দিনে প্রি-ক্যাডেট স্কুলের শিক্ষক ও ইলেকট্রিক মিস্ত্রি, আর রাতে ভঙ্কংকর ডাকাতএমন চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ পেয়েছে ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলায়। সম্প্রতি সংঘটিত দুটি ডাকাতি মামলার তদন্তে মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে রয়েছে একজন স্কুল পরিচালক এবং একজন ইলেকট্রিক মিস্ত্রি, যারা ছদ্মবেশে ডাকাতির নেতৃত্ব দিতেন।
মঙ্গলবার দুপুরে প্রেস রিলিজের মাধ্যমে এই তথ্য নিশ্চিত করেন ভাঙ্গা থানার কর্মকর্তারা। গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে ডাকাতিতে ব্যবহৃত একটি প্রাইভেটকার এবং পাঁচ ভরি স্বর্ণালঙ্কার জব্দ করা হয়েছে। গ্রেপ্তার হওয়া ডাকাতরা হলেন ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার শ্রীরাঙ্গাল গ্রামে বাসিন্দ মোক্তার হুসাইন ওরফে মোকা (৪৫)। তিনি প্রি-ক্যাডেট স্কুলের পরিচালক ও শিক্ষক। তিনি ‘দি ন্যাশনাল
ইসলামিক প্রি-ক্যাডেট স্কুল’ পরিচালনার আড়ালে ডাকাতি করতেন।
ভাঙ্গার পূর্ব সদরদী গ্রামে বাসিন্দা কিবরিয়া শেখ (৩৫)। তিনি পেশায় ইলেকট্রিক মিস্ত্রি, গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার চরবাহাড়া গ্রামের বাসিন্দা শহিদুল ওরফে শহিদ (৪৫) ও ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার শ্রীনগর গ্রামের বাসিন্দা পার্থ রায় (৪২)।
পুলিশ জানায়, গত সোমবার (৭ জুলাই) রাতে ভাঙ্গা উপজেলার চুমুরদী ইউনিয়নের পূর্ব সদরদী গ্রামে দুটি প্রবাসীর বাড়িতে ডাকাতি হয়। ডাকাতরা গৃহকর্তা ও পরিবারের পাঁচ সদস্যকে কুপিয়ে জখম করে মালামাল লুট করে নেয়। এই ঘটনায় ভাঙ্গা থানায় ডাকাতি মামলা (মামলা নং-৭) হয়।
পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় অভিযান চালিয়ে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রধান দুই পরিকল্পনাকারী মোক্তার হুসাইন ও কিবরিয়া শেখকে গ্রেপ্তার করে। তারা স্বীকার করে, দিনের পেশার আড়ালে রাতে ডাকাতি করত এবং নিজেরাই দল গঠন করত। স্থানীয়ভাবে পরিচিত মুখ হওয়ায় ছদ্মবেশে নিজেরাই পরিকল্পনা ও ডাকাতি সংঘটিত করত। এর আগে গত ৩০ মে আলগী ইউনিয়নের শাহামুল্লুকদী গ্রামে একই রাতে দুটি বাড়িতে ডাকাতি সংঘটিত হয়। সেই মামলার সূত্র ধরে পুলিশ গোপালগঞ্জের শহিদুল ও বোয়ালমারীর পার্থ রায়কে গ্রেপ্তার করে এবং তাদের কাছ থেকে পাঁচ ভরি স্বর্ণালঙ্কার উদ্ধার করে।
এই ঘটনায় ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশরাফ হোসেন বলেন, ‘পূর্ব সদরদী গ্রামে ক্যাডেট স্কুল পরিচালনাকারী মোক্তার ও ইলেকট্রিক মিস্ত্রি কিবরিয়া এরা ছদ্মবেশে ডাকাতির পরিকল্পনা করে বিভিন্ন এলাকা থেকে ডাকাত দলকে হায়ার করে নিজেই মুখোশ পরে ডাকাতি সংঘটিত করে। ডাকাতরা হায়ারে ভাঙ্গা অঞ্চলে প্রবেশের বিষয়টি গোপন সংবাদ পেয়েছিলাম, সেই আলোকে আমাদের পুলিশ উপজেলার বিভিন্ন পয়েন্টে প্রস্তুত ছিলাম, কিন্তু ডাকাত দলেরা ছদ্মবেশে পাটক্ষেতে লুকিয়ে থাকার কারণে আমাদের টার্গেট মিস হয়েছে। স্থানীয়দের সহায়তায় ডাকাতি করতে পেরেছে। অন্যান্য ডাকাতদের গ্রেপ্তার করতে পুলিশ তৎপর রয়েছে।’