জেলখানায় বন্দি এক কয়েদির বিরুদ্ধে গোপালগঞ্জ জেলা কারাগারে হামলা ও ভাঙচুরের মামলা হয়েছে। এ বিষয়ে কিছুই জানেন না মামলার বাদী।
গত ১৬ জুলাই এনসিপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে গোপালগঞ্জে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় গোপালগঞ্জ জেলা কারাগারে হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় কারা কর্তৃপক্ষ বাদী হয়ে গোপালগঞ্জ সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করে। ওই মামলার ৬৬ নম্বর আসামি তোরাব আলী সরদার বর্তমানে জেলা কারাগারে বন্দি রয়েছেন। বন্দি থেকেও তিনি কারাগারে হামলার মামলায় আসামি হয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
এ বিষয়ে তার স্ত্রী লিয়ামনি বলেন, ‘আমার স্বামী গত ২৪ মে থেকে অন্য একটি মামলায় গোপালগঞ্জ জেলা কারাগারে বন্দি রয়েছেন। বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) জানতে পারলাম আমার স্বামীকে গত ১৬ জুলাই কারাগারে যে হামলা হয়েছে সেই মামলার আসামি করা হয়েছে। কারাগারে বন্দি অবস্থায় কীভাবে আমার স্বামী হামলা করলো?’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কারাগারে হামলা মামলার বাদী গোপালগঞ্জ কারাগারের জেলার তানিয়া জামান বলেন, ‘মামলায় আমরা সিসিটিভির ফুটেজ দেখে দেখে কিছু নাম শনাক্ত করে দিয়েছি। বাকি নাম গোপালগঞ্জ সদর থানা থেকে দেওয়া হয়েছে। আমরা যে কয়েকজনকে শনাক্ত করতে পেরেছি, সেই কয়েকজনের নাম দিয়েছি। এত হামলাকারীদের চেনা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। তোরাব আলী সরদার কারাগারে বন্দি থেকেও কীভাবে মামলার আসামি হলেন, জানতে চাইলে তানিয়া জামান বলেন, ‘তোরাব আলী সরদারের নাম কারাগার কর্তৃপক্ষ থেকে দেওয়া হয়নি। এ ব্যাপারে গোপালগঞ্জ সদর থানার ওসি বলতে পারবেন।’
জানা গেছে, গত ১৬ জুলাই জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সমাবেশকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ বাঁধে। সংঘর্ষ চলাকালীন সময়ে গোপালগঞ্জ জেলা কারাগারে হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় বেশ কয়েকজন কারারক্ষী আহত হয়। কারাগারে হামলার ঘটনায় গত মঙ্গলবার (২২ জুলাই) রাতে জেলা কারাগারের ভারপ্রাপ্ত জেলার তানিয়া জামান বাদী হয়ে ১৬১ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা ১০০০ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেন।
ওই মামলায় কারাবন্দি তোরাব আলীকে আসামি করা হলো কীভাবে জানতে চাইলে গোপালগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মির মো. সাজেদুর রহমান বলেন, ‘এ বিষয়ে এখনই সঠিকভাবে কিছু বলতে পারবো না। সবেমাত্র মামলা হয়েছে। যাচাই-বাছাই করে প্রকৃত অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হবে।’ কোনও নিরীহ ব্যক্তিকে আসামি অথবা গ্রেফতার করা হবে না বলেও জানান তিনি।
বন্দি ব্যক্তিকে মামলার আসামি করা ছাড়াও বেশ কয়েকজনের নাম মামলায় একাধিকবার উল্লেখ করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার (২২ জুলাই) রাতে গোপালগঞ্জ জেলা কারাগারের ভারপ্রাপ্ত জেলার তানিয়া জামান বাদী হয়ে কারাগারে হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগ এনে গোপালগঞ্জ সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ ১৬১ জনকে আসামি করা হয়েছে। অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে আরও ১০০০ জনকে।