শরীয়তপুরে এক মণ দুধ দিয়ে গোসল করে হাসেম সরদার (৬০) নামে এক আওয়ামী লীগ কর্মী বিএনপিতে যোগদান করেছেন। গত শুক্রবার ১ সেপ্টেম্বর শহরের ধানুকা এলাকায় জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সরদার একেএম নাসিরউদ্দিন কালুর বাসভবনের সামনে তিনি দুধ দিয়ে গোসল করেন।
হাসেম সরদারের দাবি, সর্বশেষ তিনি শরীয়তপুর পৌরসভার ৭ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের-সহ সভাপতি ছিলেন। তবে ওই কমিটিতে তার নাম দেখা যায়নি। তিনি আওয়ামী লীগের কর্মী বলে জানিয়েছেন ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের নেতারা।
এদিকে হাসেম সরদারের দুধ দিয়ে গোসলের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওতে দেখা যায়, হাসেম সরদার নিজেই মাথায় দুধ ঢেলে গোসল করছেন। কেউ কেউ আবার তার মাথায় দুধ ঢেলে দিচ্ছেন। দুধ দিয়ে গোসল করার সময় আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে হাসেম সরদার বিএনপিতে যোগদানের ঘোষণা দেন।
হাসেম সরদার জানিয়েছেন, প্রথমে ১০ কেজি দুধ এনে গোসল শুরু করলে আমার শুভাকাঙ্ক্ষীরা আরও ৩০ কেজি দুধ এনে দিলে সেই দুধ দিয়ে গোসল করে বিএনপিতে যোগদান করেছেন।
শরীয়তপুরের বর্তমান এমপি ইকবাল হোসেন অপুর সমর্থক হয়ে আওয়ামী লীগের কর্মী হিসেবে কাজ করেছি। অপু সাহেব এমপি হওয়ার আগে বলেছিলেন, দুর্দিনের কর্মীদের মূল্যায়ন করবেন। কিন্তু তিনি তা করেননি। জীবনে ২১ বার জেল খেটেছি, ছয়টি বছর জেলে বন্দি ছিলাম আওয়ামী লীগ করার কারণে। আমাকে মূল্যায়ন করা হয়নি, পদ-পদবি দেওয়া হয়নি। মাটি কেটে খাই আমি। যে আওয়ামী লীগের জন্য এত কিছু করলাম সেই আওয়ামী লীগ আমাকে কিছুই দিলো না। রাগে, দুঃখে, ক্ষোভে আমি আওয়ামী লীগকে প্রত্যাখ্যান করে দুধ দিয়ে গোসল করে বিএনপিতে যোগদান করেছি।
তিনি বলেন, সর্বশেষ আমাকে ধানুকার একটি ক্লাবে নিয়ে শরীয়তপুর পৌরসভার ৭ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ঘোষণা করা হয়েছে মৌখিকভাবে। লিখিত কোনো অনুমোদন নেই ওই কমিটির। ওই কমিটির সভাপতি প্রার্থী ছিলাম আমি। ওই কমিটির সভাপতি এখন আবদুল আজিজ বেপারী। যে দল ১৪ বছর ক্ষমতায় থাকার পরও তৃণমূলকে মূল্যায়ন করতে জানে না, সেই দলকে প্রত্যাখ্যান করে দুধ দিয়ে ধুয়ে মুছে আমি বিএনপিতে যোগদান করেছি।
জেলা বিএনপির সভাপতি শফিকুর রহমান কিরন ও সাধারণ সম্পাদক সরদার নাছির উদ্দীন কালু ধানের শীষ হাতে দিয়ে আমাকে বরণ করে নিয়ে যে সম্মান দেখিয়েছেন তা আমি আওয়ামী লীগে কোনো দিন পাইনি।
শরীয়তপুর পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল আজিজ বেপারী বলেন, হাসেম সরদার আওয়ামী লীগের কর্মী। তিনি দলের পদধারী কোনো নেতা নন। তিনি যে দাবি করেছেন ৭ নং ওয়ার্ডের সহ-সভাপতি তা মিথ্যা। আওয়ামী লীগের কর্মসূচি থাকলে এলাকার লোক হিসেবে তাকে ডেকে নিয়ে আওয়ামী লীগের মিছিল-মিটিংয়ে যেতাম আমি। উনি দুধ দিয়ে গোসল করে বিএনপিতে যোগদান করেছেন এটা সম্পূর্ণ উনার ব্যক্তিগত বিষয়। দুধ দিয়ে গোসল করে দল ছাড়ার সাথে আওয়ামী লীগের কোনো সম্পর্ক নেই।