ছাড়া দেশপ্রেম পূর্ণতা পায় না। শান্তিপূর্ণ ও নিরাপদ সমাজ গঠনে তাদের আদর্শ আমাদের পথ দেখায়।”
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন মোঃ মাহাবুব হাসান বাবর, প্রভাষক, সরকারি মুকসুদপুর কলেজ।
অন্যান্য বক্তব্যে অংশ নেন:
ডা. রায়হান ইসলাম (শোভন), উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স প্রধান, শহিদ বুদ্ধিজীবীদের আত্মত্যাগ ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার গুরুত্ব জানান।
উপজেলা সিনিয়র কৃষি কর্মকর্তা মিজানুর রহমান, শহিদ বুদ্ধিজীবীদের ত্যাগের কথা স্মরণ করে দেশপ্রেম ও দায়িত্ববোধে নতুন প্রজন্মকে উদ্বুদ্ধ করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
মুকসুদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি ছিরু মিয়া, সাধারণ সম্পাদক কাজী ওহিদুল ইসলাম এবং সাংবাদিক আমজাদ হোসেন আমদ, সাংবাদিক সমাজের পক্ষ থেকে শহিদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে একাত্মতার বার্তা দেন।
বীর মুক্তিযোদ্ধা মনিরুজ্জামান মনির, বাশবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান, শহিদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে দেশের যুবসমাজকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করার আহ্বান জানান।
বীর মুক্তিযোদ্ধা আক্রামুজ্জান, মুক্তিযুদ্ধ ও শহিদ বুদ্ধিজীবীদের অবদান প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দেওয়ার গুরুত্বের ওপর জোর দেন।
ড. কবির ইসলাম, সহকারি অধ্যাপক, সরকারি মুকসুদপুর কলেজ, শিক্ষার্থীদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা অনুসরণের আহ্বান জানান।
আলোচনা সভায় উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারী, পুলিশ সদস্য, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, সাংবাদিক ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠান শেষ হয় শহিদ বুদ্ধিজীবীদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে দোয়া ও মোনাজাতের মাধ্যমে।