1. kazi.rana10@gmail.com : Sohel Rana : Sohel Rana
  2. jmitsolution24@gmail.com : support :
শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫, ০৫:০১ অপরাহ্ন

যান্ত্রিক ছোঁয়ায় হারিয়ে যাচ্ছে গ্রাম বাংলার ঘোড়ার গাড়ি

সনতচক্রবর্ত্তী
  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ২৯ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪
  • ২৮১ Time View

একসময় আবহমান বাংলার ঐতিহ্যবাহী বাহন হিসেবে ঘোড়া ও গরুর গাড়ির প্রচলন ছিল। গ্রামবাংলায় ঘোড়া ও গাড়িই ছিল যোগাযোগের একমাত্র বাহন। কালের গ্রাসে আধুনিকতার স্পর্শে ঐতিহ্যবাহী ঘোড়ার গাড়ি এখন শুধুই অতীতের স্মৃতি। আধুনিক যান্ত্রিক যানবাহনের যাতাকলে পিষ্ট হয়ে বর্তমানে প্রায় বিলুপ্তির পথে ঘোড়ার গাড়ি! ইঞ্জিনের স্পর্শে আবহমান গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী অনেক যানবাহনই কালপরিক্রমায় পুরোপুরি বিলুপ্ত হয়ে গেছে। সময় অতিবাহিত হবার সাথে সাথে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যের ধারক—বাহক অনেক বাহনেরই আমূল পরিবর্তন, আধুনিকায়ন সাধিত হয়েছে। আবার ঐতিহ্যবাহী অনেক বাহনই হারিয়ে গেছে দৃশ্যপট থেকে। তেমনি মান্ধাতার আমলে দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি ঘোড়ার সাহায্যে চলমান ঘোড়ার গাড়ি বহুবিধ কারণে বর্তমানে হারিয়ে যেতে বসেছে দৃশ্যপট থেকে।

কয়েক বছর আগেও কালে ভাদ্রে দু’একটি ঘোড়ার গাড়ির দেখা মিললেও বর্তমানে তা যেন ডুমুরের ফুল। যা এক সময় অনেকের ছিলো বংশ পরম্পরায়।দিন পরিবর্তন এর সঙ্গে সঙ্গে গ্রামবাংলার ঐতিহ্যের ধারকবাহক অনেক বাহনেরই আমূল পরিবর্তন, আধুনিকায়ন হয়েছে। আজ শহরের ছেলে—মেয়েরা তো দূরে থাক গ্রামের ছেলে—মেয়েরাও ঘোড়ার গাড়ির সঙ্গে খুব একটা পরিচিত না। এক সময় এর জনপ্রিয় গান, ওকি গাড়িয়াল ভাই—কত রব আমি পন্থের দিকে চাইয়ারে’———মাঠে ঘাটে পথে প্রান্তরে এমন গান আর শোনা যায়না। কথাটি গানের লাইন হলেও এক সময় তা বাস্তব ছিলো। কারণ গ্রাম—গঞ্জে গেলেও এখন এমন ঘোড়ার গাড়ি দেখা পাওয়া যায় না। মানুষ এক সময় যা কল্পনা করেনি তাই এখন পাচ্ছে হাতের কাছেই ইট—পাথরের মত মানুষও হয়ে পড়ছে যান্ত্রিক মানুষ তার নিজস্ব ঐতিহ্য হারিয়ে ফেলছে।

তারই ধারাবাহিকতায় এক সময়ের ব্যাপক জনপ্রিয় গ্রাম—বাংলা ও বাঙালির ঐতিহ্য এবং যোগাযোগ ও মালামাল বহনের প্রধান বাহন ঘোড়ার গাড়ি। কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাবার পথে। যা একসময় ফরিদপুর জেলার বিভিন্ন উপজেলায় ঐতিহ্যবাহী ঘোড়ার গাড়ি বাহনের সরগরম অস্তিত্ব ছিল। ছিল সর্বত্র এই ঘোড়ার গাড়ির কদর খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ফরিদপুরের নয়টি উপজেলায় এক সময় গ্রামগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী বাহন ছিল গরু, মহিষের ও ঘোড়ার গাড়ি। প্রযুক্তির কারণে দিনে দিনে হারিয়ে যাচ্ছে গরু কিংবা ঘোড়ার গাড়ি ও গাড়িয়াল পেশা। দিন আর সময় বদলানোর সঙ্গে সঙ্গে এখন এসব গাড়ি স্থান পেয়েছে সংবাদপত্র ও বিভিন্ন বইয়ের পাতায়। তবে ফরিদপুরে চরাঞ্চলের গ্রামসহ কিছু কিছু জায়গায় এখনোও দেখা মেলে গরু—মহিষ আর ঘোড়ার গাড়ি। এসব গাড়ি যারা চালান তাদের বলা হয় গাড়িয়াল। তবে পেশাদার গাড়িয়াল খুঁজে পাওয়া এখন দুষ্কর। জেলার বোয়ালমারী উপজেলার ময়না হাই স্কুলের সামনে থেকে কথা হয় আলী আকবরের সাথে তিনি বলেন , আমাদের পূর্বপুরুষেরা ঘোড়ার গাড়ি চালাত । তখন আমাদের অনেকগুলো ঘোড়া ছিল।

কিন্তু ঘোড়ার খাবারের দাম বাড়ায়, একটা একটা করে ঘোড়া বিক্রি করে এই ব্যবসা ছোট করেছি। এখন আছে কেবল একটি ঘোড়া। আমিই চালাই, আমার ছেলে লেখাপড়া করে, সে এই কাজ করতে চায় না। তিনি বলেন, আমাদের পূর্বপুরুষের ঘোড়ার গাড়ি এখানেই হয়তো শেষ হয়ে যাবে। তিনি আরও বলেন,আমি বুঝতে পারার পর এই পেশায় আছি। এখনও ঘোড়ার গাড়ি চালিয়ে জীবন জীবিকা নির্বাহ করছি। বর্তমানে ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা আয় হয়, তারপরও পরিবার পরিজন নিয়ে চলে যাচ্ছে তাদের জীবন। এছাড়া বিভিন্ন জায়গায় ঘোড়া দৌড় প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে অনেক টাকা উপার্জন করি।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2023
error: Content is protected !!