ফরিদপুরের সালথায় আতিক মোল্যা নামে এক আদম ব্যবসায়ির খপ্পরে পড়ে চার যুবক মালোশিয়াতে মানবেতর জীবনযাপন করছে। এমন খবর দৃষ্টিগোচর হয় আতিক মোল্যার। পরে তিনি গতকাল বৃহস্পতিবার ফরিদপুরে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জানিয়েছেন জানুয়ারি মাসেই ওই চার যুবকের কাজের ব্যবস্থা করে দেয়া হবে।
তাদের মধ্যে রয়েছে, সালথা উপজেলার ফুলবাড়িয়া গ্রামের আলমগীর মোল্যা (২৮), সোনা মিয়া (২৯), হেমায়েত হোসেন (৪০) ও সামিউল (২৪)। সিমপ্লেক্স ইন্টারন্যাশনাল এজেন্সি ও কংকর ট্রাভেলস নামে দুটি এজেন্সির মাধ্যমে তারা মালোশিয়া যান। এলাকা থেকে মাধ্যম হয়ে তাদের টাকা পয়সা লেনদেন করেন আতিক মোল্যা।
সংবাদ সম্মেলনে আতিক মোল্যা জানান, আমি তাদের কনস্ট্রাকশনের কাজের কথা বলেই মালোশিয়া পাঠিয়েছে। কোনো সাপ্লাই ভিসা দেইনি। তারা কনস্ট্রাকশনের কাজই করতে শুরু করে। কিন্তু মালোশিয়ার সরকার পরিবর্তন হওয়ায় যে প্রজেক্টে তারা কাজ শুরু করে সেই প্রজেক্ট কিছুদিনের মধ্যে বন্ধ হয়ে যায়। এতে তাদের কাজও বন্ধ হয়ে যায়। তবে আগামী জানুয়ারি মাসে নতুন করে প্রজেক্টটি শুরু হবে। আশা করি, দ্রুতই তারা কাজে যাবে। এছাড়া এই চার পরিবারের খোঁজ খবর আমি সময় রাখছি। তাদের চাল, ডালও কিনে দিচ্ছি।
এছাড়া আরও কয়েকজনকে মালোশিয়া নেয়ার কথা বলে টাকা হাতিয়ে নেয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, যাদের কাছ থেকে টাকা নেয়া হয়েছে তাদের ভিসাও কমপ্লিট হয়েছে। তাদের কাছ থেকে দেড় লাখ থেকে দুই লাখ করে টাকা নেয়া হয়েছে। সেই টাকা ভিসা ও কোম্পানীর কাজে লেগেছে। এখন তারা যেতে চাচ্ছে না, আমি কি করবো।
এ বিষয়ে সিমপ্লেক্স ইন্টারন্যাশনাল এজেন্সির ম্যানেজার সাইফুল ইসলাম জানান, ওই চারজনকে কনস্ট্রাকশনের কাজের কথা বলে নেয়া হয়েছে। এরজন্য সিআইডিবি সার্টিফিকেটও লাগে। সেগুলো পেতে একটু সময় লেগে যায়। আশা করি, দ্রুত সেই ব্যবস্থা করে তাদের কাজ দেয়া হবে।
প্রসঙ্গত, উপজেলার মধ্য ফুলবাড়িয়া এলাকার ফেলু মোল্যার পুত্র আলমগীর মোল্যাকে মালোশিয়াতে কনস্ট্রাকশনে ভাল বেতনে কাজের কথা বলে প্রায় ৫ লাখ টাকা নেয় আতিক মোল্যা। এরপর ৩/৪ মাস পর মালোশিয়া পাঠায়। কিন্তু বর্তমানে চার মেয়ে নিয়ে আলমমগীরের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী মানবেতর জীবনযাপন করছে। স্থানীয় অপর এক যুবক সোনা মিয়ার কাছ থেকে ৫লাখ টাকা নিয়ে ১বছর ঘুরিয়ে মালোশিয়াতে পাঠায় আতিক। এনজিও থেকে লোন ও সুদে টাকা জোগাড় করে সে বিদেশের স্বপ্ন দেখে। বিদেশের মাটিতে ৬মাস থাকলেও কোন কাজ জোটে নাই তার ভাগ্যে। এছাড়া হেমায়েত হোসেন ও সামিউল নামের অপর দুই যুবক ও তাদের পরিবার মানবেতর জীবন যাপন করছে।