দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গোপালগঞ্জ-১ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী কাবির মিয়া ‘ঈগল’ প্রতীক বরাদ্দ পেয়েছেন। ওপর দিকে আগের মতো ফারুক খান পেয়েছে নৌকা। সোমবার নির্বাচন কমিশন থেকে প্রতীক বরাদ্দের সঙ্গে সঙ্গে গোপালগঞ্জ-১ আসনের বিভিন্ন এলাকায় কাবির মিয়ার সমর্থকদের মধ্যে তুমুল উচ্ছ¡াস শুরু হয়। উল্লাসে ও মিছিলে প্রকম্পিত হয়ে ওঠে নির্বাচনী এলাকার অসংখ্য অলিগলি। কাবির মিয়ার সমর্থনে রাস্তায় নেমে আসে হাজার হাজার জনতা। নির্বাচনী প্রচারণার প্রথম দিনেই তার পক্ষে ব্যাপক জনসমর্থন দেখাগেছে। সাধারণ ভোটারদের মাঝেও উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়েছে। তারাও কাবির মিয়ার পক্ষে আনন্দ- অনুভুতি প্রকাশ করেছে। আসছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দেশের আলোচিত স্বতন্ত্র প্রার্থীদের অন্যতম গোপালগঞ্জ-১ (মুকসুদপুর-কাশিয়ানি) নিয়ে গড়ে উঠা আসনের কাবির মিয়া। প্রতীক ঘোষণার সাথে সাথে তার সমর্থনে শহর থেকে গ্রাম পর্যন্ত মিছিলে-সেøাগানে প্রকম্পিত হয়ে ওঠে। বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ভেসে আসে, ‘কাবির মিয়ার মার্কা ঈগল মার্কা’, ‘এবার ভোটের মার্কা ঈগল মার্কা’, ‘উন্নয়নের মার্কা ঈগল মার্কা’ ইত্যাদি সেøাগান। তার জনপ্রিয়তার বিষয়টি এখন চায়ের টেবিলে আলোচনার ঝড় তুলেছে। রাজনীতি বিশ্লেষকরা বলছেন এবারের নির্বাচনে গোপালগঞ্জ-১ আসনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে, নতুন করে আসতে পারে কেউ। এদিকে নির্বাচনী এলাকার বিভিন্ন শ্রেনী-পেশার মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলার চেয়ারম্যান থাকাকালীন দীর্ঘদিন বিভিন্ন উন্নয়ন ও সেবামূলক কর্মকান্ডে কাবির মিয়া জড়িত ছিল। ফলে জনগণের কাছাকাছি থাকার সুবাদে ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। তবে সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার পর তার জনপ্রিয়তা তরতরিয়ে বেড়ে গেছে কয়েকগুণ, যা আগে ধারণা করা যায়নি। এলাকার সাধারন ভোটারদের দাবী, গোপালগঞ্জ-১ আসনে কাবির মিয়া এবারের নির্বাচনে বিপুল ভোট পেয়ে জয়ী হবেন। খোঁজ নিয়ে আরো জানা গেছে, এ আসনে টানা পাঁচ বার আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীক নিয়ে বিজয়ী সংসদ সদস্যেরও নিজস্ব ভোট ব্যাংক আছে। কিন্তু তার কাজে অসন্তুষ্ট আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীর সংখ্যাও কম নয়। তাদের ভোট নীরবে কাবির মিয়ার বাক্সে যেতে পারে বলে জানা গেছে। সাধারণ ভোটারদের দাবী, অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে গোপালগঞ্জ-১ আসনে স্বতন্ত্র এমপি প্রার্থী কাবির মিয়ার দখলে যাবে। আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন দলের নেতাকর্মীদের ঘরোয়া আলোচনায় ঈগল প্রতীকের জয়ের সম্ভাবনার বিষয়টি উঠে এসেছে। আরো জানা গেছে, কাবির মিয়া একজন হেভীওয়েট স্বতন্ত্র এমপি প্রার্থী হিসাবে সকলের মুখে মুখে। তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপকমিটির সাবেক ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। এছাড়া তিনি দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত।
তারও রয়েছে নিজস্ব ভোট ব্যাংক ও শক্তিশালী কর্মী বাহিনী। এবারের নির্বাচনে তার দলমত নির্বিশেষে সকল শ্রেনী ও পেশার মানুষের সমর্থনসহ থাকছে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বিশাল ভোট ব্যাংক। জানা গেছে, এলাকার সাধারন ভোটারদের দাবী, কাবির মিয়া ঈগল মার্কা নিয়েই সংসদে যাবেন, এখন শুধু ৭ জানুয়ারী ভোটের দিনের অপেক্ষা। ওপর দিকে কর্মী শূণ্য হয়ে পড়েছে নৌকা প্রতীক। বিগত নির্বাচন গুলোতে এই আসনে যারা নৌকার কর্মী হিসাবে সাধারণ মানুষের দ্বারে দ্বারে যান তারাই এবার নৌকার বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন। এখানে সাধারণ ভোটারদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে ফারুক খান এ আসনে নৌকার প্রতীক নিয়ে বিজয়ী হয়ে আসছেন। বারবার বিজয়ী হবার কারণে তিনি এলাকায় সময়দেন না, এমনকি সাধারণ ভোটারদের সুখ-দুখের খোঁজখবর নেন না। প্রয়োজনে দেখা করার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হন দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। অভিযোগ ও ক্ষোভ থেকে সৃষ্ট সমর্থনের সুযোগ করে দিয়েছে আওয়ামী লীগের সভাপতি বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা। স্বতন্ত্রের পক্ষে কেউ নির্বাচনে প্রচার কিংবা ভোট দিলেও দল তাদের বিরুদ্ধে শাস্তি মূলক ব্যবস্থা নিবেন না। এমন ঘোষনার সাথে সাথে বারবার নির্বাচিত এমপি ফারুক খানের অবস্থান নড়বড়ে হয়েগেছে। চলমান ভোটের জোয়ারে এ আসনের ফলাফল স্বতন্ত্রের পক্ষে যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি বলে। পাল্টে যেতে পারে দীর্ঘদিনের বিজয়ের ধারাবাহিকতা।