হঠাৎ করেই রোববার সন্ধ্যার পর ককটেল বিস্ফোরনের আওয়াজে কেঁপে ওঠে পুরো চাঁদপুর শহর। চাঁদপুর পুরানবাজার থেকে শুরু করে বাবুরহাট এলাকা পর্যন্ত এই তান্ডব চালায় নৈরাজ্য সৃষ্টিকারীরা। একদল উচ্ছৃঙ্খল যুবক দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মোটরসাইকেলে মহড়া দেয় পুরো শহর জুড়ে।
এসময় তারা হইহুল্লোড় করে সড়কের বিভিন্ন স্থানে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় এবং মানুষকে হুমকি ধমকি প্রদান করে। এই নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে (ফেসবুক) মোটরসাইকেলে মহড়া একটি ভিডিও পোষ্ট করে বিষয়টি জানান দেয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গতকাল ৮ ডিসেম্বর রোববার সন্ধ্যার পর একদল উচ্ছৃঙ্খল যুবক পুরো শহর জুড়ে এই পরিস্থির সৃষ্টি করে। আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লে পুলিশ প্রশাসন তাৎক্ষনিক পদক্ষেপ নিলে আতঙ্ক সৃষ্টিকারীরা সটকে পড়ে। সাথে টহলে নামে সেনাবাহিনীও। ঘটনার পর পুলিশ এবং সেনাবাহিনী শহরের প্রধান প্রধান সড়কে টহল দিতে দেখা যায়। এ বিষয়ে চাঁদপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. বাহার মিয়া জানান, ঘটনার তদন্ত চলছে এবং যারা এই বিস্ফোরণগুলোর সাথে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। পুলিশ আরও জানায়, শহরের প্রধান সড়কে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে এবং সন্দেহভাজনদের শনাক্ত করতে অভিযান চলমান রয়েছে। জানা যায়, চাঁদপুরে সাম্প্রতিক সময়ে চাঁদাবাজি, দখলদারি, সন্ত্রাস, মিথ্যা মামলা, হয়রানি ও অপপ্রচার এবং ভয়ভীতি প্রদর্শণের প্রতিবাদে ‘আমরা চাঁদপুরবাসী’ এর বেনারে সর্বস্তরের মানুষ একটি প্রতিবাদ কর্মসূচী পালন করার সিদ্ধান্ত নেয়। সেই কর্মসূচীকে বাঞ্চাল করার জন্যই মূলতঃ চাঁদাবাজি, দখলদারি, সন্ত্রাস, মিথ্যা মামলা, হয়রানি ও অপপ্রচার এবং সাধারণ মানুষকে ভয়ভীতি প্রদর্শণকারীরা। একই ভাবে আবারো নৈরাজ্য সৃষ্টি করছে বলে মনেকরছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীরা সাধারণ মানুষের প্রতিবাদ কর্মসূচীকে বাঞ্চাল করতে বিভিন্নভাবে ভয়ভিতি ও হুমকি ধমকি প্রদান করছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। তারা বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচী পালন করতে চাই। কিন্তু তারা আমাদেরকে বিভিন্নভাবে হয়রানি ও হুমকি ধমকি দিচ্ছে। আমরা এব্যাপারে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গতকাল সন্ধ্যার পর থেকে শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে মোটরসাইকেলে সওয়ার হয়ে দুর্বৃত্তরা ককটেল বিস্ফোরণ করতে থাকে। একে একে শহরের বিভিন্ন এলাকা ঝলসে ওঠে। বিশেষ করে নতুন বাজার ও পুরান বাজারে বিস্ফোরণগুলোর তীব্রতা ছিল বেশি। এই বিস্ফোরণগুলো স্থানীয় ব্যবসায়ী এবং সাধারণ জনগণের মধ্যে চরম আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। চাঁদপুরের সাধারণ মানুষ এই ধরনের ঘটনার বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, “এভাবে প্রকাশ্যে শহরে ককটেল বিস্ফোরণ এবং অস্ত্র নিয়ে মহড়ার ঘটানো খুবই দুঃখজনক। আমাদের সন্তানরা স্কুলে যায়, এমন পরিস্থিতিতে বাসায় থাকতে ভয় লাগছে।” এছাড়া, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন শহরের ব্যবসায়ী এবং সাধারণ নাগরিকরা। তারা প্রশাসনের কাছে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন।