ভিক্ষুক মুক্ত উপজেলা মুকসুদপুর। প্রতিদিন শতাধিক ফকিরের মুখোমুখি হতে হচ্ছে মুকসুদপুরবাসীর। ভিক্ষা যেন বিনা পূজিঁর ব্যবসায় পরিনত হয়েছে । যুগের সাথে তাল মিলিয়ে ভিক্ষার ধরনও পাল্টিয়েছেন ভিক্ষুকরা, তারা এখন ভিক্ষা চাওয়ার বদলে বিভিন্ন অজুহাতে সাহায্য চেয়ে থাকেন।
গত শুক্রবার সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায় একাকি কিংবা ছোট ছোট দল বেঁধে মুকসুদপুর শহরে ভিক্ষা করছেন বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত ভিক্ষুক। তাদের সাথে কথা বলে জানা যায় তারা সবাই পেঠের দায়ে এ পেশা বেছে নিয়েছেন। এদের মধ্যে কেউ কেউ শিশু, বয়স্ক, বিধবা, প্রতিবন্ধী কেউবা সুস্থ মানুষ বটে। তারা দরিদ্র্যতার ধাক্কায় দলবেঁধে নেমেছেন ভিক্ষাবৃত্তিতে। কিন্তু বাস্তবে দেখা যায় অনেকেই বয়স কম এবং সুস্থও আছেন অথচ বিনা পুজিঁতে এমন ব্যবসা বেছে নিয়েছেন। সকাল হলেই ছুটছেন শহর থেকে গ্রামে। জীবিকার সংগ্রামে হাত পাতছেন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, বাসা-বাড়ি ও পথচারিদের কাছে। শুধু এরাই নন। এমন অসংখ্য ভিক্ষুকের জটলায় অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন মুকসুদপুরবাসী। দলবেঁধে নেমে ভিক্ষাবৃত্তির এমন দৃশ্য দেখা যায় প্রতি সপ্তাহের প্রতিদিনই।
দলবেধে ভিক্ষা করতে আশা তাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, গেল করোনার প্রভাব আর দ্রব্যমূল্যর অগ্নিমূল্যসহ নানা কারণে দরিদ্র্য পরিবারে বেড়েছে ভিক্ষাবৃত্তি। এছাড়া শারীরিক অক্ষমতা, পঙ্গত্ববরণ, বিধবা হওয়া, অসুস্থ স্বজনের চিকিৎসাসেবা, মেয়েকে পাত্রস্থ ও সন্তানদের কাছে বিতাড়িত হয়ে ভিক্ষাবৃত্তিতে নামছেন তারা। আবার কেউ বলেছেন অসুস্থ সন্তানের চিকিৎসাসেবা, রোগাক্রান্তে পঙ্গত্ববরণে ভিক্ষুক হয়েছেন। কেউবা জানিয়েছেন স্বামী মারা গেছেন, সন্তানেরা দেখেন না, আর দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে জীবনযাত্রায় ব্যয় বাড়ায় বেছে নিয়েছেন ভিক্ষাবৃত্তি পেশা। আবার অনেকে বাণিজ্যিক হিসেবেও এই কাজটি করে যাচ্ছেন বলে জানা গেছে।
এক মুদি ব্যবসায়ী বলেন ভিক্ষুকের পরিমান এতো বেশি যে তাদের সামলাতে গিয়ে খরিদ্দার বিরক্ত হয়ে ফেরত যায়। একই কথা বলেন বাজারের অন্য আরেক ব্যবসায়ী।
এবিষয় স্থানীয় সমাজ সেবক ও ব্যবসায়ী মাহবুব বাবু বলেন, সমাজ থেকে ভিক্ষুক হ্রাস কল্পে প্রথমত প্রতিবেশীদের সহানুভূতিশীল হতে হবে। সেই সঙ্গে সরকারি বরাদ্দের সুবিধাগুলো লুটপাট না করে সংশ্লিষ্টদের সুষম বন্টন অবশ্যক।