ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার কামারখালী ইউনিয়নের কামারখালী ও আড়পাড়া ইউনিয়নের আড়পাড়া এবং রাজধরপুর গ্রামে নোংরা পরিবেশে বেকারী খাদ্য তৈরী হচ্ছে। সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার কামারখালী বাজারে ও আড়পাড়া ইউনিয়নে রাজধরপুর গ্রামে নিয়মনীতি ছাড়া যত্রতত্র ভাবে গড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে ৪টি বেকারী কারখানা। এ গুলো হলো ভাইভাই বেকারী, তামান্না, তুষার আর একটির নাম নাই বর্তমান বন্ধ। এর অধিকাংশ বেকারী গুলোতে নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরী হচ্ছে এই বেকারী খাবার। উৎপাদিত খাদ্যের মান প্রণয়ন এবং গুণগতমান ও পরিমাপ নিশ্চিতকরণ কোনো ব্যবস্থা না থাকায় বেকারী মালিকরা অবাধে তাদের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। উৎপাদিত খাবারে দেশের মান নিয়ন্ত্রণকারী একমাত্র প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস এন্ড টেস্টিং ইন্সটিটিউশন (বিএসটিআই) এর অনুমোদন সহ নেই উৎপাদন ও মেয়াদোত্তীর্ণ তারিখ।
সরেজমিনে অনুসন্ধানে জানা যায়, কামারখালী বাজারের বিভিন্ন স্থানে এবং আড়পাড়া ইউনিয়নের রাজধরপুর গ্রামে বাড়িতে গড়ে উঠেছে তামান্না বিস্কুট বেকারী কারখানা। কারখানা গুলো নিয়ম নীতি না মেনে স্যাঁতস্যাঁতে নোংরা পরিবেশে ভেজাল ও নি¤œমানের উপকরণ দিয়ে অবাধে তৈরী করছে বেকারী খাবার।
অভিযোগ উঠেছে, বেকারী খাবার তৈরী করতে ক্ষতিকারক কেমিক্যাল ও নিম্নমানের পাম তেল ব্যবহার করা হচ্ছে। শ্রমিকরা বিশেষ পোশাক ছাড়া খালি পায়ে খাবার তৈরী করছে। নোংরা ও অপরিস্কার কড়াই গুলোতে আটা ময়দা প্রক্রিয়াজাত করা হচ্ছে। ডালডা দিয়ে তৈরী করা ক্রিম রাখা পাত্রগুলোতে ঢাকনা নাই। উৎপাদন ও মেয়াদোত্তীর্ন তারিখ ছাড়াই বাহিরে মোড়কে বনরুটি, পাউরুটি, কেক, বিস্কুট সহ বিভিন্ন ধরনের বেকারী খাবার উৎপাদন ও বাজারজাত করা হচ্ছে। অধিকাংশ বেকারি মালিকের বিরুদ্ধে বিকল্প বেকারি মোড়কে নিম্নমানের খাদ্য সামগ্রী উৎপাদন করে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে পণ্য বাজারজাত করার অভিযোগ রয়েছে।
উপজেলার বিভিন্ন চায়ের স্টলে গিয়ে দেখা যায়, একাধিক পলি প্যাকে ঝুঁলছে পাউরুটি, ক্রীম রোল, কেক সহ অন্যান্য বেকারী খাবার। মোড়কের গায়ে উৎপাদন ও মেয়াদোত্তীর্ণ লেখা থাকলেও কত তারিখে উৎপাদন হয়েছে বা মেয়াদ কবে শেষ হবে তার কোনো উল্লেখ নেই। আর ভাই ভাই বিস্কুট বেকারীতে লিফলেটে বি.এস.টি.আই নাম্বার আর শুধু মূল্যে ও ওজন লেখা আছে আর কিছু নাই । কামারখালী বাজারের ভাই ভাই বিস্কুট বেকারী,(আলম) তুষার ব্রেড,(মালিক মন্টু শেখ) তামান্না বিস্কুট, -(বকুল )বশির বেকারী(বশির) সহ কয়েকটি বেকারী সরোজমিনে এমন তথ্য উঠে আসে। এ সকল বেকারীতে বিভিন্ন সময় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা সহ জরিমানা আদায় করা হলেও , চোর না শোনে ধর্মের কাহিনী। কিছু দিন যেতে না যেতেই ফিরে যাচ্ছে পূর্বে অবস্থায়। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, ভেজাল কেমিক্যাল ও নিম্নমানের উপকরণ দিয়ে তৈরী করা এসব খাবার স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্বক ঝুঁকি। কয়েক জন বেকারী শ্রমিক জানান, কোন কোন কারখানায় দিনের বেলায় তারা কোনো পণ্য উৎপাদন করেন আবার অনেকে রাতভর পণ্য উৎপাদন শেষ হয়ে যায়। রাতে ভ্রাম্যমাণ আদালত ও পুলিশের ঝাঁমেলা কম বলেই পণ্য উৎপাদন রাতেই শেষ করা হয়। তারা আরও বলেন মাঝে মধ্যে স্যানিটারি অফিসার এসে ঘুরে চলে যায়। কামারখালী চা বাজারের চা দোকানদারা বলেন আমরা গরীব মানুষ চা-পান বিক্রি করে সংসার চালাই। উৎপাদনের তারিখ দেখার সময় নাই। ক্রেতারা তো আর এসব জিজ্ঞেস করে না। ভাই ভাই বিস্কুট বেকারীর মালিক আলম বলেন আমার বেকারীর মতো পরিস্কার পরিছন্ন ও বি.এস.টি.আই লাইসেন্স উপজেলার অন্য কোন বেকারীর নেই। এ বিষয়ে মধুখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও স্যানিটারী ইন্সেপেক্টরকে নোংরা বেকারীতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সচেতন নাগরিক দাবী করেন।