ফরিদপুরের সালথা উপজেলায় ৪৭ নং বাউশখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জমি বেদখলের কারণে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বাধাগ্রস্ত হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয় প্রশাসনকে এ বিষয়ে অবহিত করেও কোনো সুরাহা মিলছে না। ফলে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ থেকে শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত হচ্ছেন বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেন। এছাড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দখলকৃত জায়গা মুক্ত করতে একাধিকবার অভিযানের উদ্যোগ নিলেও অজানা কারণে তা বন্ধ হয়ে যায় বলেও তারা জানায়।
জানা গেছে, সালথা উপজেলার বাউশখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনের জায়গা অবৈধভাবে দখল করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছে কিনা তা বোঝা মুশকিল হয়ে পড়েছে। সম্প্রতি বাউশখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ‘বাউন্ডারি দেয়াল’ ও গেট নির্মাণের জন্য প্রায় ৯ লাখ টাকা বরাদ্দ আসে। কাজের টেন্ডার হলেও প্রভাবশালী অবৈধ দখলদারদের কারণে নির্মাণ কাজ সম্পূর্ণ করতে পারেন না স্কুল কর্তৃপক্ষ। এসব অবৈধ দোকান ঘর উচ্ছেদের জন্য স্থানীয় প্রশাসনকে জানিয়েও কোনো সুরাহা হচ্ছে না। ফলে ‘বাউন্ডারি দেয়াল’ সম্পূর্ণ না হওয়ার কারণে স্কুলের নানা সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন এলাকাবাসী। দীর্ঘ কয়েক বছর থেকে এ জায়গা উচ্ছেদের একাধিকবার উদ্যোগ নেওয়া হলেও অজানা কারণে সেটি ভাটা পড়ে যায়। এতে করে উপজেলার গ্রামাঞ্চলের স্বনামধন্য এই বিদ্যালয়টি উন্নয়ন না হওয়ায় কোমলমতি শিক্ষার্থীরা শিক্ষার পরিবেশ থেকে বঞ্চিত,আর পাঠদানে নানা ভোগান্তিতেও পড়ছেন শিক্ষকরা।
সরকারি এই জায়গায় অবৈধভাবে দখল করেন বাউশখালী গ্রামের মৃত বাকা খানের ছেলে ফুরকান খান ও তার আপন ভাইয়েরা।
ফুরকান খান বলেন, স্কুলের বাউন্ডারি দেয়াল মধ্যে আমাদের ২ শতাংশ জমি রয়েছে। কাগজ পাতি রয়েছে বলে, আমার ভাই মামলা দিয়েছে ।
ইমদাদ ফকির নামে একজন ব্যবসায়ী তিনি বলেন, স্কুলের দেওয়ালের ভিতরে জমি রয়েছে। আমি আমার জায়গায় বালু রাখছি। যদি সমস্যা হয় সরিয়ে ফেলবো।
দেশের সকল স্কুলকলেজ গেটের সামনে কোনো স্থায়ী-অস্থায়ী দোকান না রাখার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং পুলিশ বাহিনীকে সুপারিশ করা হয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির ১৮তম বৈঠকে। তবে এ সুপারিশ বাস্তবায়নে সালথা উপজেলায় দেখ গেল ভিন্ন চিত্র।
বাউশখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী বলে- আমাদের স্কুলের ‘বাউন্ডারি সামনে বালু ইট রেখে স্কুলের পরিবেশ নষ্ট করছে। স্কুলের পাশ দিয়ে দোকান ঘর থাকায় শ্রেণিকক্ষে কোনো আলো-বাতাস আসে না। সেজন্য ক্লাস করতে সমস্যায় পড়তে হয়।
আরেক শিক্ষার্থী জানায়, স্কুলের পাশে দোকান ঘর থাকায় সবসময় শোরগোল লেগে থাকে। এতে ভালোভাবে ক্লাস করা যায় না। বাউন্ডারি সম্পূর্ণ হলে আমাদের জন্য ভালো হয়।
শিক্ষার্থী অভিভাবক বলেন, স্কুলের পূর্ব পাশে যে দোকানটা রয়েছে শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য সমস্যা।
ছোট একটা গেট দিয়ে বাচ্চাদের স্কুলে প্রবেশ করতে হয়।
বাউশখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক ওহাব বলেন, ৫২ শতক জমির মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে প্রতিষ্ঠানের সামনের অংশে প্রায় ৪ শতক জমি বেদখল। অবৈধ এসব দোকান ঘর থাকায় আমাদের নানা রকমের সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। সবসময় শব্দ দূষণ হয়ে থাকে। এতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ভোগান্তিতে রয়েছে। বাউন্ডারি ওয়ালের জন্য বরাদ্দ আসলেও অসম্পন্ন থেকে যায়। স্কুলের বাউন্ডারির মধ্যে যে ঘরটি রয়েছে স্কুলের অংশ,কিন্তু একটি মামলা চলমান যার কারণে বাউন্ডারি কাজটি সম্পন্ন করতে পারিনি । বিষয়টি প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। কিন্তু দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি নেই।
সালথা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বলেন, আমি এ বিষয়ে এই প্রথম শুনলাম এবং আগে কোন লিখিত অভিযোগ পাইনি। যেহেতু বিষয়টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অভিযোগ পেলে অবশ্যই পদক্ষেপ নেব।