ঈদুল ফিতরের এখনো বাকি ২২ দিন। এরই মধ্যে বিভিন্ন স্থানে জমে উঠেছে ঈদ বাজার। মূলত ঝামেলা এড়াতে আগেভাগেই অনেকে ঈদের কেনাকাটা করে ফেলছেন। তাই রমজানের শুরুতেই ঈদের বাজার জমজমাট হয়ে উঠেছে।এবার রোজার শুরুতেই চোখে পড়ার মতো ভিড় দেখা গেছে শহরের বিভিন্ন বিপনী বিতানগুলোতে। যারা ঈদে পরিবারের সদস্যদের কেনা কাটার ঝামেলা এড়িয়ে স্বস্তিতে থাকতে চান তারা রমজানের শুরুতেই সেই কাজটি সারতে বিপনী বিতানগুলোতে ভিড় করছেন।
শহরের বিভিন্ন বিপনী বিতানগুলোতে মধ্যবিত্ত ও নিম্ন নিম্নবিত্ত মানুষের সরব উপস্থিতি।বিপণিবিতানগুলোতে ভিড় বাড়ছে, শিশু থেকে বৃদ্ধ সবার সরব উপস্থিতি দেখা গেছে। এবার ভালো ব্যবসা হবে বলে প্রত্যাশার কথাও জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, নিউ মার্কেট, চকবাজার, হাজী শরিয়াতুল্লাহ বাজারসহ বিভিন্ন মার্কেটে ঘুরে ঘুরে পছন্দমতো পোশাক কিনছেন ক্রেতারা। কেউ কেউ পরিবারের সবাইকে নিয়ে এসেছেন ঈদবাজার করতে।
ব্যবসায়ীরা জানালেন, গত দুই ঈদ বাজারের তুলনায় এবারে হয়তো ভালো ব্যবসা হবে আমাদের। আমরা যে পণ্যগুলো নিয়ে হাজির হয়েছি; তা ভোক্তাদের নাগালের মধ্যে।চকবাজার কাপড় ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতা সাদ্দাম হোসেন জনি বলেন, এবছর রোজার শুরুতেই ব্যবসা জমতে শুরু করেছে। ক্রেতাদের উপস্থিতি চোখে পড়ার মত। মধ্যবিত্ত এবং নিম্ন মধ্যবিত্ত মানুষেরা বেশ কেনাকাটা করছেন।
সোমবার (১০ মার্চ) দুপুর থেকে বিকাল পর্যন্ত ফরিদপুর শহরের বিভিন্ন মার্কেট ঘুরে দেখা গেছে, ঈদ উপলক্ষে এসব মার্কেটে বেচাকেনা চলছে পুরোদমে।কেনাকাটায় নারীদের পাশাপাশি পুরুষেরাও নেই পিছিয়ে। তাছাড়া নিত্য-নতুন ডিজাইনের ঝলেমলে বাহারি পোশাক চলে আসায় কাস্টমারদের চাহিদা বাড়ছে।
নিউ মার্কেটের ব্যবসায়ী ও দোকানিরা জানান, বেচাকেনার শীর্ষে রয়েছে ছেলেদের পাঞ্জাবি, লুঙ্গি, শার্ট-প্যান্ট, মেয়েদের শাড়ি, চুড়ি, থ্রি-পিস ও বাচ্চাদের পোশাক ইত্যাদি।এবার রমজানে শুরুর দিক থেকেই প্রায় সব দোকানে বেচাকেনা ভালো।
এ বিষয়ে বিপ্লব সরকার নামে এক দোকানি জানান, অন্যান্য বছর থেকে এ বছর বেচাকেনা ভালো। তবে নিম্নবিত্তদের বেশিরভাগের ভরসা ফুটপাত।কেননা ফুটপাতে যে পণ্যটি তিনশ থেকে চারশ টাকার মধ্যে পাওয়া যায়, অভিজাত মার্কেটে সেটির দাম অনেক বেশি।এদিকে শহরের আদর্শ মার্কেট ও নিউ মার্কেটের সামনে বিভিন্ন ভাসমান দোকান এবং গোয়ালচামটের বাইতুল মোকাদ্দেম মার্কেট, জনতা ব্যাংকের মোড়ে অস্থায়ী কিছু দোকান ও আশপাশের দোকানগুলোয় ভালো বেচাকেনা হতে দেখা যায়। এর পাশাপাশি শহরের মোবাইল ফোনের দোকানগুলোয়ও বেচাকেনা তুলনামূলক ভালো হচ্ছে। এই সুযোগে বিক্রেতারা বেশ কিছু মোবাইলে ছাড়ের অফার দিয়েছেন।অন্যদিকে শহরে জুতার দোকানগুলোয় বেচাকেনা বাড়ছে।
দোকানিরা বলছেন, সর্বনিম্ন ৩৫০ টাকা থেকে শুরু করে ৩ হাজার টাকার মধ্যে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের জুতা বিক্রি হচ্ছে, যাতে সাধারণ লোক সব ধরনের প্রোডাক্টগুলো কিনতে পারে।ফরিদপুর শহরতলি থেকে আসা এক ক্রেতা জানান, বাজারের পণ্যের পসরা বেশ, কিন্তু তুলনামূলক দাম বেড়েছে।
রমজানের শুরুতেই কেনাকাটা করতে আসার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘দিন যত যাবে, মার্কেটে ভিড় তত বাড়বে, এর বাইরেও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি খুব একটা সুবিধাজনক না, আর এই কারণেই কেনাকাটা আগেভাগে শেষ করতে চাচ্ছি।’সব মিলে ফরিদপুরের ঈদের বাজার চাঁদ রাত পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন দোকানিরা।
এবারের ঈদের ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের কেনাকাটার নিরাপত্তার নিশ্চিত করার প্রসঙ্গে ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শৈলেন চাকমা বলেন, আমরা প্রশাসন এবং পুলিশ প্রশাসনের নির্দেশ মোতাবেক শহরে যতগুলো বিপণিবিতান রয়েছে, সব জায়গাতেই নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ব্যবস্থা নিয়েছি। কোনো প্রকার ছিনতাই-রাহাজানি না হয়; সে ব্যাপারে আমরা সজাগ রয়েছি। সাদা পোশাকে আমাদের গোয়েন্দা নজরদারি সব বাজারেই জোরদার করা হয়েছে।