২১ মে অনুষ্ঠিতব্য ফরিদপুরে সালথা উপজেলা পরিষদ নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন মো. ওয়াহিদুজ্জামান। ফলে একক প্রার্থী হিসেবে মাঠে রইলেন মো. ওয়াদুদ মাতুব্বর। ভোটের মাত্র একদিন আগে রবিবার (১৯ মে) বিকেলে ফরিদপুর প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন ডেকে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর এ ঘোষণা দেন তিনি। সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর যুক্তি হিসেবে ওহিদুজ্জামান বলেন, প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব থেকে নির্দেশনা ছিল কোনো এমপি, মন্ত্রী নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করতে পারবেন না। আমার মাধ্যে একটা বদ্ধমূল ধারণা ছিল নির্বাচন নিরপেক্ষ হবে, লেভেল প্লেইং ফিল্ড থাকবে। কিন্তু দেখা গেল আমার মামলার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ও বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে ওয়াদুদ মাতুব্বরের পক্ষে সরাসরি সকল কলকাঠি নেড়েছেন এ আসনের সংসদ সদস্য শাহদাব আকবর চৌধুরী লাবু।
তিনি (সংসদ সদস্য) ওয়াদুদ মাতুব্বরের মুখপাত্র হিসেবে ও প্রধান সমন্বয়ক হিসেবে সব জায়গায় হস্তক্ষেপ করছেন। নেতাকর্মীদের বিভিন্নভাবে ‘কনভিন্স’ করছেন। বিভিন্ন আইনজীবী ও হাইকোর্টে গিয়ে তিনি ওয়াদুদ মাতুব্বরের পক্ষে মামলার তদবির পর্যন্ত করছেন। ওহিদুজ্জামান বলেন, এ মামলা থেকে শুরু করে ওয়াদুদ মাতুব্বরের সকল কার্যক্রম উনি (সংসদ সদস্য) নিজেই পরিচালনা করছেন। সেটা হয়তো ধরা ছোঁয়ার বাইরে। ঘরের ভেতর বসে করতেছেন। ক্যামেরার সামনে আসতেছেন না। এ নির্বাচনে সকল তৃনমূল নেতার সাথে এমপির যোগাযোগ এবং তার বাড়িতে এসেও অনেক মিটিং হয়েছে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এবং তার মামলা মোকাদ্দমার প্রধান তদবিরকারী সংসদ সদস্য শাহদাব আকবর চৌধুরী লাবু। এসব কিছু ভেবে পাশাপাশি সহিংসতা এড়াতে আমি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াচ্ছি। আমি এমপির সাথে সরাসরি সংঘাতে যেতে চাই না। সালথাকে একটি দাঙ্গাপ্রবণ অঞ্চল হিসেবে আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, আমার নিজের জীবনের নিরাপত্তা হুমকির মুখে। পাশাপাশি হুমকির মুখে রয়েছে আমার নেতা—কর্মী—সমর্থকদের নিরাপত্তা।
তাই আমি সংঘাতের পথে যেতে চাইনি। এ কারণে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছি। এদিকে গত ২৩ এপ্রিল মনোনয়নপত্র যাচাই—বাছাইয়ে নিজ স্ত্রীর নামে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান থাকায় চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. ওয়াদুদ মাতুব্বরের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়। পরে জেলা প্রশাসকের কাছে তিনি আপিল করলে সেখানেও তার মনোনয়নপত্র বাতিল হয়। পরে একক প্রার্থী হিসেবে মো. ওয়াহিদুজ্জামানকে চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। এরপর ওয়াদুদ মাতুব্বর মনোনয়নপত্র ফিরে পেতে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন। হাইকোর্ট গত ৫ মে তার রিট সরাসরি খারিজ করে দেন। পরে ওয়াদুদ মাতুব্বর আপিল বিভাগে আবেদন করেন। ১৩ মে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত তার মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করে প্রার্থিতা ফিরিয়ে দেওয়ার আদেশ দেন। ওই রায়ের বিরুদ্ধে ওয়াহিদুজ্জামান আপিল বিভাগে আবেদন করেন। কিন্তু সে আবেদনে রবিবার সাড়া দেননি আপিল বিভাগ। যে কারণে আগামী ২১ মে উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তবে রবিবার সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের রায়ের দিনেই নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন ওয়াহিদুজ্জামান। এখন একক প্রার্থী হিসেবে মাঠে থাকলেন ওয়াদুদ মাতুব্বর।