বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলার ঘটনায় একটি মামলায় ফরিদপুর জেলা শ্রমিকলীগের সভাপতি গোলাম মো. নাছিরকে পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত। গতকাল মঙ্গলবার দুপুর ৩ টায় ফরিদপুর ১ নং আমলি আদালতের বিচারক জ্যেষ্ঠ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আসিফ এলাহী এই আদেশ দেন।
এর আগে তার ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কোতয়ালী থানার উপপরিদর্শক আবুল বাশার। গত শুক্রবার রাজধানীর পল্লবী এলাকায় গণধোলাই দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেন উত্তেজিত জনতা। পরে ফরিদপুর কোতয়ালী থানায় দায়েরকৃত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের হামলার অভিযোগে একটি মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়।
গোলাম মো. নাসির ফরিদপুর শহরের ওয়্যারলেসপাড়া এলাকার বাসিন্দা মৃত এসএম বদরুল আলমের ছেলে। তাঁর পৈত্রিক বাড়ি নগরকান্দা উপজেলায়। জেলা শ্রমিকলীগের সভাপতির পাশাপাশি মটর ওয়ার্কার্স শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ও ফরিদপুর পৌরসভার ১২ নং ওয়ার্ডের কমিশনার ছিলেন। গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গা ঢাকা দেন।
কোতয়ালী থানা পুলিশ সুত্রে জানা যায়, গত শুক্রবার (৮ আগস্ট) দুপুরে ঢাকার পল্লবী এলাকার গাজীর মসজিদ থেকে জুম্মার নামাজ শেষ করে বের হয়ে গাড়িতে ওঠার পর জনতার রোষানলে পড়েন তিনি। উত্তেজিত জনতা তাকে মারধর করে পল্লবী থানা পুলিশে সোপর্দ করেন। এরপর শনিবার ভোর ৪টার দিকে নাসিরকে পল্লবী থানা থেকে ফরিদপুর নিয়ে আসে পুলিশ কোতয়ালী থানার পুলিশ। পরে কোতয়ালী থানায় বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে দায়ের করা মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ফরিদপুর কোতয়ালী থানার পুলিশ সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন জানিয়ে তাকে জেলার এক নম্বর আমলি আদালতে সোপর্দ করে। আদালত রিমান্ড শুনানির দিন পরে ধার্য করার সিদ্ধান্ত দিয়ে তাকে জেল হাজতে পাঠিয়ে দেন।
সত্যতা নিশ্চিত করে এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ফরিদপুর কোতয়ালী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবুল বাসার জানান, পুলিশ নাসিরের সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করেছিল। আজ মঙ্গলবার বিকেলে রিমান্ডের শুনানি হয়। শুনানি শেষে আদালত পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
প্রসঙ্গত ফরিদপুরে গত ৪ আগস্ট বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলতে হামলা চালিয়ে মেয়েকে আহত করার ঘটনায় বাদী হয়ে ওই বছর ১০ অক্টোবর ফরিদপুর কোতয়ালী থানায় একটি মামলাদায়ের করেন ফরিদপুর সদরের গেরদা ইউনিয়নের মাহমুদপুর গ্রামের বাসিন্দা মো. মুজাহিদুল ইসলাম।
ওই মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামীম হকসহ ঢাকা ও ফরিদপুর আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাসহ ১২৫ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয় আরও তিনশ থেকে চারশ জনকে আসামি করা হয়। ওই মামলার ২৭ নম্বর এজাহারভুক্ত আসামি ছিলেন গোলাম মোহাম্মদ নাসির।