সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩০ হাজার প্রধান শিক্ষক অবশেষে ২য় শ্রেণির গেজেটেড কর্মকর্তার মর্যাদা লাভ করলেন। বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের চার সদস্যের বেঞ্চ এই ঐতিহাসিক রায় দিয়েছেন, যা শিক্ষকদের দীর্ঘদিনের দাবির পূর্ণতা দিয়েছে। এই রায়ের মাধ্যমে তাদের বেতন কাঠামো ১০ম গ্রেডে উন্নীত করা হয়েছে।
এই রায়টি আসলো ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে। ২০১৯ সালে হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল যে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের বেতন ১০ম গ্রেডে এবং গেজেটেড পদমর্যাদা দিতে হবে। তবে পরবর্তীতে এই আদেশ বাস্তবায়নে জটিলতা দেখা দেয়, কারণ ২০১৪ সালে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের দ্বিতীয় শ্রেণিতে উন্নীত করার ঘোষণা দিলেও তাদের জন্য ১১তম ও ১২তম গ্রেড নির্ধারণ করা হয়, যা অন্য দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি কর্মকর্তাদের বেতন কাঠামোর সঙ্গে অমিল ছিল।
শিক্ষকদের পক্ষ থেকে ব্যারিস্টার সালাউদ্দিন দোলন এই বৈষম্যের বিরুদ্ধে সরব ছিলেন। তার মতে, অন্যান্য বিভাগের দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মকর্তারা যেখানে ১০ম গ্রেডে বেতন পান, সেখানে প্রধান শিক্ষকরা ১১তম ও ১২তম গ্রেডে বেতন পেয়ে আসছিলেন। এমন বৈষম্য শিক্ষকদের মধ্যে হতাশা সৃষ্টি করেছিল, যা তাঁদের দাবি আরও জোরালো করে তোলে।
২০১৯ সালের আদেশের পরেও বিষয়টি বাস্তবায়িত না হওয়ায়, বাংলাদেশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক সমিতির সভাপতি রিয়াজ পারভেজসহ আরও ৪৫ জন শিক্ষক ২০২৪ সালের মার্চে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন। আদালতে তাদের দাবি ছিল যে, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের বেতন কাঠামো ১০ম গ্রেডে উন্নীত করতে হবে। আদালত তাদের পক্ষে রায় দিয়ে সিদ্ধান্তে পৌঁছায়, যা পরবর্তীতে আপিল বিভাগেও বহাল থাকে।
এ রায়ের ফলে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩০ হাজার প্রধান শিক্ষক এখন ২য় শ্রেণির গেজেটেড কর্মকর্তা হিসেবে স্বীকৃতি পাবেন এবং ১০ম গ্রেডের বেতন কাঠামোতে উন্নীত হবেন। দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের শেষে শিক্ষকরা ন্যায্য মর্যাদা ও বেতন কাঠামো লাভ করায় শিক্ষা খাতে এটি একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে।