শুভ মহালয়া শব্দটির সাথেই আমরা সবাই কমবেশী পরিচিত। কিন্তু কেন এই শুভ মহালয়া! আর এ শুভ মহালয়া আসার সাথে সাথেই সবাই দুর্গাপূজার দিনক্ষণ গোনা শুরু করে দেন। চন্ডীপাঠের মাধ্যমে দুর্গা পূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। আগামি ৮ অক্টোবর থেকে দুর্গা পূজা শুরু হচ্ছে।
আশ্বিন মাসের শুক পক্ষের ষষ্ঠ থেকে দশম দিন পর্যন্ত শারদীয়া দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়। এই পাঁচটি দিন যথাক্রমে ‘দুর্গাষষ্ঠী’, ‘মহাসপ্তমী’, ‘মহাষ্টমী’, ‘মহানবমী’ ও ‘বিজয়াদশমী’ নামে পরিচিত। আশ্বিন মাসের শুক পক্ষটিকে বলা হয় ‘দেবীপক্ষ’। আর এর শুরু হয় মহালয়ার দিন থেকে।
এবার গোপালগঞ্জ মুকসুদপুর উপজেলার পৌরসভা এবং ১৬ ইউনিয়নে মোট ২৯৩টি পূজা মণ্ডপে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় সার্বজনীন উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজার প্রস্তুতি চলছে পুরোদমে। কয়েকটা দিন পরই শুরু হবে এই উৎসব। প্রতিমা ও পূজা মণ্ডপ তৈরী এবং সাজসজ্জার শেষ মূহুর্তের প্রস্তুতি চলছে মন্দিরে। ধর্মাবলম্বীদের ঘরে ঘরে শুরু হয়েছে উৎসবের আমেজ। উৎসবকে কেন্দ্র করে নিñিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে মুকসুদপুরের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এ লক্ষ্যে ২৪ সেপ্টেম্বর উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পূজা মণ্ডপের সভাপতি-সম্পাদকদের নিয়ে আইনশৃঙ্খলা সভার আয়োজন করা হয়। সভায় উপজেলার সকল ইউনিয়নের চেয়ারম্যানগণ আমন্ত্রিত ছিলেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন থানার অফিসার্চ ইনচার্জ মো.মোস্তফা কামাল। বক্তব্য রাখেন উপজেলা পূজা উৎযাপন কমিটির সভাপতি এবং উজানী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শ্যামল কান্তি বোস, সাধারণ সম্পাদক উত্তম কুমার দাস, পশারগাতী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান মীর, মহারাজপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যন সালাউদ্দিন, ননীক্ষীর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রনি মিয়া, পুজা মণ্ডপের সভাপতি বিধান পান্ডে সহ অনেকে। হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষ্যে নতুন করে সাজানো হচ্ছে ধর্মীয় স্থান-মন্দির। মুকসুদপুর উপজেলার পৌরসভা এবং ১৬টি ইউনিয়নে বিভিন্ন গ্রামে মোট ২৯৩টি পুজা মন্ডপে চলছে মৃৎশিল্পদের প্রতিমা গড়ার ব্যস্ত সময়। আর মন্দিরের প্রতীমাগুলোকে সাজানো হচ্ছে বাহারি রঙে প্রতিকী চিত্রে। মুকসুদপুর সদর মন্দির, কমলাপুর বৈরাগির আখড়া, কমলাপুর নিতাই দত্তর বাড়ি, কৃষ্ণাদিয়া বারইপাড়া বটতলা সার্বজনীন দূর্গামন্দির, সালিনাবক্স পশ্চিমপাড়া, দাসেরহাট ভ্রমর গ্রাম সার্বজনিন দূর্গামন্দির, জলিরপাড় বাজার মন্দিরে দেখাগেছে নতুন সাজের সমাপনী আয়োজন। দিনে-রাতে এসব এলাকায় বইছে উৎসবমুখর পরিবেশ।
এ ব্যপারে মুকসুদপুর থানার ওসি মোস্তফা কামাল জানান, পূজার প্রস্তুতি থেকে প্রতিমা বিসর্জনসহ দুর্গাপূজার সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ, আনাসার ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সতর্ক থেকে দায়িত্ব পালন করবে। তিনি আরও বলেন, এই উৎসবকে কেন্দ্র করে যাতে কোন মহল আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাতে না পারে সে বিষয়ে সতর্ক রযেছে পুলিশ। মুকসুদপুর উপজেলা আনসার ভি,ডি,পি কর্মকর্তা মো: সাইফুল ইসলাম জানান মন্দিরের সার্বক্ষণিক নিরাপত্তায় একটি আনসার দল দায়িত্ব পালন করবে।
দূর্গাপূজার প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে চাইলে মুকসুদপুর পুজা উৎযাপন কমিটির সভাপতি শ্যামল কান্তি বোস জানান, সকল ইউনিয়নের উদযাপন কমিটির সভাপতিদের নিয়ে আলোচনা সভা করেছেন। সভায় দুর্গাপুজার সময় নিজ নিজ এলাকার সকল মন্দিরের নিরাপত্তা এবং পুজা অর্চনার কাজ সঠিকভাবে পালনে মন্দিরের পবিত্রতা রক্ষা করার জন্য সকলকে অনুরোধ করা হয়। উল্লেখ্য্যআগামী ৯ অক্টবর থেকে ষষ্ঠি পূজা শুরু হয়ে ১৩ অক্টোবর বিজয় দশমী পুজার মধ্যে দিয়ে দুর্গাপুজা আনুষ্ঠাকিতা শেষ হবে।