মুকসুদপুরে মেডিলাইফ জেনারেল হাসপাতালে মা ও শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
তদন্ত কমিটি গঠন করার তথ্য দৈনিক বাঙ্গালী খবরকে জানিয়েছেন মুকসুদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো: রায়হান ইসলাম শোভন।
গত ২২ এপ্রিল দৈনিক বাঙ্গারী খবর পত্রিকায় “মুকসুদপুরে মেডিলাইফ জেনারেল হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় প্রাণ গেলো মা ও শিশুর” এই শিরনামে সংবাদ প্রকাশের পরে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে গোপালগঞ্জের স্বাস্থ্য বিভাগ। গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর উপজেলার চৌরঙ্গী মোড়ে কাজী প্লাজায় মেডিলাইফ জেনারেল হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় গোবিন্দপুর ইউনিয়নের পালপাড়া গ্রামের তানজিল কাজীর স্ত্রী সাবরিন আক্তার কলি (২৩) সিজার অপারেশন করার সময় ভুল ইকজেকশনের কারণে ভূমিষ্ট শিশু মারা যায় ও দুই দিন পরে ধানমন্ডির পপুলার হাসপাতালে ঐ প্রসূতির মৃত্যু হয়।
অনুসন্ধানে জানা যায়, মেডিলাইফ জেনারেল হাসপাতালে নেই এমবিবিস ডাক্তার, নেই প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নার্স। আর পরিবেশ নোংরা, নেই ভালো যন্ত্রপাতি। মূলত সিজারের আপারেশন করতে হলে তিনজন এমবিবিএস ডাক্তার ও পাচজন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নার্স থাকার কথা থাকলেও ঐ হাসপাতালে তা নেই।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে পালপাড়া গ্রামের কয়েকজন বাসিন্দা জানান, সিজারে মারা যাওয়া সাবরিন আক্তার কলি ও মেডিলাইফ জেনারেল হাসপাতালের পরিচালক রেন্টুর বাড়ি একই গ্রামে হওয়ায় ভয়ভীতি দেখিয়ে পুরো ব্যাপারটা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছে ।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যাম ফেইসবুকে বিভিন্ন মিশ্র প্রতিক্রয়া দেখা যায়, তীব্র নিন্দা ও শোক, ক্ষোভ, দোষীদের বিচারের দাবী, মেডিলাইফ জেনারেল হাসপাতাল বন্ধের দাবী জানিয়েছেন জোরেশরে অনেকে।
এদিকে ভুক্তভোগি কোন অভিযোগ করেনি পুলিশের কাছে।
প্রসঙ্গতঃ গত ১৩ এপ্রিল সাবরিন আক্তার কলি প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে মেডিলাইফ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হয়। সিজার অপারেশন করার সময় ভুল ইকজেকশনের কারণে ভূমিষ্ট শিশুটি মারা যায়। এছাড়া ডা. মনিরুজ্জামান অপারেশনের সময় প্রসূতি মায়ের কিডনির নাড়ি কেটে ফেলে। অবস্থার অবনতি হলে তাকে ফরিদপুর মেডিকেল হাসপাতলে প্রেরণ করে। সেখান থেকে টেস্ট করে দেখা যায়, রোগীর কিডনির নাড়ি কাটা পড়েছে। পরে তারা সাবরিন আক্তার কলিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। সেখানেও তার একই অবস্থা দেখা যায়।
তারপর নিউরোসাইন্স, কিডনি ফাউন্ডেশন হাসপাতাল, বাংলাদেশ মেডিকেল হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আসে সে। সবশেষে ধানমন্ডির পপুলার হাসপাতালে ভর্তি হলে সেখানেই গত ১৫ এপ্রিল ঐ প্রসূতির মৃত্যু হয়।