আবহমান গ্রাম-বাংলা থেকে হারাতে বসেছে সেই চিরচেনা ঘুড়ি উৎসব। তাই এই হারানো ঐতিহ্যকে ফেরাতে ও বর্তমান প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে ফরিদপুরে সালথায় অনুষ্ঠিত হয়েছে ঘুড়ি উৎসব। ঘুড়ি উৎসবের আনন্দে এবার মেতে উঠবে সবাই” এ ¯েøাগানকে ধারণ করে সালথা উপজেলা প্রশাসন এ ঘুড়ি উৎসবের আয়োজন করে। আষাঢ়ের বাদল দিনের বৃষ্টি উপেক্ষা করে শতশত দর্শনার্থী এ উৎসবে অংশ নেয়।
শুক্রবার (১৪ জুলাই) বিকাল ৪ টায় সালথা উপজেলা প্রাঙ্গণে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এ ঘুড়ি উৎসবের উদ্বোধন করেন ফরিদপুর-২ (নগরকান্দা ও সালথা) আসনের সংসদ সদস্য, কৃষি গবেষক শাহদাব আকবর লাবু চৌধুরী।
এ সময় সংসদ সদস্য শাহদাব আকবর লাবু চৌধুরী বলেন- ‘ ঘুরি উৎসব আমাদের বাঙালি সংস্কৃতির একটি অংশ। এটা ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে। এই হারিয়ে যাওয়া সংস্কৃতিকে আমরা যেন তুলে ধরতে পারি। সেজন্যই আজকের এই ঘুড়ি উৎসব। সাধারণত ঘুড়ি উৎসব চৈত্র মাসে হয়ে থাকে, আমরা আজ শুরু করেছি। আগামীতে বড় আয়োজনের মধ্যে দিয়ে ঘুড়ি উৎসব পালন করা হবে। এর মধ্যে দিয়ে যেন আমাদের সংস্কৃতি আরো প্রসারিত হয়।’
সালথা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আক্তার হোসেন শাহিনের সভাপতিত্বে এসময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন-শাহদাব আকবর লাবু চৌধুরীর সহধর্মিণী শাহনাজ খুশি, সালথা উপজেলা চেয়ারম্যান মো. ওয়াদুদ মাতুব্বর, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো: সালাহউদ্দিন আইয়ূবী, সালথা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শেখ সাদিক, সালথা উপজেলা আ’লীগের সাধারণ ফারুক উজ্জামান ফকির মিয়া, সালথা উপজেলা কৃষকলীগের সভাপতি মো: সেলিম মোল্লা, উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রুপা বেগম প্রমূখ।
এ উৎসবে শতাধিক ঘুড়ি উড়ানো হয়েছে আকাশে। শতাধিক প্রতিযোগী বিভিন্ন আকার, আকৃতি ও রং-বেরঙের ঘুড়ি নিয়ে অংশ নেন। নানা আকৃতির ঘুড়ির মধ্যে ছিল মাছ, ঈগল, প্রজাপতি, লেজযুক্ত ঘুড়ি প্রভৃতি। উৎসব দেখতে শত শত মানুষের ঢল নামে।
সালথা উপজেলা পরিষদ মাঠের আকাশ বিভিন্ন রং ও আকৃতির ঘুড়িতে নৈসর্গিক রুপ ধারণ করে। বিকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত শত শত ঘুড়ি আকাশে উড়তে দেখা যায়। এছাড়াও শত শত মানুষের পদচারণায় স্থানটি দারুণভাবে উপভোগ্য হয়ে ওঠে।
বিকালে ঘুড়ি উড়ানো শেষে সন্ধ্যায় সেখানে এক সাংস্কৃতিক সন্ধ্যার আয়োজন করা হয়। একই সঙ্গে এ ঘুড়ি উৎসব উপলক্ষে সালথা বøাড ডোনার্স ক্লাবের আয়োজনে বিনামূল্যে রক্তের গ্রæপ নির্ণয় করা হয়।
এব্যাপারে সালথা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আক্তার হোসেন শাহিন বলেন, তরুণ সমাজকে মাদক, অতিরিক্ত ইন্টারনেট আসক্তি থেকে ফেরাতে ও গ্রামের হারানো ঐতিহ্যকে ফেরাতে এ ঘুড়ি উৎসবের আয়োজন করা হয়। আমরা চাই প্রতিমাসেই এরকম ব্যতিক্রম ও সৃজনশীল কিছুর আয়োজন করার। যাতে যুব সমাজ বিপথগামী ও মাদকাসক্তিতে না জড়ান। এটাই সালথায় প্রথম ঘুড়ি উৎসব বলে জানান তিনি।