ফরিদপুরে পদ্মা নদীর দুই তীরবর্তী জেগে ওঠা দুর্গম বালুচরে উন্নত জাতের বাদাম চাষ করে প্রথম সাফল্য মিলেছে কৃষকরদের। সেই সাথে চরাঞ্চলের কৃষকরা ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখছে এবং বাদামের বাম্পার ফলনের আশা করছে।
সরেজমিনে ঘুরতে গিয়ে দেখা যায়, ফরিদপুর সদর উপজেলার ডিক্রিরচরের পদ্মা নদীর বুকজুড়ে দুই তীরের দুর্গম নতুন চরাঞ্চলের অসংখ্য বালুচরে চাষ হচ্ছে (বারি) ৮ ও ৯ জাতের চিনা বাদাম। যেখানে এই চরে আগে ছিল শুধু কাশফুলের বাগান। সেখানে আজ বাদাম চাষ করে কৃষকরা নতুন সম্ভাবনা দেখছে।
কৃষকদের সাথে কথা হলে জানাযায়, পদ্মার নতুন চরাঞ্চলে কৃষকদের সাফল্যের পিছনে রয়েছে, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের ফরিদপুর সরেজমিন গবেষণা বিভাগ।
কৃষকের আয় বৃদ্ধি ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে চিনাবাদাম উৎপাদন কমসূচীর অধীনে, সরেজমিন গবেষণা বিভাগের তত্ত্ববধানে, মানসম্পন্ন উচ্চ ফলনশীল চিনাবাদামের বীজ ও সার কৃষকের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। বারি চিনাবাদাম ৮ ও ৯ এবং পাশাপাশি সাথী ফসল হিসেবে (বারি) তিল- ৪ ও ৬ জাতের বীজ কৃষকদের মাঝে সরবরাহ করা হয়েছে।
চরাঞ্চলের কৃষকদের বাদাম চাষে ফলন বেশি হওয়ায় এবং অন্যান্য ফসলের তুলনায় বাদাম চাষে লাভ বেশি ও বাজারে ভালো চাহিদা থাকায় দিন দিন আগ্রহ বাড়ছে। প্রতি মণ বাদাম সাড়ে ৪ হাজার টাকা থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত বাজারদরে বিক্রি হয়ে থাকে। কৃষকরা মূলত তাদের পরিত্যক্ত জমিতে বাদাম চাষ করে থাকেন। এ ছাড়াও বাদামের গাছ জমিতে পচে জমির উর্বরা শক্তি বাড়ে। এতে অন্যান্য ফসলের উৎপাদন ভালো হয়। বিষয়টা কৃষকরা মাথায় রেখে বাদাম চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন।
বাদাম চাষী রাসেল সিকদার বলেন,
বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট সরেজমিন বিভাগ ফরিদপুরের সহযোগিতায় প্রথমবারের মতো সদর উপজেলার ডিক্রিরচরে পদ্মা নদীর দুই তীরবর্তী জেগে ওঠা দুর্গম বালুচরে (বারি) চিনাবাদাম ৮ ও ৯ জাতের বীজ নতুন চরাঞ্চলে পরীক্ষামূলকভাবে চাষ করা হয়েছে। এবার আমি ৮ বিঘা জমিতে বাদামের আবাদ করেছি। বিঘা প্রতি ৭ থেকে ৮ মণ বাদাম পাওয়ার আশাবাদী। সরকারিভাবে সাহায্য সহযোগিতা পেলে সামনে আরও বেশি করে আবাদ করবো।
বাদাম চাষী বিল্লাল জানান, সরেজমিন গবেষণা বিভাগের সহযোগিতায় প্রথমবারের মতো নতুন দুর্গম বালুচরে পরীক্ষামূলকভাবে (বারি) চিনাবাদাম ৮ ও ৯ জাতের বীজের চাষ করেছি। আমি ১৫ বিঘা জমিতে বাদামের আবাদ করেছি।
বাদাম চাষী হারুনর রশীদ বলেন,
সরেজমিন গবেষণা বিভাগ থেকে
আমরা বীজ, সার, কীটনাশকের পাশাপাশি পরামর্শ পেয়েছি। এবার আমরা ডিক্রিরচরে ১৫০ বিঘা জমিতে চিনাবাদাম ৮ ও ৯ জাতের বীজ চাষ করছি। তবে খরার কারণে সেচের ব্যাবস্থা না থাকায় কিছুটা অসুবিধা হলেও ফলন ভালো হয়েছে। বাদামের ব্যাপক সফল হয়েছে এবং এতে আমরা অনেক খুশি।