ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) চারজন কর্মী এমআরটি পুলিশের হাতে লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনায় প্রতিবাদস্বরূপ কর্মবিরতি পালন করছেন মেট্রোরেল কর্মীরা। এর ফলে আজ সোমবার সকাল থেকে মেট্রোরেলের বিভিন্ন স্টেশনে যাত্রীসেবা বিঘ্নিত হয়েছে, বিশেষ করে ভাড়া আদায় প্রক্রিয়ায় সমস্যা দেখা দিয়েছে।
সকাল সাড়ে ৯টার দিকে মতিঝিল স্টেশনের কার্ড পাঞ্চ সিস্টেম অকার্যকর হয়ে পড়ে, ফলে যাত্রীরা ফ্রিতে যাতায়াত করেন। বেসরকারি চাকরিজীবী মো: সৌরভ আহমেদ জানান, ফার্মগেট স্টেশনে ঢোকার সময় কার্ড পাঞ্চ করতে পারলেও কারওয়ান বাজারে নামার পর তিনি পাঞ্চ মেশিন অচল দেখতে পান এবং বিনা ভাড়ায় বের হয়ে আসেন।
এমন পরিস্থিতিতে স্টেশন কর্তৃপক্ষ যাত্রীদের জানিয়েছেন, জরিমানা বা শাস্তিমূলক কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে না। এমআরটি ও র্যাপিড পাসধারীরা যাতায়াত করতে পারলেও নতুন করে কেউ টিকিট কাটতে পারেননি, কারণ টিকিট কাউন্টারগুলোও বন্ধ ছিল।
ডিএমটিসিএলের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. জাহিদুল ইসলাম আশ্বস্ত করেছেন যে মেট্রোরেল চলাচলে কোনো বাধা নেই, তবে রাজস্ব আদায়ে সমস্যা হচ্ছে। কর্তৃপক্ষ স্টেশনগুলোতে কর্মীদের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে এবং দ্রুত সমাধানের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ মেট্রোরেল কর্মীরা ছয় দফা দাবি জানিয়েছেন, যার মধ্যে রয়েছে:
1. লাঞ্ছনার ঘটনায় জড়িত এসআই মাসুদকে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করা এবং অন্যান্য অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যদের (কনস্টেবল রেজনুল, ইন্সপেক্টর রঞ্জিত) শাস্তির আওতায় আনা।
2. অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যদের প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে।
3. মেট্রোরেল ও যাত্রীদের নিরাপত্তার জন্য নিজস্ব সশস্ত্র বাহিনী গঠন করতে হবে এবং এমআরটি পুলিশ বাতিল করতে হবে।
4. স্টেশনে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মীদের শতভাগ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
5. অনুমতি ও অফিসিয়াল পরিচয়পত্র ছাড়া কেউ যেন স্টেশনের পেইড জোনে প্রবেশ করতে না পারে।
6. আহত কর্মীদের চিকিৎসার সম্পূর্ণ দায়িত্ব কর্তৃপক্ষকে নিতে হবে।
এই কর্মবিরতির কারণে মেট্রোরেল যাত্রা কিছুটা বিশৃঙ্খল হয়ে পড়লেও ট্রেন চলাচল অব্যাহত রয়েছে। তবে দাবি পূরণ না হলে ভবিষ্যতে আরও কঠোর পদক্ষেপ নিতে পারেন কর্মীরা।