চাঁদপুরের মেঘনা নদীতে মালবাহী জাহাজে হত্যার শিকার ৭ জনের মধ্যে একজন জাহাজের মাস্টার গোলাম কিবরিয়া বিশ্বাস। নিহতদের মধ্যে গোলাম কিবরিয়ার ভাগনে শেখ সবুজও রয়েছে। একই পরিবারের দুজনের এমন মর্মান্তিক মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ স্বজনেরা।
জাহাজের মাস্টার গোলাম কিবরিয়ার বাড়ি ফরিদপুর জেলার কোতয়ালী থানায়। নতুন বছরের ৩ জানুয়ারি বাড়িতে যাওয়ার কথা ছিল তাঁর। ১০ জানুয়ারি ছোট মেয়ের বিয়ে। কিন্তু নির্মম হত্যার শিকার হলেন তিনি। মেয়ের বিয়ে দেখে যাওয়া হলো না তাঁর।
গত ২৩ ডিসেম্বর সোমবার দুপুরে মেঘনা নদীতে মালবাহী জাহাজ থেকে সাতজনের মরদেহ উদ্ধার করে নৌ পুলিশ। এদিন রাতে খবর পেয়ে চাঁদপুর সদর জেনারেল হাসপাতালে আসেন নিহতদের স্বজনেরা।
হাসপাতালে কথা হয় শেখ সবুজের ভাই ফারুক হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘নিহত সাতজনের মধ্যে মামা গোলাম কিবরিয়া ও আমার ভাই শেখ সবুজ আছে। মামা ৩০ বছর ধরে জাহাজের চাকরি করলেও ভাই সবুজ মাত্র দেড় আস আগে যোগ দেয়। মেয়ের বিয়ে নিয়ে রোববার রাতে মামার সাথে শেষ কথা হয়েছিল। জানুয়ারিতে মেয়ের বিয়ের জন্য বাড়ি আসার কথা ছিল মামার।
জানা যায়, মাত্র ১০ দিন আগে এমভি আল-বাখেরা নামক কার্গো জাহাজে চাকরি নেন মাগুরার মোহাম্মদপুরের চরযশবন্তপুরের কিশোর মাজেদুল। তার বাবা কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, গত রবিবার সকালে ছেলের সঙ্গে সবশেষ কথা হয়। তখন ছেলে তাকে বলেছিল, বাবা আমার মোবাইলে এমবি নেই। নেটওয়ার্ক পেতে তার কাছে এমবি চাওয়ার পর তা রিচার্জ করে পাঠান তিনি। কিন্তু ওই দিন রাতের পর আর যোগাযোগ নেই ছেলের সঙ্গে।
নিহত মাজেদুলের বড় ভাই রাইসুল বলেন, ‘আমরা তিন ভাই। সবার ছোট মাজেদুল। এলাকার একটি মাদরাসায় নবম শ্রেণিতে পড়াশোনা করত।
বার্ষিক পরীক্ষার পর এক প্রতিবেশীর ডাকে জাহাজে খণ্ডকালীন চাকরি নেয়। ১ জানুয়ারিতে বাড়ি ফিরে আসার কথা ছিল ছোট ভাইয়ের। তবে তার আগেই ফিরেছে তবে জীবিত নয়, লাশ হয়ে।’