ফরিদপুরের সালথা উপজেলায় কুমার নদী দখল করে পাকা ভবন নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। এতে নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি পরিবেশ ও জনস্বার্থ মারাত্মক হুমকির মুখে পড়েছে।
বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার গট্টি ইউনিয়নের বডদিয়া গ্রামে স্বরূপদিয়া–বড়দিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে কুমার নদীর জায়গা ভরাট করে স্থানীয় ধলা ফকিরের ছেলে জিয়া ফকির (৫০) একটি পাকা স্থাপনার ভিত্তি নির্মাণ করছেন। ঘটনাস্থলে ৮–১০ জন শ্রমিক কাজ করছিলেন। নদীর বুক ভরাট করে ইট, বালু ও সিমেন্ট ব্যবহার করা হচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, একসময় কুমার নদী ছিল এই অঞ্চলের প্রধান জলাধার। বর্ষা মৌসুমে নদীর পানি কৃষিজমিতে পলি এনে উর্বরতা বাড়াত। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ দখল ও ভরাটের ফলে নদী ক্রমেই সংকুচিত হয়ে পড়েছে। এতে বর্ষাকালে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয় এবং শুষ্ক মৌসুমে নদী প্রায় মৃত খালে পরিণত হচ্ছে। দখল অব্যাহত থাকলে ভয়াবহ পরিবেশগত বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।
অভিযোগের বিষয়ে পাকা স্থাপনা নির্মাণকারী জিয়া ফকির বলেন, “তহশিলদার অফিস থেকে লোক এসে কাজ বন্ধ করতে বলেন। আমি কাজ বন্ধও করি। পরে স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক এসে জানান, ইউএনও মহোদয়ের কাছ থেকে অনুমতি নেওয়া হয়েছে, তাই কাজ করতে বলা হয়।”
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, “এ বিষয়ে আমার সঙ্গে কেউ কোনো কথা বলেনি। আমি তাকে চিনিও না। বিষয়টি এইমাত্র জানলাম। দ্রুত সহকারী কমিশনার (ভূমি) কে অবহিত করা হচ্ছে।”
সালথা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. মামুন সরকার বলেন, “নদীর মধ্যে কোনোভাবেই ভবন নির্মাণের সুযোগ নেই। এটি সম্পূর্ণ বেআইনি। বিষয়টি তদন্ত করে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
স্থানীয় সচেতন মহল অবিলম্বে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে কুমার নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ ফিরিয়ে আনার জন্য প্রশাসনের কঠোর হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন।