ফরিদপুরের নগরকান্দা পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কুমার নদের পাড় দিয়ে সাড়ে ৬০০ মিটার সড়ক নির্মাণ কাজ এখনো শেষ হয়নি। ২০২২ সালে কাজটি শেষ হওয়ার কথা ছিল। ঠিকাদার মাত্র ৩৫০ মিটার সড়ক নির্মাণ করে কাজটি বন্ধ করে দেন। এরপর থেকে নির্মিত সেই ৩৫০ মিটার সড়ক ভেঙে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে সড়কটি দিয়ে যানবাহন চলাচল পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। এমনকি পায়ে হেঁটে চলাচলও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। দীর্ঘদিন ধরে সড়কটির অবস্থা বেহাল হলেও সংস্কার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না। আবার কাজটি শেষ করার আলামত দেখা যাচ্ছে না। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন পৌরসভার হাজারও বাসিন্দা।
নগরকান্দা পৌরসভা সূত্রে জানা গেছে, ৩ বছর আগে পৌরসভার জুঙ্গুরদী খাদ্যগুদাম থেকে কুমার নদের পাড় দিয়ে জুঙ্গুরদী খালপাড় পর্যন্ত সাড়ে ৬০০ মিটার আরসিসি সড়কের টেন্ডার হয় ২০২১ সালে। ২০২২ সালের ২৩ জুনের মধ্যে সড়কের নির্মাণ কাজটি শেষ করার নির্দেশনা ছিল। তবে স্থানীয়রা অনিয়মের অভিযোগ তোলায় কাজটি বন্ধ হয়ে যায়।
কাজের ঠিকাদার হাসিবুল হাসান আব্দুল্লাহ বলেন, ‘সাড়ে ৬০০ মিটার সড়কের মধ্যে ৩৫০ মিটার কাজ করেছি। পৌরসভা থেকে ঠিকমতো বিল না দেওয়ায় এবং স্থানীয়রা বারবার কাজ বন্ধ করে দেওয়ায় কাজটি সম্পন্ন করা সম্ভব হয়নি।
স্থানীয় বাসিন্দা বাবুল ও হেলাল উদ্দীন জানান, সড়কের পুরোপুরি কাজ শেষ হয়নি। অর্ধেক কাজ করা হয়েছে। তাও নির্মাণের মাত্র দেড় বছরের মাথায় সড়কটি ভেঙে নদে বিলীন হয়ে গেছে প্রায়। আগে কাঁচা রাস্তা থাকতে মানুষ ভালভাবে চলাচল করতে পেরেছে। কিন্তু পাকা সড়ক একবার ভেঙে গেলে যানবাহন চলাচল তো দূরের কথা, পায়ে হেঁটেও চলাও মুশকিল হয়ে পড়ে। মানুষ ঝুঁকি নিয়ে ওই সড়ক দিয়ে চলাচল করছে। এমন অবস্থায় জরুরি প্রয়োজনে ফায়ার সার্ভিস ও অ্যাম্বুলেন্স প্রবেশের সুযোগ নেই এ সড়ক দিয়ে। যে কারণে পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের দুর্ভোগের শেষ নেই। সড়কটি পুরোপুরি নির্মাণ ও সংস্কারের জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি।
নগরকান্দা পৌরসভার সাবেক মেয়র নিমাই চন্দ্র সরকার বলেন, ‘ঠিকাদার কাজে অনিয়ম করে বিধায় তার বিল বন্ধ করা হয়েছিল। তবে কাজ যতটুকু করেছে তার সমপরিমাণ বিল পরিশোধ করা হয়েছে।
নগরকান্দা পৌরসভা উপসহকারী প্রকৌশলী এসএম লুৎফর রহমান রানা বলেন, ‘কাজটি শেষ করার জন্য ঠিকাদারকে একটি চিঠি পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। তিনি যদি কাজটি করেন তাকে আমাদের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করা হবে। না করলে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) বিকেলে পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. মাসুম বিল্লাহ বলেন, ‘নির্মাণ কাজ সময় শেষ করার কথা ছিল ২০২২ সালে। কিন্তু ঠিকাদার কাজটি এখনো শেষ করেননি। কি কারণে তিনি কাজটি শেষ করেনি, তার জবাব চেয়ে আমরা একটি চিঠি দেব তাকে। চিঠির সঠিক জবাব ও কাজটি দ্রুত শেষ না করলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।