গুলশানের বিভিন্ন আবাসিক এলাকায় সরজমিনে ঘুরে দেখা যায়, নামে বেনামে সাইনবোর্ড বিহীন অবৈধ সেলুন, স্পা ও বিউটি পার্লার। এসব প্রতিষ্ঠানে যুগ যুগ ধরে চলে আসছে দেহ ব্যবসা। বর্তমানে এর পরিমান কয়েকগুন বেড়েছে গুলশান অভিজাত এলাকায়। এসব প্রতিষ্ঠানে ১৫ বছর থেকে শুরু করে বিভিন্ন বয়সের নারীরা এব্যবসার সাথে জড়িত। এরা কেউ প্রবাসীর স্ত্রী, গার্মেন্টস কর্মী, বিউটিশিয়ান ও উঠতি বয়সের কিছু তরুনীরা এব্যবসার সাথে জড়িত। তবে এই পেশায় নানান কারণে নারীরা জড়িত হচ্ছে বলে সামাজিক প্রতিষ্ঠানগুলো দাবি করেন। তারা মনে করেন, ইয়াবা সেবন, বিবাহ বিচ্ছেদ, বিলাসিতা, অতিরিক্ত যৌন লালসা ও দারিদ্রতার কারণে দেহ ব্যবসায় নামেন এসব নারীরা।
জানা যায়, চেহেরার সৌন্দর্যতার ভিন্নতায় এদের বিভিন্ন মূল্য দেয়া হয়। ৫,০০০ (পাঁচ হাজার) থেকে শুরু করে ১০,০০০ (দশ হাজার টাকা) পর্যন্ত এদের মূল্য নির্ধারন হয়। বয়সে ছোট ও সুন্দর যৌন কর্মীর চাহিদা সবার কাছে বেশি।
সূত্রে আরো জানা গেছে, বিউটি পার্লারের মালিকরা সুন্দর পার্লার দিয়ে আকর্ষনীয় চেহেরার মেয়ে শিকারের কাজে অর্থ বিনিয়োগ করে। এখানে কর্মরত বিউটিশিয়ান কিংবা গ্রাহকদের দিয়ে বাড়তি আয়ের প্রলোভন দেখিয়ে মালিকরা চালায় দেহ বানিজ্য। এই কায়দায় অনেক গৃহবধু, স্কুল ও কলেজ ছাত্রী পার্লার মালিক দ্বারা প্রতারিত হয়ে সর্বস্ব হারানোরও অভিযোগ রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মালিকদের একটি সংঘবদ্ধ চক্র গ্রাম থেকে হতদরিদ্র পরিবারের মেয়েদের চাকুরী দেয়ার নামে শহরে নিয়ে আসে। টাকার লোভ, নাহলে জোর পূর্বক মেয়েদের তাদের দেহদানে বাধ্য করে। এক পর্যায়ে মেয়েটি স্বাভাবিকভাবে নিজেকে এই ব্যবসার সাথে মানিয়ে নেয়। হয়ে যান একজন পেশাদার যৌন কর্মী। এমনি তথ্য পাওযা যায়, অসাধু ব্যবসায়ী কুদ্দুস, বাহার ও নূর-ইসলামের সিন্ডিকেট দ্বারা পরিচালনা হয়ে আসছে গুলশানের ৪১ নং সড়কে ৭/এ (২য়তলা) এবং আর এম সেন্টারের ৪ র্থ তলায় কুদ্দেুসের এমন দুটি সেলুন ও স্পা সেন্টারে। এছাড়া ২৪ নং সড়কের ৯১/ বি বাড়িটির (৪র্থ তলা) নূর-ইসলামের একটি এবং ৯৯ নং সড়কে যুগান্তর পরিচয়দানকারী বাহারের আরেকটি ও ১৩১ নং রোডের স্মার্ট বিউটি কেয়ার, যাহার মালিক সুলতানা ওরফে সুমনা।
এরা সিটি করপোরেশনের কাছ থেকে হোটেল, বিউটি পার্লার, সেলুন আর ব্যায়ামাগারের নামে ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে নারী ও মাদক কারবারীদের দিয়ে প্রতিষ্ঠানগুলো পরিচালনা করে প্রতিনিয়ত অসৎ আয়ের টাকায় আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়েছেন।
সম্প্রত্তি, এসব ব্যবসায়ীরা বলেন, আমরা বর্তমানে ভাল আছি। কারন থানা পুলিশ এখন আমাদের পক্ষে কাজ করছে। বর্তমান ওসি ফরমান সাহেব আমাদের প্রিয় মানুষ, ওনার বাড়ি গোপালগঞ্জ সেই সুবাদে আমাদের নিরাপত্তা নিয়ে কোন ঝামলা নেই। এমন অসাধু ব্যবসায়ীদের বক্তব্যে একজন ওসির সম্মান কতটুকু সমাজে গ্রহযোগ্যতা রয়েছে সেটি নিয়ে চলছে নানা গুঞ্জন। এসব ব্যবসায়ীদের অপরাধ ভারি হতে হতে আজ ভয়ংকর পরিস্থিতে দাড়িয়েছে। এরা গুলশান থানার ওসির নাম ব্যবহার করে বা রাজনৈতিক পরিচয়ে ক্ষমতার দাপটে এসব অনৈতিক কর্মকান্ড পরিচালনা করে আসছে। তাই পুলিশ প্রশাসনের ভুমিকা নেওয়া জরুরী মনে করেন এলাকাবাসী। এসব বিষয়ে গুলশান বিভাগের থানা পুলিশকে একাধিক অভিযোগ করলেও কোন পদক্ষেপ নেই তাদের। তবে এসব ব্যবসার পিছনে পুলিশ নয় অন্য কেউ? অথচ তাদেরকে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে বললে তাদেও ভাষা একটাই যে, বিষয়টি দেখছি এবং ব্যবস্থা নিচ্ছি বা কোন অভিযোগ পেলেই আমরা ব্যবস্থা গ্রহন করব বলেই মাসের পর মাস চলে যায় তবুও নেই তাদের পদক্ষেপ। তবে এসব ব্যবসায় পুলিশের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে বলে মনে করেন একটি শুসিল সমাজ। কিন্তু গুলশান থানার অফিসার ইনচার্জ এবিএম ফরমান আলী (ওসি) এর নাম ভাঙ্গিয়ে অসাধু ব্যবসায়ীরা অনেকটাই তৎপর হয়ে উঠছে এমনটাই অভিযোগ উঠেছে।