1. kazi.rana10@gmail.com : Sohel Rana : Sohel Rana
  2. jmitsolution24@gmail.com : support :
শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫, ০২:২৫ অপরাহ্ন

ফরিদপুরে ভিডিও দেখিয়ে চালককে অজ্ঞান, অটোরিক্সা ছিনতাই

শহর প্রতিনিধি 
  • Update Time : মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর, ২০২৪
  • ১৩২ Time View

অভাবের সংসারে টানাপোড়ন ঘোচাতে প্রায় ৭ মাস আগে একটি ব্যাংক থেকে কিস্তির মাধ্যমে এক লক্ষ টাকা তোলেন সানোয়ার হোসেন (৩৪)। সেই টাকা দিয়ে কিছুদিনের মধ্যে একটি ব্যাটারি চালিত অটোরিক্সা কিনে শুরু করেন জীবিকা নির্বাহ। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়ে খুইয়েছেন জীবিকা নির্বাহের যানটিও। ওই চক্রের ফাঁদে পড়ে নিখোঁজও ছিলেন এই যুবক। ভাগ্যক্রমে প্রায় ৩০ ঘণ্টা পর কোনোভাবে বেঁচে ফিরে এসেছেন পরিবারের কাছে। সানোয়ার হোসেন ফরিদপুর শহরের পুর্বখাবাসপুর এলাকার আনোয়ার হোসেনের পুত্র। স্ত্রী ও একমাত্র শিশুকন্যা সন্তানকে নিয়ে বসবাস করেন শহরতলীর বিলমামুদপুর এলাকায়।

গত রোববার দুপুর দুইটার দিকে নিজের অটো রিকশা নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়েছিলেন। এরপরই নিখোঁজ হোন। এরমধ্যে পরিবার স্বজনরা হন্যে হয়ে খুঁজতে থাকেন, কোতয়ালী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরীও করেন।

মঙ্গলবার(২৬ নভেম্বর) বিকেলে শহরতলীর ওই বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বাড়িটিতে স্বজনদের আনাগোনা। সানোয়ার নিখোঁজ ও ফিরে আসার খবরে দেখতে আসছেন অনেকে। কিন্তু এখনও পুরোপুরি জ্ঞান ফিরেনি তার। তাকে দেখেই সকলেই আবেগাপ্লুত। ওই যুবকের মা শাহেদা বেগম বলেন, আমাগো অভাবের সংসার। দিনমুজুরের কাজ করে আগে যে টাকা আয় হতো তা দিয়ে সংসার চালানো কষ্ট হতো। পরে গত এপ্রিল মাসে এক লক্ষ টাকা কিস্তিতে তুলে এই গাড়িটি কিনে। প্রতি সপ্তাহে ২৬’শ টাকা কিস্তি দেয়া লাগে, এখনও তা শোধ হয়নি। সানোয়ারের বরাদ দিয়ে তিনি বলেন, গত রোববার দুপুরে খাওয়া-দাওয়া করে গাড়ি বের হয়েছিল। এরপর শহরের ডায়াবেটিস হাসপাতালের পাশ থেকে ৩’শ টাকা ভাড়া রিজার্ভে পাঁচজন যাত্রীকে নিয়ে সদরপুরের কৃষ্ণপুরের দিকে যায়। এরপর থেকে ওর মোবাইলও বন্ধ পাওয়া যায়। এরমধ্যে গতকাল সোমবার রাত ৯ টার দিকে বাড়িতে ফিরে আসে। কিন্তু কোনো কথা বলছিল না, দেখতে পাগলের মতো। এখনও অসুস্থ।

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে সানোয়ার হোসেন বলেন, শহরের ডায়াবেটিস হাসপাতালের পাশ থেকে আমার গাড়িটি রিজার্ভ ভাড়া করে সদরপুরের কৃষ্ণপুরের ভেতরে নামিয়ে দিতে বলে। তাঁরা ডাক্তার দেখাতে এসেছে বলে জানায়। পরে দুইজন বোরকা পড়া নারী ও তিনজন পুরুষ গাড়িতে উঠে। আমার পাশে একজন ছেলে বসে। যাওয়ার সময় ও আশপাশের ভিডিও করে। এক পর্যায়ে কৃষ্ণপুর বাজারের ব্রিজ পাড় হলে ওই ভিডিও আমাকে দেখতে বলে, কেমন হয়েছে জানতে চায়। আমি তখন দেখতে চাইনি। এভাবে ফাঁকা রাস্তায় নিয়ে জোর করেই আমার মুখের কিনারে এনে ভিডিও দেখায়। এরপরই আমার মাথা ঘুরাতে থাকে। তখন বিষয়টি বুঝতে পেরে একজনকে লাথি দিয়ে ফেলে দিয়েছিলাম এবং ধস্তাধস্তিও হয়। এরপর আর কিছু মনে নেই। ওই যুবক আরও বলেন, এরপর আমি রাস্তায় পড়েছিলাম। রাতে স্থানীয় একজন তাঁর বাড়িতে নিয়ে যায়। পরেরদিন একটু সুস্থ হলে দেখি আমি ওই বাড়িতে এবং দেখি আমার গাড়ি, কাছে থাকা তিন হাজার টাকা ও মোবাইল কিছুই নেই। তখন ওই বাড়ির লোকজনকে আমি সব খুলে বলি। এরপর আমাকে কিছু ভাড়ার টাকা দিলে বাড়িতে ফিরে আসি। এ সময় তিনি কেঁদে কেঁদে আকুতি করে বলেন, আমার গাড়িটি যেন প্রশাসন উদ্ধার করে এনে দেয়। নইলে কিস্তির টাকা আর সংসার চালাবো কীভাবে। থানায় দেয়া সাধারণ ডায়েরিটির দায়িত্ব পড়ে এসআই তফিউজ্জামানের ওপর।

এ বিষয়ে কোতোয়ালী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) তফিউজ্জামান বলেন, থানায় সাধারণ ডায়েরি(জিডি)হওয়ার পর শুনেছি ওই যুবক ফিরে এসেছে। পুরোপুরি সুস্থ হলে তাঁর সাথে কথা বলে তদন্তে নামা হবে। বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দেখাও হবে। আমরা চেষ্টা করবো তাঁর গাড়িটি উদ্ধার করে ফেরত দেয়ার জন্য।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2023
error: Content is protected !!